চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমানকে দেশে থাকতে না দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আসলাম চৌধুরী। সোমবার সকালে সীতাকুণ্ড সরকারি আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ে মাঠে আয়োজিত ঈদের নামাজ আদায় করতে গিয়ে স্থানীয় মুসল্লিদের উদ্দেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় এই হুঁশিয়ারি দেন তিনি। তাঁর এমন বক্তব্যের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

গত বুধবার উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নে উপজেলা কৃষক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো.

নাসির উদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের হাতিলোটা গ্রামের মো. বশির (৩৫), মুরাদপুর ইউনিয়নের মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন (৩২), একই ইউনিয়নের আরমান শাকিল (৩৫) ও মো. রাসেল ওরফে মুরগি রাসেলকে (৩৮) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁরা স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দল ও যুবদলের নেতা।

চার নেতাকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ঈদের নামাজ পড়তে আসা প্রশাসন, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও স্থানীয় মুসল্লিদের উদ্দেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে আসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমি থানা প্রশাসনকে বলতে চাই। বিশেষ করে আমাদের ওসি সাহেব। কিছুদিন আগে একটা মার্ডার ঘটেছে, নাসির হত্যা। এই হত্যার মামলাটা ওসি সাহেবের রুমে বসে পরিকল্পিতভাবে আমাদের কিছু লোককে ইচ্ছাকৃতভাবে আসামি করা হয়েছে। আমাদের দলের যে লোক হোক আপনি সঠিক আসামি চিহ্নিত করবেন। অন্যথায় আপনি কোনো প্রকার বায়াসড হয়ে মামলা করেন, আপনাকে আমি বলে দিচ্ছি এই ঈদগাহের মাধ্যমে। আপনি বাংলাদেশে থাকতে পারবেন না। যেখানেই থাকেন সেখান থেকেই আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব ইনশাল্লাহ সামনের দিনগুলোতে। এই ছেলেগুলো বিগত অনেক সময় আমার সঙ্গে জেলে কাটিয়েছে। হ্যাঁ! তাদের অনেক ছোটখাটো অপকর্ম আছে। কয়েকজনের অনেক অপকর্ম আছে। আমি জানি তাদের এই অপকর্মগুলো এ রকম সিরিয়াস কোনো অপকর্ম তাদের নেই। সুতরাং ওসি সাহেব, বিষয়টি আমার মাথায় নিয়েছি আমি। আমাদের অনেক মিডিয়াও ইচ্ছাকৃতভাবে কথাগুলো অন্যায়ভাবে প্রচারণা করে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড থানার ওসি মো. মুজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বাদীপক্ষ নিজেরা মামলা করেছে। এখানে তাঁদের (পুলিশের) কোনো ভূমিকা নেই। আর দেশে থাকতে দেওয়া হবে না এ ধরনের কথা (আসলাম চৌধুরী) বলেছেন কি না, তা জানা নেই। রাজনীতিবিদরা অনেক ধরনের রাজনৈতিক বক্তব্য দেন। এটি নিয়ে তাঁর কিছু বলার নেই। কাজটি অন্যায় নাকি ন্যায় করেছেন সেটি হচ্ছে মূল বিষয়।

অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে আসলাম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, বাদীকে ডেকে নিয়ে প্রকৃত আসামিদের বাদ দিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের আসামি করেছেন ওসি। তাই অন্যায়ভাবে কাউকে হয়রানি করা হলে, গ্রেপ্তার করা হলে দেশের যে জায়গায় থাকুক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। দেশে থাকতে দেওয়া হবে না, এমন কথা বলেননি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আসল ম চ ধ র ইউন য ন অপকর ম আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপির নাম ভাঙিয়ে অপকর্মে জড়িতদের ছাড় নয়: রিজভী 

বিএনপির নাম ব্যবহার করে অপকর্মে জড়িতদের কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে গণমাধ্যমকে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেছেন, “সমাজ ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী জড়িত নয়। যদি কেউ বিএনপির নাম ব্যবহার করে এসব অপকর্মে করে তাদের কোন ছাড় নয়। পাশাপাশি গণমাধ্যমকে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে হবে। একটি অসত্য সংবাদ রাষ্ট্র ও সমাজের মাঝে অনেক বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে।”

শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন রিজভী।

কোনো কিছু ঘটলেই বিএনপির ওপর দায় চাপানো যেন কারো কারো অভ্যাসে পরিনণত হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “সমাজবিরোধী কাজে যেই জড়িত হবে তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। সরকার কেনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বরং সরকারের মাঝে ঢিলেঢালা ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।”

তিনি বলেন, “রাউজানে কিছু সন্ত্রাসী অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়েছে। অথচ, কয়েকটি গণমাধ্যমে বলা হলো এই অস্ত্রধারীরা বিএনপির লোক! কোনো প্রমাণ ছাড়া এগুলো লেখা দুঃখজনক। এই রাউজানে নানান অভিযোগে অনেক সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” 

বিএনপি ১৫ বছরের অত্যাচার-অবিচার থেকে মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছে। জুলাই-আগস্টে এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ নিয়েছে। মানুষ হয়ত কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিচ্ছে। কিন্তু এখনও আত আতঙ্কমুক্ত নয় বলেও জানান রিজভী।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি দেখা যাচ্ছে না মন্তব্য করে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, “নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যে কৃত্রিমভাবে সংকট সৃষ্টি করছে যারা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বিশ্ববাজারে যখন গমের দাম কমেছে তখন বাংলাদেশে এর দাম বেড়েছে। জনগণকে নিরাপদ রাখার দায়িত্ব সরকারের। রাষ্ট্র এতে ব্যর্থ হলে যেকোন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সৃষ্টি হতে পারে সামাজিক অস্থিরতা।” 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএনপির নাম ভাঙিয়ে অপকর্মে জড়িতদের ছাড় নয়: রিজভী