বন্দরে পূর্ব বিরোধের জের ধরে হত্যার উদ্দেশ্য মাছুম (৪৩) নামে এক লেগুনা চালককে  বেদম ভাবে কুপিয়ে জখম করেছে স্থানীয় সন্ত্রাসী রাসেল ও ফয়সাল গং।

এলাকাবাসী আহতকে মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে বন্দর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে খানপুর হাসপাতালে প্রেরণ করে। আহত মাছুম বন্দর  কোর্টপাড়া এলাকার মৃত ইদ্রিস  ছেলে। 

গত বুধবার (২ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৭টায় বন্দর রেললাইন বাস স্ট্যান্ডস্থ পাঁকা রাস্তার  উপরে এ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাটি ঘটে। এ ব্যাপারে আহত লেগুনা চালকের স্ত্রী নাছরিন বেগম বাদী হয়ে ঘটনার ওই দিন রাতে হামলাকারি সন্ত্রাসী রাসেল ও তার ভাই ফয়সালের নাম উল্লেখ্যসহ আরো ৫/৭ জনকে অজ্ঞাত নামা আসামী করে বন্দর থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বাদিনী স্বামী লেগুনা চালক মাছুমের সাথে একই এলাকার বুইট্টা আবুলের ছেলে স্থানীয় সন্ত্রাসী রাসেল ও ফয়সালগং এর সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পূর্ব থেকে বিরোধ চলে আসছিল।

এর জের ধরে বুধবার (২ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৭টার সময় স্থানীয় সন্ত্রাসী রাসেল ও ফয়সালসহ অজ্ঞাত নামা ৫/৭ জন সন্ত্রাসী পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে বাদিনী স্বামী লেগুনা চালককে হত্যার উদ্দেশ্য এলোপাতাড়ি ভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে  নগদ ৫ হাজার টাকা নিয়া যায়। এছাড়াও ১টি বাটন ফোন ভাংচুর করে  ১ হাজার ৫০০ টাকার ক্ষতি সাধন করে।

এলাকাবাসী জানিয়েছে, গত ৫ আগস্টের পর থেকে বন্দর কোর্টপাড়া বুইট্টা আবুলের ২ ছেলে রাসেল ও ফয়সাল বেপরোয়া হয়ে উঠে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য উল্লেখিত  ২ ভাই  মহানগর বিএনপি নেতা এড.

শাখাওয়াত হোসেনের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে এলাকায় ত্রাশের রাজত্ব কায়েম করার অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে। 

রাসেল ও ফয়সালের অনৈতিক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী। 
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ র স ল ও ফয়স ল

এছাড়াও পড়ুন:

শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবে প্রতিফলিত হোক

রাজধানী শহরসহ দেশের বড় শহরগুলোয় শব্দদূষণের অসহনীয় মাত্রার বিষয়টি কারও অজানা নয়। এটি এখন শুধু শব্দদূষণ নয়, শব্দসন্ত্রাস বলেও অভিহিত হচ্ছে। অতীতে ও বর্তমানে সরকারগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কার্যকর হচ্ছে না। অতীতের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ।

শহরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নীরব এলাকা ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ঘোষণা বাস্তবে কার্যকর হবে, নাকি এটিও অতীতের মতো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে? এর আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু তার ফল তেমন একটা ভালো পাওয়া
যায়নি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘোষণার পর কিছু এলাকায় শব্দ কিছুটা কমলেও সার্বিকভাবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, শুধু ঘোষণা যথেষ্ট নয়, বরং এর কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।

শব্দদূষণের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলতেই হয়। যার কারণে সাউন্ডবক্স বা মাইক বাজানোর বিষয়গুলো তুলনামূলকভাবে কমে এসেছে। তবে গাড়ির হর্ন এতটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা অকল্পনীয়। এটিই এখন রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর শব্দদূষণের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অতিরিক্ত শব্দ হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটিতে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, মানুষ অনিদ্রায় ভোগে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটায়। তাই শুধু অভিজাত এলাকা নয়, পুরো শহরে ধাপে ধাপে কীভাবে নীরব এলাকা ঘোষণা করা যায়, সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে।

তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে আইন আছে। তা যদি আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রয়োগ না করা হয়, এ ঘোষণা কখনোই সফল হবে না। কেবল প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে নীরব এলাকা–ঘোষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন মসজিদ, মন্দির এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখানে গণসচেতনতার কাজে যুক্ত করতে হবে।

গাড়ির হর্ন বাজানো সীমিত করতে পরিবহনের বিভিন্ন ধরনের সমিতি–সংগঠনগুলোর যুক্ততাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির চালকদের অভ্যাসগত পরিবর্তনের জন্য শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকটি নিয়মিতভাবে তাঁদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্নসহ উচ্চমাত্রার যেকোনো হর্ন উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ