ইয়ার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং-ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং-অ্যাপারেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা, আবেদনের সুযোগ আরও ২০ দিন
Published: 30th, March 2025 GMT
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তিতে আবেদনের সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। আরও ২০ দিন আবেদনের সুযোগ পাবেন আগ্রহী শিক্ষার্থীরা। গত ২৫ মার্চ প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীন বস্ত্র অধিদপ্তরের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিতে আবেদনের সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। ২০ এপ্রিল পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। ভর্তি বিজ্ঞপ্তির অন্যান্য শর্ত অপরিবর্তিত আছে।
এর আগের বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন শুরু ও আবেদন জমার দিন পেছানো, নতুন ২টি কলেজ যুক্ত এবং আসন সংখ্যা বৃদ্ধিসহ নানা সংশোধনী আনা হয়েছিল।
আগের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ৩১ মার্চ ছিল আবেদনের সময়। আগে আটটি কলেজের শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া হতো। পরে নতুন দুটি কলেজ যুক্ত হয়েছে। এ জন্য আসন ২৪০টি বেড়েছে।
আরও পড়ুনযুক্তরাজ্যর ইন্টারন্যাশনাল এক্সিলেন্স স্কলারশিপ, ৫০০ বৃত্তি, নেতৃত্বের গুণাবলি ও সহশিক্ষা কার্যক্রমে বিশেষ সুবিধা০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫নতুন দুটি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হলো মাদারীপুর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও সিলেট টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। এ দুটি কলেজে ১২০ জন মোট ২৪০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন।
চার বছর মেয়াদি বিএসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সটি বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীন বস্ত্র অধিদপ্তর পরিচালিত। দেশের ১০টি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে নেওয়া হবে শিক্ষার্থী ভর্তি। এসব কলেজে ইয়ার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং, ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ওয়েট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং ও অ্যাপারেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পান। পড়াশোনা শেষে টেক্সটাইল মিল, কারখানা, বায়িং হাউস, মানবসম্পদ, ফ্যাশন ডিজাইনিং, বিপণন—সবখানেই টেক্সটাইল প্রকৌশলীদের কাজের সুযোগ রয়েছে।
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পর্কে প্রচলিত ধারণা হচ্ছে যে, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা কাপড় বানানো শেখানো হয়। আসলে এ বিষয়ের সঙ্গে কাপড় বানানোর সম্পর্ক তেমন নেই। টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মূলত টেক্সটাইলের মৌলিক বিষয়গুলো পড়ানো হয়। তন্তু থেকে কাপড় বানানোর উপযোগী সুতা তৈরি, কিংবা একটি ফেব্রিককে আরামদায়ক করার জন্য যেসব পদ্ধতি রয়েছে, সেসব বিষয়ও পড়ানো হয়। অদাহ্য, তাপরোধী, রাসায়নিকরোধী কিংবা পানিরোধী ফেব্রিকের সম্ভাবনা ও ব্যবহার-এই সবকিছুই পড়ানো হয় টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। এটি শুধু প্রকৌশল নয়, দৈনন্দিন জীবনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পোশাক থেকে শুরু করে বিশেষায়িত (যেমন অগ্নিনির্বাপণকর্মীদের জন্য জ্যাকেট কিংবা মহাকাশচারীদের স্যুট) সবকিছুই টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অন্তর্ভুক্ত। পৃথিবীর ৮০০ কোটির বেশি মানুষের জন্য এই বিশাল টেক্সটাইল খাতের জোগান দিতে গিয়ে পরিবেশের ওপর যে বিরূপ প্রভাব পড়ছে, সেটা প্রতিরোধ করাও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অংশ। নিত্যনতুন ডিজাইনের ফ্যাশন উদ্ভাবন থেকে শুরু করে যন্ত্রের রক্ষণাবেক্ষণ কিংবা তৈরি পণ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করা-সবকিছুই পড়ানো হয় টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে।
আরও পড়ুনইতালির বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি, টিউশন ফি মওকুফসহ নানা সুযোগ-সুবিধা১৫ জানুয়ারি ২০২৫১০টি কলেজ হলো—টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, জোরারগঞ্জ, মিরসরাই, চট্টগ্রাম
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, পাবনা
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বেগমগঞ্জ, নোয়াখালী
শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, সি অ্যান্ড বি রোড, বরিশাল
শেখ কামাল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, সদর, ঝিনাইদহ
ড.
শেখ রেহানা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, গোপালগঞ্জ এবং
শেখ হাসিনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, মেলান্দহ, জামালপুরে
মাদারীপুর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, শিবচর, মাদারীপুরে
সিলেট টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, সিলেটে
মোট আসন–প্রতিটি কলেজে ১২০ জন করে ১০টি কলেজে মোট ১২০০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন। এসব কলেজের প্রতিটিতে ইয়ার্ন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ৩০ জন, ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ৩০, ওয়েট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ৩০ ও অ্যাপারেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ৩০ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন।
আবেদনের যোগ্যতা—১.
প্রার্থীকে দেশের যেকোনো শিক্ষা বোর্ড থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ২০২৩ বা ২০২৪ সালে এসএসসি/সমমান পরীক্ষায় গ্রেডিং পদ্ধতিতে ৫ স্কেলে জিপিএ কমপক্ষে ৪ পেয়ে পাস হতে হবে। অথবা বিদেশি শিক্ষা বোর্ড থেকে সমমানের পরীক্ষায় সমতুল্য গ্রেড পেয়ে পাস করতে হবে।
২.
এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে চতুর্থ বিষয়সহ মোট জিপিএ ৮ পেতে হবে।
৩.
আবেদনকারীকে এইচএসসি পরীক্ষায় গণিত, পদার্থ ও রসায়নে আলাদাভাবে ন্যূনতম জিপিএ ৩.০০ থাকতে হবে এবং ইংরেজিতে ৩ গ্রেড পয়েন্টসহ উল্লিখিত বিষয়ে মোট গ্রেড পয়েন্ট কমপক্ষে ১৪ থাকতে হবে।
আরও পড়ুনহার্ভার্ডে বৃত্তি নিয়ে এমবিএ’র সুযোগ বাংলাদেশিদের ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আবেদন ফি১০০০ টাকা।
আবেদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তারিখ—
আবেদন ও পরীক্ষার ফি জমা শুরু: ১৭ ফেব্রুয়ারি, সকাল ১০টা থেকে
আবেদন শেষ: আগামী ২০ এপ্রিল, দুপুর ১২টা পর্যন্ত
প্রবেশপত্র ডাইনলোড শুরু: আগামী ২৯ এপ্রিল সকাল ১০টা থেকে
প্রবেশপত্র ডাইনলোড শেষ: আগামী ৯ মে, রাত ১২টা পর্যন্ত। রঙিন প্রিন্ট নিতে হবে।
ভর্তি পরীক্ষা: ১০ মে (শনিবার)। সকাল ১০টায় শুরু হবে পরীক্ষা। পরীক্ষা হবে ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট।
নির্বাচিত প্রার্থীদের তালিকা: ১৩ মে তারিখের মধ্য বস্ত্র অধিদপ্তরের ও কলেজগুলোর ওয়েবসাইট এবং নোটিশ বোর্ড।
ভর্তি পরীক্ষার বিষয়
*গণিত ৬০, পদার্থবিজ্ঞান ৬০, রসায়ন ৬০, ইংরেজি ২০–সহ মোট ২০০ নম্বরে ভর্তি পরীক্ষা হবে। ২০২৪ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় নির্ধারিত সিলেবাস অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি পরীক্ষা হবে এমসিকিউ পদ্ধতিতে। ১০০ প্রশ্নের প্রতিটির মান ২ করে। পরীক্ষা হবে ১ ঘণ্টা ২০ মিনিটে। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য দশমিক ৫ নম্বর করে কাটা যাবে।
**ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তির আবেদনের বিজ্ঞপ্তি দেখুন এখানে
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
আরো পড়ুন:
নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা
সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।
বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।
অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ