হাতিরঝিলে নৌ ভ্রমণ বাড়িয়েছে ঈদের আনন্দ
Published: 1st, April 2025 GMT
দেশজুড়ে ঈদের আমেজ বিরাজ করছে। ঈদের পরের দিন অলিগলি থেকে শুরু করে রাজপথ, পার্ক ও বিনোদনকেন্দ্র সবখানেই ভিড়। পরিবার-পরিজন নিয়ে আনন্দে মেতেছেন সবাই।   
মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সকাল থেকেই রাজধানীর অন্যতম প্রধান বিনোদনকেন্দ্র হাতিলঝিলে দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গেছে। ঝিলের পানিতে নৌ ভ্রমণ ঈদের আনন্দ আরো বাড়িয়েছে। ছুটির দিনে দর্শনার্থীদের জন্য ‘আনন্দ নৌ ভ্রমণ প্যাকেজ’ নামে বিশেষ সেবা চালু করেছে হাতিরঝিলের ওয়াটার ট্যাক্সিগুলো। এ সেবা ঈদ আনন্দে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
ইট-পাথরের নগরী ঢাকায় প্রাণ ভরে শ্বাস নেওয়ার জায়গা খুবই কম। ব্যস্ত নাগরিক জীবনে কিছুটা স্বস্তি পেতে সব সময় উপলক্ষ খুঁজে বেড়ান রাজধানীবাসী। প্রত্যেক বছরের মতো এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সবুজের সমারোহ, বসার সুব্যবস্থা, নৌ ভ্রমণের সুবিধা থাকায় হাতিরঝিল হয়ে উঠেছে বিনোদনপ্রেমীদের অন্যতম গন্তব্য। ঈদসহ বিভিন্ন ছুটির দিনে বিনোদনপ্রেমীদের পদচারণায় মুখর থাকে এ বিনোদনকেন্দ্রটি।
মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) হাতিরঝিল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের দিন উপলক্ষে সাধারণ যাত্রী পারাপার বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে, নৌ ভ্রমণের জন্য বিশেষ প্যাকেজ চলু করেছে কর্তৃপক্ষ। জনপ্রতি ৮০ টাকায় আধাঘণ্টা নৌ ভ্রমণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
 
হাতিরঝিলের ওয়াটার ট্যাক্সি টিকিট কাউন্টারের সামনে এ বিষয়ে নোটিশ টাঙিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঈদের প্রথম থেকে তৃতীয় দিন পর্যন্ত সাধারণ যাত্রী পারাপার বন্ধ থাকবে। জনপ্রতি ৮০ টাকায় ৩০ মিনিটের ‘আনন্দ নৌ-ভ্রমণ প্যাকেজ’ চালু থাকবে। শিশুর বয়স ৩ বছরের বেশি হলে তার জন্য আলাদা টিকিট সংগ্রহ করতে হবে।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই হাতিরঝিলে ওয়াটার ট্যাক্সিতে ভ্রমণ করেছেন বিপুল পরিমাণ মানুষ। প্রতিটি ঘাটেই দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গেছে। নৌ ভ্রমণের জন্য টিকিট কেটে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে দর্শনার্থীদের।
কেউ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে, কেউ প্রেমিক বা প্রেমিকাকে নিয়ে, কেউবা বন্ধুদের নিয়ে হাতিলঝিলে ঘুরতে এসেছেন। ঝিলের পাড়ে বসে কেউ গল্প করছেন, কেউ ছবি তুলছেন, কেউবা ঝিলের পাড় ধরে হাঁটাহাঁটি করছেন। দিনের বেলায় গরমের মধ্যে জলাধারের শীতল বাতাস দর্শনার্থীদের শরীর-মন জুড়িয়ে দিচ্ছে।
বনশ্রী এলাকা থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী আশিকুর রহমান বলেন, এবার ঈদ ঢাকায় করছি। তাই, বাচ্চাদের নিয়ে সপরিবারসহ হাতিলঝিলে ঘুরতে এসেছি। সবাইকে নিয়ে ওয়াটার ট্যাক্সিতে ঘুরলাম। ৩০ মিনিট ভ্রমণে জনপ্রতি ৮০ টাকা গুনতে হয়েছে। বাচ্চারা নৌ ভ্রমণ বেশ উপভোগ করেছে।
তবে, যাত্রী পারাপার বন্ধ রাখায় অনেকে এর নিন্দা জানিয়েছেন। তারা বলেন, ঈদে ছুটিতে আনন্দ ভ্রমণের প্যাকেজ চালু করাটা ভালো উদ্যোগ। তবে, যাত্রী পারাপারের ব্যবস্থা রাখাও উচিত ছিল। যাত্রী পারাপার ও নৌ ভ্রমণের জন্য পৃথক ওয়াটার ট্যাক্সি সেবা চালু রাখলে যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হতো না।
হাতিরঝিলের ওয়াটার ট্যাক্সি টিকিট কাউন্টার থেকে জানানো হয়েছে, ঈদ উপলক্ষে নগরবাসীকে আনন্দ দিতে এ সেবা চালু করা হয়েছে।  
   
ঢাকা/এনটি/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভ রমণ র উপলক ষ র জন য পর ব র আনন দ
এছাড়াও পড়ুন:
মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার
প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা।
কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।
মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ।
এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা।
কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে।
কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।
ঢাকা/ইমরান/রফিক