এক সময় ফেসিয়াল বলতে শুধু নারীর স্কিন কেয়ারকেই বোঝানো হতো। এখন সময় বদলেছে। ছেলেরাও সমানভাবে ত্বকের যত্ন নিচ্ছে। এর অন্যতম জনপ্রিয় উপায় হলো ফেসিয়াল।
কর্মব্যস্ত জীবনে ধুলোবালি, রোদ আর স্ট্রেসের কারণে ছেলেদের ত্বক অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাছাড়া ছেলেদের ত্বক সাধারণত মোটা ও তৈলাক্ত হওয়ায় ব্রণ, ব্ল্যাকহেডস এবং রুক্ষতার সমস্যাও বেশি হয়। সুস্থ ও সতেজ ত্বক পেতে ফেসিয়াল এখন আর বিলাসিতা নয়, বরং প্রয়োজন। ছেলেদের জনপ্রিয় ফেসিয়ালগুলো হচ্ছে ক্লিনজিং ফেসিয়াল, অয়েল কন্ট্রোল ফেসিয়াল, অ্যান্টি-এজিং ফেসিয়াল, হাইড্রেটিং ফেসিয়াল, ডি-ট্যান ফেসিয়াল।
ফেসিয়াল করার সঠিক নিয়ম: অনেকেই সঠিক নিয়ম না জেনে ফেসিয়াল করে, যা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এজন্য ফেসিয়ালের আগে এবং পরে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা দরকার প্রয়োজন। যেমন– ত্বকের ধরন অনুযায়ী ফেসিয়াল নির্বাচন, স্ক্রাবিং ও ক্লিনজিং ভালোভাবে করা। স্টিম নেওয়ার পর ব্ল্যাকহেডস পরিষ্কার করা। ফেসিয়ালের পর সরাসরি রোদে যাওয়া যাবে না। হেভি কেমিক্যাল ব্যবহার এড়িয়ে চলতে হবে।
ছেলেদের ফেসিয়াল নিয়ে শোভন’স মেকওভারের স্বত্বাধিকারী শোভন সাহা বলেন, ‘ঈদে নিজেকে একটু ফ্রেশ, উজ্জ্বল দেখানোর জন্য ছেলেদের ফেসিয়াল করাটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কারণ ত্বকে দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা ময়লা ও মৃত কোষ দূর হয়, ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ হয়, ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডস কমে, ব্রণের প্রবণতা কমে যায়, ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখা সহজ হয় এবং শেভিং-এর পর ত্বককে নরম ও আরামদায়ক করে। এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে যাদের ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন– ব্রণ, মেস্তা, ড্রাইনেস, স্কুইস হয়ে যাওয়া স্কিন থাকে তাদের ঈদের ৩ থেকে ৪ দিন আগে থেকেই বিশেষজ্ঞের পরামর্শে ট্রিটমেন্ট করে ত্বক ঠিক করে বা এ ধরনের ত্বকের জন্য যে ফেসিয়াল কার্যকর হবে তা করার পরামর্শ দেন। কারণ, অথেনটিক ফেসিয়ালের গ্লোটাকে স্কিনে আনতে দুই থেকে তিন দিন সময় লাগে। তাছাড়া ঘরে বসে ত্বকের যত্ন সম্পর্কে শোভন জানান, ‘আপনার স্কিন বুঝে ফেসওয়াশ ব্যবহার করে টোনার ব্যবহার করতে হবে। যদি আপনার স্কিনের সঙ্গে মানানসই টোনার খুঁজে না পান তাহলে রোজজল ব্যবহার করতে পারেন। এটি সব ধরনের ত্বকের জন্যই সহনীয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী সপ্তাহে দুই থেকে তিন বার স্ক্রাব করতে পারেন, সপ্তাহে এক দিন ফেইস প্যাক লাগাতে পারেন। ফেইস ম্যাসাজটা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া বাড়িতে চেষ্টা না করাই ভালো।’ ঈদের দিনে ছেলেদের ত্বকের যত্ন প্রসঙ্গে ‘সুপারকাট স্পা স্যালুন’-এর কর্ণধার সাইফুল ইসলাম রচি জানান, ‘ঈদের সকালে ত্বকের যত্নে একটি ভালো মানের ফেসওয়াশ ব্যবহার করে, মুখে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সিরাম বা ময়েশ্চরাইজার ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। তারপর সানস্ক্রিন দিয়ে টপ-আপ করে দেবেন। সারাদিন আপনার ত্বক দেখাবে ঝকঝকে উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত।’
এছাড়াও বাড়িতে বসে যেভাবে ফেসিয়াল করতে পারেন–
ক্লিনজিং: দুধ বা অ্যালোভেরা জেল দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন। স্ক্রাবিং: চালের গুঁড়া ও মধু মিশিয়ে স্ক্রাব করুন। মাস্ক: দই ও হলুদের মিশ্রণ লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। ময়েশ্চারাইজিং: অ্যালোভেরা জেল বা লাইট ক্রিম ব্যবহার করুন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর ফ স য় ল কর র ত বক র দ র ত বক র জন য আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
গোলের উৎসবের ম্যাচে বার্সা-ইন্টারের রুদ্ধশ্বাস ড্র
চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল মানেই তো উত্তেজনার চূড়ান্ত রূপ। আর মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দিবাগত রাতে কাতালোনিয়ার মন্টজুইকে যা দেখা গেল— তা যেন শুধুই একটি ফুটবল ম্যাচ নয়, বরং ছয় গোলের অনির্দেশ্য গল্প। যেখানে বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মিলে একসঙ্গে রচনা করল রোমাঞ্চ আর বীরত্বের এক অপূর্ব মহাকাব্য। দুইবার পিছিয়ে পড়েও অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনে ৩-৩ গোলে সমতা টানল কাতালান জায়ান্টরা।
ম্যাচ শুরুই হলো যেন বজ্রপাত দিয়ে। সময়ের কাঁটায় মিনিটও পেরোয়নি। এর মধ্যেই ইন্টারের মার্কুস তুরাম এক চতুর ব্যাকহিল ফিনিশে বল ঠেলে দেন জালে। সেই মুহূর্তে স্তব্ধ হয়ে পড়ে পুরো কাতালান রক্ষণভাগ। এরপর ২১ মিনিটে কর্নার থেকে ডেনজেল ডামফ্রিসের অ্যাক্রোবেটিক ভলিতে যেন বার্সার হৃদয়েই ঘা লাগে, ইন্টারের লিড তখন ২-০ গোলে।
তবে ইতিহাস বলে— বার্সেলোনার যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়, তখনই তারা সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সেই ধারাতেই, ডানদিক থেকে দুরন্ত ছন্দে এগিয়ে এসে বক্সে ঢুকে বল জালে পাঠালেন কিশোর বিস্ময় লামিনে ইয়ামাল। ইন্টারের দ্বিতীয় গোলের মাত্র তিন মিনিট পর আসে এই গোল, যা এই ম্যাচে বার্সার ফেরার না বলা প্রতিশ্রুতি হয়ে উঠেছিল।
সেই ইয়ামাল পরে আরও একবার প্রায় গোল করে ফেলছিলেন। কিন্তু ভাগ্য মুখ ফিরিয়ে নেয়। বল লাগে পোস্টে। তবে কাতালান আশা তখনও নষ্ট হয়নি। ৩৮ মিনিটে ফেরান তোরেস ডানদিক থেকে আসা পাসে ওয়ান-টাইম ফিনিশে বল জড়ান জালে, ফিরিয়ে আনেন সমতা। ম্যাচ তখন যেন টানটান থ্রিলারে রূপ নেয় এবং শেষ হয় প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধে বলের দখলে ও খেলার ছন্দে এগিয়ে থাকলেও ৬৪ মিনিটে আবারও হোঁচট খায় বার্সা। কর্নার থেকে হেডে ডামফ্রিস করেন তার দ্বিতীয় গোল। ইন্টার আবারও এগিয়ে যায়। কিন্তু বার্সা মানেই তো ক্ষণিকের বিশ্রামে আবার অগ্নি হয়ে ওঠা। দ্রুতই আসে জবাব। রাফিনহার দূরপাল্লার গর্জে ওঠা শট প্রথমে লাগে পোস্টে, এরপর ফিরে এসে লেগে যায় গোলরক্ষক ইয়ান সমারের পিঠে, এরপর বল ঢুকে পড়ে জালে। ম্যাচ আবারও ৩-৩। যদিও এটি আত্মঘাতী গোল হিসেবে গণ্য হয়, কাতালানদের জন্য তা যেন নবজন্মের এক চুম্বন।
শেষ বাঁশি পর্যন্ত দুই দলই তীব্রভাবে চেষ্টা করেছে জয় ছিনিয়ে নিতে। কিন্তু ভাগ্য সেদিন ছিল ভারসাম্যপন্থী।
এখন সব অপেক্ষা দ্বিতীয় লেগের। আগামী ৬ মে মিলানের ঐতিহাসিক সান সিরো স্টেডিয়ামে লেখা হবে এই নাটকের অন্তিম অঙ্ক। এক ম্যাচ, এক ফলাফল, এক জয়ী— আর সেই জয়ীর জন্য অপেক্ষা করছে মিউনিখের আলো-আড়ম্বরের রাত। ইউরোপীয় ফুটবলের মঞ্চে চূড়ান্ত পরীক্ষার দিন।
সান সিরোর আকাশে হয়তো আবার জ্বলে উঠবে এক নতুন রূপকথার তারা।
ঢাকা/আমিনুল