সময় বড়ই নিষ্ঠুর। কদিন আগেও যে থমাস মুলার ছিলেন বায়ার্ন মিউনিখের সৌভাগ্যের প্রতীক, তাঁকেই এখন বিদায়ের দিনক্ষণ শুনিয়ে দিয়েছে ক্লাবটি। ৩৫ বছর বয়সী এ ফরোয়ার্ডকে আর রাখতে চাইছে না জার্মান জায়ান্টরা। বুড়িয়ে যাওয়া এ তারকাকে বোঝা মনে করছে বায়ার্ন। চলতি মৌসুম শেষেই তাঁকে বিদায় করে দিতে চাইছে তারা।

আগামী জুনে বায়ার্নের সঙ্গে চুক্তি শেষ হবে মুলারের। এরই মধ্যে বায়ার্ন কর্তৃপক্ষ তাঁকে জানিয়ে দিয়েছে তাঁর সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করবে না তারা। প্রায় ঘরবাড়ি বানিয়ে ফেলা ক্লাব এভাবে সাফ না বলে দেওয়ার পর অনেকটা অকূলপাথারে পড়েছেন তিনি। দুটি প্রভাবশালী জার্মান ক্রীড়া ম্যাগাজিন ‘স্পোর্টবিল্ড’ ও ‘কিকার’ জানিয়েছে, মুলারের পেছনে আর মোটা বেতন খরচ করতে রাজি নয় বাভারিয়ান ক্লাবটি। এই অর্থ কোনো উঠতি প্রতিভার পেছনে ব্যয় করতে চান তারা। যে কারণে চলতি মৌসুম শেষে মুলারের বায়ার্ন অধ্যায়ের ইতি ঘটার সম্ভাবনা প্রায় নিশ্চিত। 

২০০৮ সালে ইয়ুর্গেন ক্লিন্সম্যানের তত্ত্বাবধানে বায়ার্নে প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটে মুলারের। ওই মৌসুমেই লুই ফন গালের অধীনে ক্লাবের মূল দলেও নিয়মিত হয়ে যান তিনি। এরপর থেকে গত দেড় যুগে বায়ার্নের পক্ষে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে রেকর্ড ৭৪২ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। যেখানে গোল করেছেন ২৪৭টি। লম্বা এ সময়ে বায়ার্নের হয়ে ১২টি বুন্দেসলিগা, দুটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ অনেক ট্রফি জিতেছেন। এবার তাদের সামনে বুন্দেসলিগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের সুযোগ রয়েছে। এ দুটি ট্রফি জিততে পারলে তাঁর বিদায়টা নিশ্চিতভাবেই স্মরণীয় হবে। 

জার্মান গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, দুই সপ্তাহ আগে মুলারের প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করে ক্লাবের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন বায়ার্নের বোর্ড মেম্বার ম্যাক্স এবেরেল। কেন ক্লাব বর্ষীয়ান এ তারকার সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করবে না, সে ব্যাখ্যাও দেন। তবে মুলার চেয়েছিলেন কমপক্ষে আরও একটি মৌসুম বায়ার্নে থাকতে। একটি সূত্রে অবশ্য জানা গেছে, এক মৌসুম না হলেও আগামী গ্রীষ্মে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠেয় ক্লাব বিশ্বকাপের প্রথম আসরে মুলারকে নিয়ে যেতে পারে বায়ার্ন। এ প্রস্তাবেও বোর্ড মেম্বারদের অনেকে রাজি নন।  

২০০০ সালে ১০ বছর বয়সে বায়ার্নের ‘ইয়ুথ প্রজেক্ট’ এ যোগ দেন মুলার। ২০০৭ সালে বায়ার্নের মূল দলে অভিষেক হয় তাঁর। কিছু দিনের মধ্যেই বুদ্ধিমত্তা ও পরিণত ফুটবল মস্তিষ্ক দিয়ে আলাদাভাবে নজর কাড়েন তিনি। প্রথম মৌসুমে মোট ২৩ ম্যাচে মাঠে নামার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি, যেখানে ১৫টিতে বদলি হিসেবে। পরের মৌসুমেই নিয়মিত হয়ে যান তিনি। এরপর থেকে প্রথম একাদশে জায়গাটা পাকাই ছিল। গত বছর ইউরোর পর আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নেওয়ার পরই ভাটার টান লাগে মুলারের ক্যারিয়ারে। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে

মাদারীপুরে মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের প্রেমের টানে চীনের নাগরিক শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসেছেন। বিয়ে করে বর্তমানে মাদারীপুরে শশুরবাড়িতে আছেন। ভিনদেশি যুবককে দেখার জন্য ওই বাড়িতে মানুষ ভিড় করছেন।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের উত্তর মহিষেরচর এলাকার বাসিন্দা সাইদুল হোসেনের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৯)। সুমাইয়া মাদারীপুর শহরের সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তারা তিন বোন। সুমাইয়া বড়। মেঝ সাদিয়া আক্তার (১২) মাদ্রাসায় পড়ে। ছোট বোন আরিফা (৬)। 

চীনের সাংহাই শহরের সি জিং নিং এর ছেলে শি তিয়ান জিং (২৬)। তারা দুই ভাই। বড় শি তিয়ান জিং। তার চীনের সাংহাই শহরে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা আছে। 

আরো পড়ুন:

‘একজন ছেলে মানুষ আমাদের পরিবারের বৌ হয়েছিল’

এক বিয়ের বরযাত্রী খেয়ে ফেলল অন্য বিয়ের খাবার

শি তিয়ান জিংকে টিকটকে দেখেন সুমাইয়া। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা আদান-প্রদান হয়। উভয়ই গুগলের মাধ্যমে লেখা অনুবাদ করে মনের ভাব আদান- প্রদান করেন। এক পর্যায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। মাত্র চার মাসের প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে গত ২৪ জুলাই চীন থেকে বাংলাদেশ আসেন শি তিয়ান জিং। এরপর এক দিন ঢাকার একটি হোটেলে থাকেন। ২৬ জুলাই মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেচরের সুমাইয়ার বাড়িতে আসেন। 

সুমাইয়া, সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম ও তার দুইজন আত্মীয় মিলে ঢাকা থেকে শি তিয়ান জিংকে মাদারীপুরে নিয়ে আসেন। বাংলা ভাষায় কথা বলতে না পারায় মোবাইলে অনুবাদ করে কথা আদান-প্রদান করেন শি তিয়ান জিং। এরপর ২৭ জুলাই তারা বিয়ে করেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সুমাইয়ার বাড়িতে মানুষ ভিড় করতে থাকে।  

সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘‘টিকটক দেখে আমি ওর ভক্ত হই। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা হয়। পরে দুজনেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। মাত্র চার মাসের প্রেমের সূত্র ধরে চীন থেকে বাংলাদেশ আমার কাছে চলে আসবে, তা কখনো ভাবিনি। ও প্লেনে উঠার সময় বলেছে, আমি বাংলাদেশে আসছি। আমি বিশ্বাস করিনি। যখন ইন্ডিয়া এসে আমাকে জানায়, তখন বিশ্বাস করেছি।’’ 

সুমাইয়া আক্তার আরো বলেন, ‘‘ও ওর মা-বাবাকে আমার কথা বলেছে। তারাও মুসলিম। ওর মা বলেছেন, আমাকে বিয়ে করে চীনে নিয়ে যেতে। তাই শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ে করেছেন।’’ 

সুমাইয়া বলেন, ‘‘এরই মধ্যে পাসপোর্ট করতে দিয়েছি। শি তিয়ান জিং এক মাস বাংলাদেশে থাকবে। এর মধ্যে আমার কাগজপত্র রেডি করা হবে। তারপর ও আমাকে চীনে নিয়ে যাবে। আমিও চীনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’ 

শি তিয়ান জিং বলেন, ‘‘বাংলাদেশ আমার ভালো লেগেছে। তবে অনেক গরম। আর অনেক মানুষ আমাকে দেখতে আসে। তাই আমার ভয় লাগে। আমি ভালোবেসে চীন থেকে এখানে এসেছি। সুমাইয়াকে বিয়ে করেছি। এখন ওর কাগজপত্র রেডি করে চীনে নিয়ে যাবো। আমার পরিবার সব জানে। তারাই সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যেতে বলেছেন।’’ 

সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘শি তিয়ান জিং আমাদের এখানে আছে। ও খুব ভালো ছেলে। খুবই অমায়িক। কোনো অহংকার নেই। এক মাস থাকবে এবং আমার মেয়েকে নিয়ে যাবে। আমরা খুব খুশি।’’ 

পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুবেল হাওলাদার জানান, প্রথমে আদালতের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। পরে সামাজিকভাবে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়। চীনে ওই ছেলের ব্যবসা আছে। কিছু দিনের মধ্যে সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যাবে। 

ঢাকা/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আবারও হতাশায় ডুবিয়ে এগিয়ে গেল পাকিস্তান
  • জুলাই অভ্যুত্থানের সময় ভিপিএনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল
  • রূপ নয়, সাহস দিয়ে জয় করা এক নায়িকা
  • টানা দুই জয়ের পর এবার হার বাংলাদেশের যুবাদের
  • ভারতের অর্থনীতি মৃত, ট্রাম্প ঠিকই বলেছেন: রাহুল
  • হেনরির ৬ উইকেটের পর দুই ওপেনারে নিউজিল্যান্ডের দিন
  • অসুখবিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না: ববিতা
  • নিশ্ছিদ্র দাপটে উরুগুয়েকে উড়িয়ে ফাইনালে ও অলিম্পিকে ব্রাজিল
  • যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা
  • প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে