Prothomalo:
2025-06-15@23:23:37 GMT

আতর শেখের দাম ৪৭ হাজার টাকা

Published: 30th, March 2025 GMT

ঈদের আগে জমে উঠেছে আতরের বেচাকেনা। বড়-ছোট সবাই চান আতরের সৌরভ মেখে ঈদের নামাজে যেতে। ফলে ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে আতরের চাহিদাও বাড়ছে। তবে আতরের বাড়তি বেচাকেনা শুরু হয়েছে রোজার প্রথম থেকেই।

বাজারে দেশি-বিদেশি নানা ধরনের আতর রয়েছে। বিক্রেতারা জানান, অধিকাংশ দেশি আতরই সাধারণ মানের হয়। দামেও সস্তা। আর বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আতরের সৌরভ বা ফ্রেগনেন্স বেশি ও দীর্ঘ সময় থাকে। এ ধরনের আতরের দামও বেশি। এ প্রতিবেদক বিভিন্ন বাজার ঘুরে যেসব আতরের সন্ধান পেয়েছেন, এর মধ্যে সবচেয়ে দামি আতর হলো আল হারামাইন আতর শেখ। এর ৬০ মিলির বোতলের দাম ৪৭ হাজার টাকা।

বাজারে আল হারমাইন, কস্তুরি, মুস্তাহ আল তাহারা, আল আরাবিয়া, গুপি, সুলতান, কিং হোয়াইট, জান্নাতুল নাঈম, আল-ফারেজ ও হাজরে আসওয়াদের মতো বিভিন্ন দামি আতর রয়েছে। আবার আলিফ, আল ফারহান, আল ইসরাত, আল রিসাব, জান্নাতুল ফেরদাউস, রজনীগন্ধা, বকুল, সুরভি ও বেলি ফুলের মতো কম দামের আতরও পাওয়া যায়।

বাংলাদেশে আতর বিক্রির বড় কেন্দ্র রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেট। এ ছাড়া রাজধানীর কাঁটাবন, মিরপুর, ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন স্থানে, বিশেষ করে মসজিদ-মাদ্রাসাকেন্দ্রিক দোকানে আতর বিক্রি হয়। এসব দোকানের বেশির ভাগই সাধারণ মানের আতর বিক্রি করে থাকে। তবে দামি আতর কিনতে হলে যেতে হবে আতরের ব্র্যান্ডের নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্রে।

দেশে দামি আতরের জন্য বিখ্যাত হচ্ছে আল হারামাইন ব্র্যান্ড। বর্তমানে আল হারামাইনের আতরের দাম সর্বনিম্ন ২ হাজার ৪০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৪৭ হাজার টাকা পর্যন্ত রয়েছে। তবে অর্ডার করলে এর চেয়েও দামি আতর বিদেশ থেকে এনে দেওয়া হয়। সাধারণত ১২ মিলিলিটারের শিশি বা ছোট বোতলে আতর বিক্রি করা হয়। তবে ১৮ মিলি, ২৫ মিলি ও ৬০ মিলির শিশিও রয়েছে। এ ছাড়া খোলা আতরও বিক্রি করা হয়।

যত দামি আতর

বাংলাদেশের বাজারে নানা সৌরভের বাহারি আতর পাওয়া যায়। দাম যত বেশি, তত বেশি অভিজাত সৌরভের আতর মেলে।

আতরের জন্য আল হারামাইন ব্র্যান্ড বেশ জনপ্রিয়। আল হারামাইনের জনপ্রিয় আতর সিরিজের মধ্যে রয়েছে মাস্ক, অ্যাম্বার ও উদ প্রভৃতি। এর মধ্যে অ্যাম্বারের রয়েছে কোমল সৌরভ (সুইট ফ্রেগনেন্স), উদের রয়েছে কড়া সৌরভ (ডিপ ফ্রেগনেন্স) এবং মাস্ক সিরিজের আতরের রয়েছে হালকা ও কোমল সৌরভ। মাস্ক সিরিজের আতর সব বয়সীরা পছন্দ করেন। বাংলাদেশে অ্যাম্বারের চাহিদাও বেশ রয়েছে। আর উদের আতর বেশি ব্যবহার করেন আরবের অধিবাসীরা। তবে বাংলাদেশেও ৩০ বছরের বেশি বয়সীদের মাঝে এ আতরের জনপ্রিয়তা রয়েছে।

এর বাইরে উদ, অ্যাম্বার, মাস্ক, জাফরান প্রভৃতি সৌরভের সংমিশ্রণে একধরনের আতর তৈরি হয়। বিশেষ সৌরভের এই আতরকে বলা হয় মোকাল্লাদ। বিক্রেতারা জানান, একাধিক সুবিধার কারণে মোকাল্লাদ আতরের জনপ্রিয়তা রয়েছে। যেমন সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া রাফিয়া গোল্ডের দাম ৪ হাজার ২০০ টাকা। আবার এপিক ফ্রেগনেন্সের মোকাল্লাদ আতরের দাম ৩০ হাজার টাকা।

এখন পর্যন্ত বাজারে আল হারামাইনের সবচেয়ে দামি আতর পাওয়া গেছে। আল হারামাইনের প্রিমিয়াম উদ জাতীয় সৌরভের আতর শেখের ৬০ মিলির বোতলের দাম ৪৭ হাজার টাকা। আবার ওয়ার্ড তাইফি নামের বিশেষ ফ্রেগনেন্সের আতরের দাম ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। বর্তমানে এটি বাংলাদেশের বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে নেই। অর্ডার করলে এনে দেওয়া হয়।

রাজধানীর গুলশান সেন্টার পয়েন্টে অবস্থিত আল হারামাইনের শোরুম ইনচার্জ নাদিম আহমেদ জানান, চলতি বছর রমজান উপলক্ষে ‘রমজান স্পেশাল আতর’ নামে নতুন আতর এনেছে আল হারামাইন। ১২ মিলিলিটারের এ আতরের মূল্য ২ হাজার ৭৩০ টাকা। এ ছাড়া লুজ আতরও বিক্রি করে কোম্পানিটি। এ ধরনের আতরের সর্বনিম্ন বিক্রির পরিমাণ ৬ মিলিলিটার। দাম সর্বনিম্ন ২ হাজার ২৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৬০০ টাকা। রয়েছে মাস্ক, অ্যাম্বার ও উদ প্রভৃতি ফ্রেগনেন্সের আতরই লুজ বা খোলা আকারে বিক্রি করা হয়। তবে কিছু আউটলেটে এর চেয়ে কম দামে পাওয়া যায়। যেমন ১৫ মিলিলিটারের আল হারমাইন আতরের দাম মাত্র ৯০০ টাকা।

সস্তায় আতরও মেলে

বায়তুল মোকাররম আতরের জন্য বিখ্যাত। এই বাজারের কয়েকজন দোকানির কাছ থেকে জানা গেছে, ভালো মানের আতর ৩ এমএল ২০০-৫০০ টাকা; ৬ এমএল ৫০০-১০০০ টাকা এবং ১২ এমএল ১০০০-১৫০০ টাকায় বিক্রি হয়। মধ্যম মানেরটা বিক্রি হয় ৩ এমএল ১০০-২০০ টাকা, ৬ এমএল ৩০০-৬০০ টাকা এবং ১২ এমএল ৫০০-১২০০ টাকা। সাধারণ মানের বেলায় ৩ এমএল ৫০-২০০ টাকা, ৬ এমএল ২০০-৫০০ টাকা এবং ১২ এমএল ৪০০-৮০০ টাকা।

রাজধানীর কাঁটাবন এলাকায় বেশ কয়েকটি দোকানে আতর বিক্রি হয়। সেখানে মূলত খোলা আতর (বড় বোতল থেকে ছোট শিশিতে ঢেলে দেওয়া হয়) বিক্রি করা হয়। এখানে ৩ মিলিলিটার আকারের শিশিতে ৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা পর্যন্ত দামের আতর বিক্রি হয়। এর মধ্যে কিছু আতর ভারত ও পাকিস্তান থেকে আমদানি করা।

বিক্রেতারা জানান, ঈদের আগে আতর বিক্রির চাহিদা বেড়েছে। রাজধানীর কাঁটাবনে ফাতেমা হিজাব অ্যান্ড ফ্যাশন নামের দোকানে অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে আতরও বিক্রি হয়। এই দোকানের স্বত্বাধিকারী মশিউর রহমান জানান, প্রতিবছরই দুই ঈদের সময় আতরের বেচাকেনা বেড়ে যায়। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি।

মশিউর রহমান বলেন, সাধারণ সময়ে প্রতি মাসে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকার আতর বিক্রি করতে পারি। তবে ঈদের মৌসুমে এখন দিনে পাঁচ-সাত হাজার টাকার আতর বিক্রি হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ৪৭ হ জ র ট ক র আতর ব ক র আতর র দ ম জনপ র য় ২০০ ট ক ন র আতর আতর র স র আতর র আতর র ব ন আতর

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইসরায়েলের হামলা

রবিবার বিকেল থেকে ইরানজুড়ে নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

রবিবার রাতে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইদ খাতিবজাদেহ ইসরায়েলি হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে তিনি জানান, রবিবার রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।

এক্স-পোস্টে সাইদ বলেছেন, “ইসরায়েলের অপরাধী শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবনে ইচ্ছাকৃত এবং নির্মম হামলা চালিয়েছে।”

আরো পড়ুন:

ইসরায়েলের নতুন হামলায় ইরানের আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান নিহত

ইসরায়েলে ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান, তেল আবিব ও হাইফাতে সরাসরি আঘাত

উপ-মন্ত্রী আরো বলেন, “এই হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন, আমার বেশ কয়েকজন সহকর্মীও আহত হয়েছেন, যাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”

সাইদ বলেন, “এটি আরো একটি স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর চলমান ও নিয়মতান্ত্রিক আগ্রাসন অভিযানের অংশ।”

এর আগে শনিবার ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তেহরানের অস্ত্র উৎপাদন ক্ষমতা ধ্বংস করার লক্ষ্যে ইরানের আইআরজিসি ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রবিবার নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে।

বিবৃতিতে  বলা হয়, এই হামলায় ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি), গার্ডস কুদস ফোর্স এবং ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আরো জানিয়েছে, ইরানজুড়ে অসংখ্য অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে। 

ইরানি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই হামলায় আইআরজিসিরি গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি এবং তার সহকারী হাসান মোহাকিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া মোহসেন বাঘারি নামে আইআরজিসির আরো একজন জেনারেল নিহত হয়েছেন। এর প্রতিশোধ নিতে রবিবার রাতে ইসরায়েলে ৫০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও শতাধিক ড্রোন ছুড়েছে ইরান।

ইসরায়েলের ফায়ার ও রেসকিউ সার্ভিসের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, উত্তর ইসরায়েলে দুটি এবং হাইফায় একটি আবাসিক ভবনে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানার খবর পেয়েছে তারা।

ইসরায়েলি জাতীয় জরুরি সেবা সংস্থা জানিয়েছে, হাইফায় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সাতজন আহত হয়েছেন। এছাড়া কিরিয়াত গাটের কাছে দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি শহরে একজন আহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় ইসরায়েলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির ইরানের ওপর আক্রমণ আরো তীব্র করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একটি বিবৃতি জারি করে ইসরায়েরি সেনাপ্রধান বলেছেন, “আমরা আমাদের অভিযান তীব্রতর করে যাব এবং এটি করে, আগামী বছরগুলোতে আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করব। আমরা জানতাম এর একটি মূল্য দিতে হবে এবং এটিই বোঝায় যে, আমরা কেন এখনই পদক্ষেপ নিয়েছি, তা অনেক দেরি হওয়ার আগেই।”

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে ইসরায়েলি হামলায় ২২৪ জন নিহত এবং ৯০০ জন আহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং ৩৭০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ