লন্ডনের হ্যামস্টেড ও হাইগেট আসনের এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। বাংলাদেশে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্কাই নিউজকে তিনি বলেছেন, দুর্নীতির অভিযোগের জবাব দিতে তাঁর ‘আইনজীবীরা প্রস্তুত’। কিন্তু বাংলাদেশের কেউ তাঁর আইনজীবীদের কাছে প্রশ্ন পাঠায়নি। মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর তিনি এই প্রথম প্রকাশ্যে এ নিয়ে মন্তব্য করেছেন।

তবে টিউলিপের এ দাবি নাকচ করেছে দুদক। দুদক সূত্র জানায়, আইনজীবীরা অনানুষ্ঠানিকভাবে কিছু তথ্য চেয়েছিল। দুদকও তা সরবরাহ করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের এক কর্মকর্তা সমকালকে জানান, দুদকের কাছে কোনো প্রবাসী বা বিদেশি তথ্য চাইলে তাঁকে দূতাবাসের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। অথবা জাতিসংঘের দুর্নীতিবিরোধী সনদ আনকাকের (ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট করাপশন) নিয়ম অনুযায়ী চাইতে হয়। টিউলিপ এ নিয়ম মানেননি। ফলে তাঁকে অনানুষ্ঠানিকভাবে কিছু তথ্য দিয়েছে দুদক।

স্কাই নিউজের প্রতিবেদক প্রশ্ন করেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে অনুশোচনা আছে কিনা? জবাবে টিউলিপ বলেন, ‘আপনারা আমার আইনি চিঠিটি দেখুন। দেখুন আমার কোনো প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আছে কিনা। (বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ) একবারের জন্যও আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। কিন্তু তাদের কাছ থেকে শোনার অপেক্ষায় রয়েছি।’

বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি দুর্নীতির তদন্তে তাঁর নাম উঠে আসে। গত জানুয়ারিতে ট্রেজারি মন্ত্রীর পদ ছাড়েন টিউলিপ। তিনি বলেন, ‘কয়েক মাস হয়ে গেল অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু (বাংলাদেশের) কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।’

গত মাসে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে স্কাই নিউজকে বলা হয়েছিল, দেশে টিউলিপ ‘অঢেল সম্পত্তি রেখে গেছেন। এ জন্য তিনি দায়ী।’

টিউলিপের আইনজীবীরা কয়েক সপ্তাহ আগে বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) চিঠি লিখে বলেছেন, অভিযোগগুলো ‘মিথ্যা ও হয়রানিমূলক’।

চিঠিতে বলা হয়, দুদককে ‘২০২৫ সালের ২৫ মার্চের মধ্যে অথবা তার আগে’ অভিযোগ করতে হবে। অন্যথায় ‘আমরা ধরে নেব যে, উত্তর দেওয়ার মতো বৈধ অভিযোগ নেই।’

বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা এক পোস্টে টিউলিপ বলেন, ‘সময়সীমা শেষ হয়ে গেছে। বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ জবাব দেয়নি।’
টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো মূলত খালা শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্পর্কের ওপর কেন্দ্র করে তৈরি। হাসিনা প্রায় ২০ বছর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। গত আগস্টে রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভে তিনি দেশ ছাড়েন।

হাসিনার বিরুদ্ধে স্বৈরাচারী হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তাঁর আমলে হয়রানিমূলক গ্রেপ্তার, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং ক্ষমতার অপব্যবহার হতো। তবে তিনি দাবি করেছেন, এগুলো রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।

এদিকে, টিউলিপ লন্ডনের যে কয়টি বাড়িতে বসবাস করতেন, সেগুলোর সঙ্গে আওয়ামী লীগের যোগসূত্র পাওয়া গেছে। অবশ্য অভিযোগগুলো তদন্তের ভার তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মান নিয়ন্ত্রক উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাসের ওপর ছেড়ে দেন।

তথ্য সরবরাহ করেছে দুদক
দুদক টিউলিপের আইনজীবীদের যেসব তথ্য সরবরাহ করেছে তার মধ্যে গুলশানের ফ্ল্যাট ক্রয় ও হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় জালিয়াতির প্রমাণ তুলে ধরা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর ভাই ও বোনের নামে পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দ নেওয়ার ক্ষেত্রে টিউলিপের ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। গাজীপুরে টিউলিপ’স টেরিটরি নামের রিসোর্টের মালিক হওয়ার প্রাথমিক তথ্য রয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ট উল প স দ দ ক ট উল প র আইনজ ব

এছাড়াও পড়ুন:

বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ

ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) আজ সোমবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুপুরের পর ডিইপিজেডের সব কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকল্পটিতে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে তারা উৎপাদন করতে না পারায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে ডিইপিজেডে প্রায় ৯০টি কারখানার এক লাখের মতো শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়।

বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে উল্লেখ করে মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার যদি এটি অব্যাহত থাকে, তবে সংকট আরও বাড়বে। শ্রমিকেরা কাজ না করতে পেরে বিক্ষুব্ধ হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠবে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এ ধরনের ঘটনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘তিতাস বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ারের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে। তারা বকেয়া পরিশোধ করেনি। এ ব্যাপারে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে, বেপজাকে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ধরনের পদক্ষেপের আগে ডিইপিজেডের গুরুত্ব বিবেচনা করে আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা উচিত ছিল।’

এ বিষয়ে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাসের কোনো প্রেশার নেই। প্রেশার শূন্য। কিন্তু কেন তিতাস কর্তৃপক্ষ এমনটি করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরা নিজেরাও বিষয়টি নিয়ে জানি না। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, বকেয়া নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই। তিতাস কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিল, সেটি জানা নেই।’

জানতে চাইলে তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদানির সঙ্গে চুক্তি ক‌রে শুল্ক ফাঁকি
  • শিল্প খাতের উৎপাদন যেন ব্যাহত না হয়
  • কারাগারে গাঁজা সরবরাহ করতে গিয়ে নিজেই কারাগারে
  • ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা কী
  • ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ নেই, ৯০ কারখানায় ছুটি
  • মঙ্গলবার ৭ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব জায়গায়
  • পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে আরও ২৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কিনছে ভারত
  • পর্তুগাল ও স্পেনে নজিরবিহীন বিদ্যুৎ বিপর্যয়, পর্যুদস্তু জনজীবন
  • হাসপাতালে ডায়রিয়ার প্রকোপ শয্যা ও স্যালাইন সংকট
  • বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ