নবীজি (সা.) কখনো কখনো রাত-দিনের পুরোটা সময় অনাহারে কাটাতেন এবং রোজা রাখতেন। আল্লাহর ইবাদতে সারা সময় নিয়োজিত থাকতেন। (ইবনে কায়্যিম, যাদুল মাআদ, ২/৩২)
রাত-দিন একত্রে এভাবে ধারাবাহিক রোজা পালন করাকে ‘সাওমে ওসাল’ বলে। আনাস (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা সওমে ওসাল পালন করো না।’ সাহাবিগণ বললেন, ‘আপনি তো পালন করছেন?’ তিনি উত্তরে বললেন, ‘আমি তোমাদের কারও মতো নই। আমাকে (আল্লাহর পক্ষ থেকে) পানাহার করানো হয়।’ অথবা বলেছেন, ‘আমি রাত যাপন করি পানাহার করানো অবস্থায়।’’ (বুখারি, হাদিস: ১,৯৬১)
নবীজি(সা.
আল্লাহর পক্ষ থেকে পানাহারের পদ্ধতি সম্পর্কে আলেমদের মতবিরোধ রয়েছে। কেউ বলেন, তাঁর খাদ্য ও পানীয় ছিল ইন্দ্রিয়গত—আধ্যাত্মিকভাবে নয়। তাকে সরাসরি খাদ্য প্রদান করা হতো। হাদিসের বাহ্যিক শব্দ-প্রয়োগ এ অর্থই বহন করছে। তবে কারও মতে, তা ইন্দ্রিয়গত ছিল না—আল্লাহ তাকে যে ইবাদতের আস্বাদ দান করতেন, এটা তারই ইঙ্গিত। যদি ইন্দ্রিয়গত হয়, তবে তাতে সওমে ওসাল পালনকারী বলা যায় না।
শেষোক্ত মতই অধিক যুক্তিযুক্ত মনে করা যায়।
আরও পড়ুন যেমন ছিল মহানবীর (সা.) সাহরি১১ মার্চ ২০২৫তিনি ‘সওমে ওসাল’ কীভাবে করেছেন
রাসুল (সা.) টানা কয়েকদিন ইফতার-সাহরি বা কিছুই না খেয়ে রোজা রাখতেন। আবু হোরাইরা (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) ‘সাওমে ওসাল’ বা ধারাবাহিক রোজা রাখতে করতে বারণ করেছেন। যখন সাহাবিদের অনেকে তার সঙ্গে রোজা রাখবে বলে নাছোড় হলো, তখন রাসুল তাদের সঙ্গে একদিন রোজা রাখলেন, এরপর আরেকদিন রাখলেন। এরপর চাঁদ উঠল। এরপর তিনি বললেন, ‘যদি চাঁদ উঠতে আরও বিলম্ব হতো, তবে আমি আরও বৃদ্ধি করতাম।’ সাহাবিদের তিরস্কার করে তিনি এমন বলেছিলেন।’ (বুখারি, হাদিস: ১,৯৬৫)
কেন বারণ
‘সওমে ওসাল’ বা বিরতিহীন রোজা একমাত্র রাসুলের বিশেষত্ব; অন্য কারও জন্য তা বৈধ নয়। তবে, কেউ যদি একান্তভাবে তা পালন করতে চায়, তাহলে ইফতার না করে কেবল সাহরি অবধি বিলম্বিত করার বৈধতা রয়েছে। এক হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেন, তোমরা ‘সাওমে ওসাল’ করো না, কেউ যদি ‘ওসাল’ করতে আগ্রহী হয়, তবে সে যেন সাহরি পর্যন্ত করে। (বুখারি, হাদিস: ১,৮৬২)
তবে এটা কেবলই বৈধতা—উৎসাহ কিংবা সম্মতি নয়।
রাসুল (সা.) নিজে ওসাল করা সত্ত্বেও সাহাবিদের বিরত থাকার আদেশ প্রদান উম্মতের প্রতি তার দর্য়াদ্রতা প্রমাণ করে। কেননা, নিষেধ না-করলে সাহাবিগণ নিশ্চিত তার আমল অনুসরণে আত্মনিয়োগ করতেন। এবং পরবর্তী সময়ে তা কষ্টের কারণ হতো। (ইবনে হাজার, ফাতহুল বারি, ৬/২২৯)
আরও পড়ুনযেমন ছিল মহানবীর (সা.) ইফতার১০ মার্চ ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আল ল হ
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষককে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে সমাজকর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুব্রত কুমার বিশ্বাসকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৩তম রিজেন্ট বোর্ড সভায় ২৬ জুলাই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গতকাল সোমবার বিকেলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
সুব্রত কুমার বিশ্বাস পাবনার ঈশ্বরদী পৌর শহরের পোস্ট অফিসপাড়ার বাসিন্দা। তাঁর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের সান্ধ্যকালীন (ইভিনিং) স্নাতকোত্তর শ্রেণির এক ছাত্রী যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ করেছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত শিক্ষক ওই ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং বিয়ের আশ্বাসে শারীরিক সম্পর্কে জড়ান। কিন্তু পরে বিয়েতে অস্বীকৃতি জানালে ছাত্রীটি ২০২৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বর বিভাগের প্রধানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এরপর ২৩ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি ওই বছরের ৯ অক্টোবর শিক্ষক সুব্রতকে সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করে রেজিস্ট্রার বরাবর চিঠি দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল বিষয়টি নিয়ে উচ্চতর তদন্ত করে। তদন্তে শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এরপর তদন্ত কমিটি তাঁকে স্থায়ীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে। এ সুপারিশের ভিত্তিতেই রিজেন্ট বোর্ড বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক সুব্রত কুমার বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এস এম আবদুল আওয়াল প্রথম আলোকে বলেন, রিজেন্ট বোর্ডে একজন শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটি আইন অনুযায়ীই হয়েছে।