প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে দলের স্থানীয় নেতাকর্মীদের হুমকি দিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী সিরাজুল হক।

জামালপুর জেলা বিএনপির কার্যালয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।

জামালপুর জেলা বিএনপির কার্যালয়ে ঢুকে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের হুমকি দেন তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সিরাজুল হক একদল অনুসারী নিয়ে কার্যালয়ে প্রবেশ করে নেতাকর্মীদের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করেন। একপর্যায়ে তিনি আগ্নেয়াস্ত্র দেখান এবং দলীয় নেতাকর্মীদের হুমকি দেন।

বৃহস্পতিবার হুমকির ঘটনার একটি ভিডিও এরই মধ্যে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নানা আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

ওই ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, জামালপুর পৌর শহরের স্টেশন বাজার এলাকায় জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে সাবেক স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী সিরাজুল হককে উত্তেজিত অবস্থায় দেখা যায়। তার ডান হাতে একটি পিস্তল। তিনি পিস্তলটি বারবার উপর দিকে প্রদর্শন করছেন। এ সময় তাকে বলতে শোনা যায়, আমার ফাঁসি হলে হবে। আমি ফাঁসি মেনে নেবো। তাও গাদ্দারকে মেরে ফেলবো।

ঘটনার পরপরই বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই এ ঘটনাকে ‘দলের ঐক্যের ওপর সরাসরি আঘাত’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

জেলা বিএনপির সভাপতি ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম সাংবাদিকদের জানান, এ বিষয়ে তার কোনো বক্তব্য নেই। কারণ বিষয়টি তিনি ভালোভাবে জানেন না। জানার পর কথা বলবেন।

এ বিষয়ে সিরাজুল হক সাংবাদিকদের বলেন, অফিসের ভাড়া চাইতে গেলে আমার ছেলে বাবুকে মারধর করা হয়। তাই আমি আমার নিরাপত্তার জন্য অস্ত্র নিয়ে ঘটনার প্রতিবাদ করতে যাই। আমি খালি হাতে যাব কেন? ওরা আমার বড় ছেলেকে মেরেছে। আমার বাবার জমি দখল করে পার্টি অফিস করেছে। এক কোটি বিশ লাখ টাকা ভাড়া বাকি আছে, তারা ভাড়া দেয় না। উল্টো আমার ছেলেকে মারধর করে।

এ ঘটনায় সিরাজুল হক বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন ডাকলেও বেলা সাড়ে ১১টায় তা বাতিল করেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক। তিনি ১৯৯১ সালে জামালপুর-৫ (সদর) আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ওই সময় স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী ছিলেন।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জামালপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওয়ারেছ আলী মামুন সাংবাদিকদের বলেন, অফিসের ঘরটা তাঁর। এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তিনি ঘর ছাড়িয়ে নেবেন এটা তিনি বলতেই পারেন। তবে তিনি যে প্রক্রিয়া অবলম্বন করেছেন সেটা ঠিক হয়নি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ আগ ন য় স ত র স র জ ল হক ব এনপ র ক ব এনপ র স

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ