Risingbd:
2025-05-01@03:04:59 GMT

তিন জেলায় সংঘর্ষে আহত ১৩০

Published: 1st, April 2025 GMT

তিন জেলায় সংঘর্ষে আহত ১৩০

ঈদের পর দিন তিন জেলায় ভিন্ন ভিন্ন কারণে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ১৩০ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) বিভিন্ন সময় এসব সংঘর্ষ হয়।

সংঘর্ষে সবচেয়ে বেশি আহত হয়েছে হবিগঞ্জে, ৭০ জন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আহত গোপালগঞ্জে, ৪০ জন। রাইজিংবিডির প্রতিনিধিরা এ সংক্রান্ত খবর পাঠিয়েছেন।

হবিগঞ্জ

হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায় সালিশ বৈঠক চলাকালে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। উপজেলার পূর্ব তেঘরিয়া দর্জিহাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

লাখাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বন্দে আলী বলেন, ‘‘দুপক্ষের সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’’

অপরদিকে, হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুরে মাজারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। মাধবপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহনূর বলেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, উপজেলার বাঘাসুরা ইউনিয়নের কালিকাপুর মাজার নিয়ন্ত্রণ করতেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা মাজারটি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া চেষ্টা করেন। এর এক পক্ষে নেতৃত্ব দেন যুবদল নেতা নজরুল গাজী, অপর পক্ষে বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট সাজিদুল ইসলাম সজল। মঙ্গলবার দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়।

গোপালগঞ্জ

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.

আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘‘সকালে বর্ষাপাড়া গ্রামের সিরাজ ফকির বাড়ির পাশের একটি জমিতে মাছের ঘের করতে যান। এসময় একই বংশের গাউস ফকির বাঁধা দিলে উভয়ের মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রায় ঘন্টাব্যাপী ধরে চলা এ সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে, ১২ জনকে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’’

অপরদিকে, গোপালগঞ্জে টুঙ্গিপাড়ায় মসজিদের জায়গায় রাস্তা নেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন।

টুঙ্গিপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নয়ন দেবনাথ বলেন, ‘‘প্রায় ৩৫ বছর আগে সড়াইডাঙ্গা গ্রামের আবু তালেব বিশ্বাস ননীগোপালপুর সড়াইডাঙ্গা মাদ্রাসায় ৪ কাঠা জমি দান করেন। মঙ্গলবার স্থানীয়রা মাদ্রাসার জায়গায় সীমানা খুঁটি লাগাতে গেলে আবু তালেব বিশ্বাসের ছেলে হাসান বিশ্বাস বাধা দিয়ে জায়গা দিতে অস্বীকার করে রাস্তা বানাতে চান। এ নিয়ে হাসান বিশ্বাসের সঙ্গে স্থানীয়দের কথা কাটাকাটি হয়। পরে হাসান বিশ্বাসের সমর্থকদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ হয়। এতে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন।’’

সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে ধান শুকানোর জায়গা দখল নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। শান্তিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আকরাম আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, রঘুনাথপুর গ্রামের জাকির হোসেন ও শাহ আলম পক্ষের মধ্যে পূর্ব বিরোধ ছিল। মঙ্গলবার ধান শুকানোর জায়গা দখল নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান তারা। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

ঢাকা/মামুন/বাদল/মনোয়ার/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ প লগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ, লুট হওয়া বই ফেরত পেল পাঠাগার কর্তৃপক্ষ

রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশের পর লুট হওয়া বই ফেরত পেয়েছে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর ‘অভয়ারণ্য’ পাঠাগার কর্তৃপক্ষ। রবিবার (২৭ এপ্রিল) রাতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দুপক্ষের সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে পাঠাগারে কোনো নিষিদ্ধ ঘোষিত বই বা নাস্তিক্যবাদ প্রচারের বই রয়েছে, এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরে লুট হওয়া প্রায় চার শতাধিক বই পাঠাগার কর্তৃপক্ষকে ফেরত দেওয়া হয়।

এর আগে, পাঠাগারে ‘নাস্তিকদের’ বই, ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে লুট শিরোনামে সংবাদ প্রচার হয় দেশের শীর্ষ স্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডিতে। এরপরই প্রশাসন বই ফেরতের উদ্যোগ নেয়।

ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিন মাহমুদের সভাপতিত্বে উপজেলা পরিষদের হলরুমে এই সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সা‌য়েম ইমরান, ধনবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম শহিদুল্লাহ, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি খায়রুল মুন্সী, উপজেলা জামায়াতের আমির মিজানুর রহমান, অভয়ারণ্য পাঠাগারের সভাপতি সুপ্তি মিত্র, সম্পাদক সঞ্জয় চন্দ্র ঘোষ, ইসলামী খেলাফত মজলিশের নেতা গোলাম রব্বানী এবং স্থানীয় সংবাদকর্মীরা।

উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সভার শুরুতে ইউএনও মো. শাহীন মাহমুদ উভয়পক্ষকে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানান। পরে পাঠাগারের পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক দুর্জয় চন্দ্র ঘোষ কীভাবে বইগুলো পাঠাগার থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল, তার বর্ণনা তুলে ধরেন। পরে যেসব যুবক বই নিয়ে আসার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাদের পক্ষ থেকে ধনবাড়ী উপজেলা খেলাফত যুব মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রব্বানী রিশাদ বক্তব্য দেন। বৈঠকে পাঠাগারে কোনো নিষিদ্ধ ঘোষিত বই বা নাস্তিক্যবাদ প্রচারের বই রয়েছে, এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরে বইগুলো অভয়ারণ্য পাঠাগারে ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

গোলাম রব্বানী রিশাদ বলেন, ‘‘পাঠাগার কর্তৃপক্ষকে আহ্বান করেছি, তারা যেন কোনো ধর্মবিরোধী বা নিষিদ্ধ বই পাঠাগারে না রাখেন।’’

পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক দুর্জয় চন্দ্র বলেন, ‘‘পাঠাগারে কোনো ধর্মবিরোধী বই ছিল না। সেদিন যে বইগুলো নেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সঞ্জীব ভট্টাচার্য, জাফর ইকবাল প্রমুখের বই ছিল।’’

ইউএনও শাহীন মাহমুদ বলেন, ‘‘উভয়পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়েছে। দুই পক্ষই বৈঠকে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে এসেছিলেন। পরে তাদের সঙ্গে নিয়ে বইগুলো পাঠাগারে দিয়ে আসা হয়েছে।’’

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার রাতে ধনবাড়ী উপজেলা খেলাফত যুব মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রব্বানীর নেতৃত্বে একদল যুবক গিয়ে প্রায় চার শতাধিক বই লুট করেন। পরে বইগুলো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জমা দেন তারা। সেদিন দাবি করা হয়েছিল, বইগুলো ধর্মবিরোধী।

ঢাকা/কাওছার/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ, লুট হওয়া বই ফেরত পেল পাঠাগার কর্তৃপক্ষ