ভারতের চাপিয়ে দেওয়া মিথ্যা বিজয় দিবস পালন করছি আমরা: ব্যারিস্টার ফুয়াদ
Published: 2nd, April 2025 GMT
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হয়নি। পাকিস্তানিদের কাছ থেকে বাংলাদেশের দখল নিয়েছিল ভারতীয়রা। তৎকালীন দেশের ১৯টি মহকুমায় ভারতের কেবিনেট থেকে প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ করা হয়েছিল। দেশের সব থানায় ওসি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিল ভারতীয় সেনারা। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিল বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী। সামরিক-বেসামরিক মানুষ মিলে দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছিল। অথচ বিজয় ছিনতাই করেছিল ভারত।
বুধবার বিকেলে বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ঈদ পুনর্মিলনী উপলক্ষ্যে সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ দাবি করে বলেন, ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে থাকতে দেওয়া হয়নি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম.
ব্যারিস্টার ফুয়াদ আরও বলেন, ১৯৭২ সালের ৩০ মার্চ আমরা সত্যিকারের বিজয় অর্জন করেছিলাম। শেখ মুজিবুর রহমানের অনুরোধে সেদিন বাংলাদেশ থেকে সব ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। ১৯ মার্চ এক কুচকাওয়াজের মাধ্যমে ভারতীয় সেনাদের আনুষ্ঠানিক বিদায় জানানো হয়েছিল। তাই বাহাত্তরের ১৯ কিংবা ৩০ মার্চ বাঙালির বিজয় দিবস হওয়া উচিত ছিল। ভারতীয় সেনারা যাওয়ার সময় পাকিস্তানের জমা দেওয়া অস্ত্র, গোলাবারুদ আর বাংলাদেশের সব পাটকল, চিনিকল ও শিল্প কলকারখানার যন্ত্রপাতি খুলে নিয়ে যায়। স্বাধীন দেশের সব সম্পদ লুট করে নিয়ে যায়। অথচ ১৬ ডিসেম্বর সেই ভারতের চাপিয়ে দেওয়া একটা মিথ্যা বিজয় দিবস পালন করে যাচ্ছি আমরা। তাই এটা নিয়ে এখন নতুন করে ভাবার সময় এসেছে। এটা নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, আওয়ামী লীগ ভারতের এজেন্ট হিসেবে গত ১৬ বছর দেশ শাসন করেছিল। ভারতের একটা কলোনি বানিয়েছিল দেশকে। ভোটসহ দেশের মানুষের সব নাগরিক অধিকার হরণ করেছিল। তাই নতুন করে আবার চব্বিশের স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছে। আমাদের ৪৭, ৫২, ৭১ আর ২৪ একই সূত্রে গাঁথা। যে কারণে ৪৭ থেকে ৫২ হয়ে ৭১-এর জন্ম হয়েছে, ঠিক একই কারণে ২৪-এর সৃষ্টি হয়েছে। সময় এবং পরিবেশ ভিন্ন হলেও প্রতিটি সংগ্রাম ছিল বাঙালির অধিকার আদায়ের লড়াই। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি দেশে এখনো চাঁদাবাজি, দখলবাজি, লুটপাট চলছে। শুধু দলীয় ব্যানার-সাইনবোর্ড বদল হয়েছে। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। আগে একদল অপকর্ম করতো, এখন আরেকদল করছে। ঘুরেফিরে এই একই রাজনীতির অবসান চাই আমরা। রাজনীতিতে আজ একটা রেনেসাঁ বিপ্লব দরকার। রাজনীতি হতে হবে জনগণের কল্যাণের। মানুষের সমস্যা সমাধানের রাজনীতি করতে চায় এবি পার্টি।
বাবুগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি সাইফুর রহিমের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বরিশাল জেলা এবি পার্টির আহবায়ক প্রকৌশলী কল্লোল চৌধুরী, সদস্য সচিব জি.এম রাব্বি, বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি আমানুল্লাহ খান নোমান, বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আরিফ আহমেদ মুন্না, সাইফুল ইসলাম, সহ-সভাপতি শাহাব উদ্দিন বাচ্চু, সম্পাদক আরিফ হোসেন, ইসলামী আন্দোলনের সমন্বয়ক শেখ নজরুল ইসলাম মাহবুব প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন ত র ব জয় কর ছ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবসহ ২৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
ক্রিকেটার এবং মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানসহ ২৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৬ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিব দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক দুই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিষেধাজ্ঞা পাওয়া অন্যরা হলেন—সমবায় অধিদপ্তরের উপ-নিবন্ধক মো. আবুল খায়ের ওরফে হিরু, কাজী সাদিয়া হাসান, আবুল কালাম মাদবর, কনিকা আফরোজ, মোহাম্মদ বাশার, সাজেদ মাদবর, আলেয়া বেগম, কাজী ফুয়াদ হাসান, কাজী ফরিদ হাসান, শিরিন আক্তার, জাভেদ এ মতিন, মো. জাহেদ কামাল, মো. হুমায়ুন কবির ও তানভির নিজাম এবং বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) উদ্দীপনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিহির কান্তি মজুমদার, সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও সিইও বিদ্যুত কুমার বসু, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জাকিয়া কে হাসান, সাবেক কোষাধ্যক্ষ ড. মো. গোলাম আহাদ, সাবেক সদস্য মো.মাহবুবুর রহমান, সাবেক সদস্য মো. নজরুল ইসলাম খান, নাহিদ সুলতান, ভবতোষ নাথ, ডা. আবু জামিল ফয়সাল ও শওকত হোসেন।
তাদের মধ্যে শেষের ১০ জনের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্লকের আদেশ দেওয়া হয়েছে। দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. রোকনুজ্জামান এই ১০ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, অভিযুক্তরা দায়িত্ব পালনকালে পরস্পর যোগসাজশে ব্যক্তিগত লাভ ও আত্মসাতের উদ্দেশ্যে মাইক্রোক্রেডিট আইন (২০০৬) এর ২৪(৩) ধারা ও বিধি (২০১০) এর বিধি ১৯ (১) লঙ্ঘন করে আত্মসাতের উদ্দেশ্যে ক্ষুদ্র ঋণ তহবিল থেকে অনুমোদনহীন গোল্ডব্রিকস এবং এ অ্যান্ড পি ব্যাটারি প্রকল্পে যথাক্রমে প্রায় ৮ কোটি ৯৭ লাখ ৮১ হাজার ৩৭৭ টাকা ও ৪ কোটি ৪৮ লাখ ৪৬৬ টাকা বিনিয়োগ দেখিয়ে স্থানান্তর করেছেন। এ জালিয়াতি সম্পর্কিত একটি মামলা দুর্নীতি দমন কমিশনে তদন্তাধীন আছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, আসামিররা দেশ ছেড়ে পালাতে পারেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমন ঠেকানো ও এনআইডি ব্লক করা প্রয়োজন।
সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন।
আবেদনে বলা হয়, সমবায় অধিদপ্তরের উপ-নিবন্ধক মো. আবুল খায়েরসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে সরকারি বিধি ও শেয়ারবাজার আইন লঙ্ঘন করে শত শত কোটি টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগসহ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধানকালে গোপন সূত্রের ভিত্তিতে জানা গেছে, অভিযোগ-সংশ্লিষ্টরা অন্য দেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমন রহিত করা একান্ত আবশ্যক।
ঢাকা/এম/রফিক