কাটেনি এখনও ঈদের আমেজ। ঈদের তৃতীয় দিনেও অনেকে ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) সকাল থেকেই ঢাকার সদরঘাটে ঘরে ফেরা মানুষের ভিড় দেখা গেছে।
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে দেখা গেছে, প্রতিটি লঞ্চ ধারণক্ষমতা অনুযায়ী যাত্রী নিচ্ছে। পাশাপাশি সরকার নির্ধারিত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।
দোয়েল পাখী-১০ এর যাত্রী আমানুর রহমান বলেন, “আমি ভোলা যাব। ঢাকায় আমার মুদি দোকান রয়েছে। পরিবার আগেই পাঠিয়ে দিয়েছি। আজ বাড়ি যাচ্ছি। আশা করি, আগামী সপ্তাহে ঢাকা ফিরব।”
দোয়েল পাখী -১০ ম্যানেজার মো.
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিটিসি) জানায়, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীর প্রায় ৩৫ শতাংশ নৌপথে যেতেন। এখন সেটি প্রায় ১৫ শতাংশে নেমে এসেছে। তখন ঢাকা থেকে ৪২টি নৌপথে ২২৫টির মতো লঞ্চ চলাচল করত। এখন প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ৬৫টি লঞ্চ চলে বিভিন্ন পথে।
ঈদে ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তা দিতে পুলিশ, র্যাব, আনসার, নৌ-পুলিশ ও বিএনসিসিসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। এবার ঈদের আগে বেশ কয়েকদিন ছুটি থাকায় যাত্রীরা ধীরে ধীরে ঢাকা ছাড়েন। আশা করছি, নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন যাত্রীরা।
এমভি অভিযান লঞ্চের মালিক হামজা লাল শেখ বলেন, “আজ (বৃহস্পতিবার) যাত্রীর চাপ মোটামুটি। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পর্যাপ্ত লঞ্চ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।”
বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক মোবারক হোসেন বলেন, “নৌপথে চলাচলকারী যাত্রীদের সেবা ও নিরাপত্তার জন্য বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তা–কর্মচারীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দিনরাত কাজ করছেন। নির্ধারিত সময়ে পন্টুন থেকে লঞ্চ ছাড়ছে। এ ব্যাপারে সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে।”
ঢাকা/এএএম/ইভা
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নৌযানের অভাবে নদী তীরে ঢাকামুখী যাত্রীদের অপেক্ষা
দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নৌ-টার্মিনাল থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামমুখী মানুষের ভিড় বাড়লেও পর্যাপ্ত যানবাহনের অভাবে তাদের টার্মিনালগুলোতে ছয় থেকে ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বিশেষ করে ভোলা থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামে যাওয়ার জন্য হাজার হাজার মানুষকে ইলিশা ঘাটে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রচন্ড রৌদ্রের মধ্যে মেঘনার তীরে ঢাকা ও চট্টগ্রাম অভিমুখী এসব মানুষের ভিড় ক্রমশ বাড়ছিল।
বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তারা জানান, ঈদের ফিরতি যাত্রায় শুক্রবার, শনিবার সবচেয়ে ভিড় হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু সে তুলনায় যানবাহন কম থাকায় যাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। অনেক যাত্রী প্রচন্ড ভিড়ের মধ্যেও লঞ্চে উঠে নদী পার হয়ে কর্মস্থলে ফেরার চেষ্টা করছেন।
বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী না হবার জন্য বারবার ঘোষণা করা হলেও যাত্রীরা এসব হুঁশিয়ারি মানছেন না। চট্টগ্রামগামী যাত্রীরা জানান, ইলিশা ঘাটে সকাল থেকে অপেক্ষা করেও চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য দুপুর বারোটা পর্যন্ত কোনো লঞ্চে তারা উঠতে পারেননি। অভিযোগ করে তারা বলেন, ঈদের সময় এই রুটে হাজার হাজার যাত্রী আসা যাওয়া করে। কিন্তু কখনো ভোলা-চট্টগ্রাম রুটে বড় কোন লঞ্চ দেওয়া হয় না।
এ ছাড়াও একাধিক যাত্রী জানান, সকাল সাড়ে ৯টায় ইলিশা লঞ্চ ঘাটে উপস্থিত হয়েও দুপুর বারোটা পর্যন্ত ঢাকাগামী কোন লঞ্চ তারা পাননি। ভোলা নদী বন্দর কর্মকর্তা রিয়াদ হোসেন বলেন, ‘‘ভোলার ইলিশা নৌ-টার্মিনাল থেকে লক্ষ্মীপুর ও চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে মোট ছয়টি জলযান চলেছে। এসব নৌযানে কমপক্ষে ১০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করত। এছাড়া ঢাকামুখী অন্তত ১৪টি লঞ্চ এই টার্মিনাল দিয়ে যাতায়াত করবে। তবে যাত্রীসংখ্যা বেশি থাকায় এটি পর্যাপ্ত নয়।’’
লঞ্চ মালিকরা জানিয়েছেন, ঈদে এবার ঘরমুখো মানুষদের একটি বড় অংশ লঞ্চে করে ফেরায় দীর্ঘদিন পর তারা লাভের মুখ দেখছেন। এবার ফিরতি যাত্রায়ও ভীড় হচ্ছে টার্মিনালগুলোতে।
বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপপরিচালক শেখ মোহাম্মদ সেলিম রেজা বলেন, ‘‘গত দুই দিন ধরেই যাত্রীদের ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে। এবার প্রত্যাশা অনুযায়ী যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে লঞ্চগুলোতে। এই ভিড় আরও বাড়বে।’’
শুক্রবার বরিশাল নদীবন্দর ব্যবহার করে অন্তত ১২টি লঞ্চ চলাচল করছে। এসব লঞ্চে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ ঢাকার উদ্দেশ্যে যাতায়াত করেছে বলেও জানান তিনি।
পলাশ//