অ্যাথেন্সের অ্যাক্রোপলিস ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাক্ষী
Published: 5th, April 2025 GMT
প্রাচীন ধর্ম, দর্শন ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তীর্থস্থান গ্রিস। বিশ্বের পর্যটকদের কাছে অন্যতম পছন্দের স্থান গ্রিসের রাজধানী অ্যাথেন্সের অ্যাক্রোপলিস। গ্রিস ভ্রমণ করেছেন কিন্তু অ্যাক্রোপলিসে যাননি এমন পর্যটক পাওয়া দুষ্কর। অ্যাক্রোপলিস বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলোর মধ্যে একটি। অ্যাথেন্সে সবচেয়ে বেশি পর্যটনের আনাগোনা থাকে এখানে। প্রতিদিন ২৩ হাজারেরও বেশি পর্যটক অ্যাক্রোপলিসে ঘুরতে যান।
সময়ের পরিক্রমায় পৃথিবীতে যতগুলো শহর প্রাচীন দর্শন ও ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রয়েছে, তাদের মধ্যে গ্রিসের রাজধানী অ্যাথেন্স অন্যতম। এ নগরীর ইলিসস উপত্যকায় চুনাপাথরের পাহাড়ের ওপর সগৌরবে আড়াই হাজার বছর ধরে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে গ্রিক পুরাণের দেবী অ্যাথেনার সম্মানে নির্মিত পার্থেনন মন্দির, সঙ্গে আরও একাধিক স্থাপত্যকলা। রয়েছে গ্রিসের প্রাচীন শাসকদের স্মৃতিবিজড়িত অনেক ছোট ছোট স্থাপনা। যেখানে রয়েছে ধর্মীয় উপাসনালয়, নগরদুর্গসহ তৎকালীন রাজার বাসস্থান। একে প্রাচীন গ্রিসের দেব-দেবতার বাসস্থানও বলা হয়। এগুলোই বর্তমানে পর্যটকদের মূল আকর্ষণ। বোমাবর্ষণ থেকে ভূমিকম্প– বহু আঘাত গেছে এসব স্থাপনার ওপর দিয়ে। তবুও গ্রিসের সমৃদ্ধ ইতিহাসের স্মারক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে এটি; যা দেখতে বিভিন্ন দেশ থেকে ছুটে যান পর্যটকরা।
অনেক ভিন্ন ভিন্ন স্থাপনার সমন্বয়ে গঠিত এ অঞ্চলকে ঐতিহাসিকরা অ্যাক্রোপলিস নামকরণ করেছেন। অ্যাক্রোপলিস এবং এর স্মৃতিস্তম্ভগুলো প্রাচীন ইতিহাসসমৃদ্ধ গ্রিসের সবচেয়ে উন্নত ও সমৃদ্ধ শহর হিসেবে অ্যাথেন্সকে উপস্থাপন করে।
নিঃসন্দেহে বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন অ্যাক্রোপলিসে এসে প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটক-দর্শনার্থী এর মহিমায় মুগ্ধ হন। পর্যটকদের চাপ সামাল দিতে গত বছর অ্যাক্রোপলিসে অতিরিক্ত জনসমাগমের জন্য প্রবেশ সীমিত করেছে দেশটির সরকার। গ্রিসের সংস্কৃতিমন্ত্রী লিনা মেনডোনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘অ্যাক্রোপলিসে প্রতিদিন ২৩ হাজারেরও বেশি দর্শনার্থী আসেন। গেটের প্রবেশ টিকিট বিক্রয়ের হিসাবে এ সংখ্যা নিরূপণ করা হয়।’ গত বছর পর্যটন মন্ত্রণালয় প্রতিদিন ২৩ হাজার পর্যন্ত প্রবেশ সীমাবদ্ধ করেছে।
অ্যাক্রোপলিসের উচ্চতা সমুদ্র সমতল থেকে প্রায় ৬০০ ফুট এবং আয়তন ৩০ হাজার ৫০০ বর্গমিটার। অ্যাক্রোপলিসের নির্মাণকাজ শুরু হয় খ্রিষ্টপূর্ব ৪৪৭ অব্দে। এখানকার পার্থেনন মন্দির নিয়ে গবেষণা এখনও চলছে। গবেষকদের ধারণা, এই মন্দির বানাতে ২২ হাজার টন মার্বেল পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। বিশাল আকৃতির ৫৮টি পিলার রয়েছে। পিলারে ব্যবহার করা হয়েছে ১৩ হাজার মার্বেলের টুকরা। মন্দিরের পিলারের ওপরের কারুকাজ করা একেকটি মার্বেলের ওজন ১০ টন। এখানে ছিল স্বর্ণনির্মিত ১২ মিটার উঁচু অ্যাথেনা দেবীর মূর্তি। প্রাচীন গ্রিক পুরাণ অনুসারে, অ্যাথেনা শিক্ষা, সংস্কৃতি, বীরত্ব, শক্তি, যুদ্ধ, জ্ঞান ও শহরের দেবী।
২০১৫ সালে একদল প্রকৌশলী অ্যাক্রোপলিসের কাঠামোগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানিয়েছিলেন– আড়াই হাজার বছর আগের স্থপতিরা এর কাঠামোকে ভূমিকম্প সহনীয় করেই তৈরি করেছিলেন; যার কারণে অ্যাক্রোপলিস ও পার্থেননের কাঠামো এখনও অ্যাথেন্সের বুকে দাঁড়িয়ে আছে।
অ্যাক্রোপলিসের নিচেই রয়েছে দুটি প্রাচীন থিয়েটার ডায়োনিসাস ও হেরোডিয়ন। ২৪০০ বছরের পুরোনো ১৬ হাজার দর্শকাসনের ডায়োনিসাস থিয়েটারের বিশাল ধ্বংসাবশেষ। ১৮০০ বছরের পুরোনো ‘আউটডোর থিয়েটার’ হেরোডিয়নে ১ হাজার ২০০ দর্শকাসন ছিল। এর পাশের আরেকটি উঁচু পাহাড়ে রয়েছে দার্শনিক সক্রেটিসের কারাগার; যেখানে কেটেছে সক্রেটিসের জীবনের শেষ দিনগুলো।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অ য ক র পল স র মন দ র
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে এখনও হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল: আইডিএফ
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র এফি ডেফরিন জানিয়েছেন, ইসরায়েল এখনও ইরানের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ইরানে ১৫০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে ‘ধারাবাহিক হামলা’ চালানো হয়েছে। খবর বিবিসির
তেহরানে লক্ষ্যবস্তুগুলোর মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ও আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিট ছিল বলে জানান ডেফরিন। এছাড়াও ইসফাহানে অবস্থিত একটি পারমাণবিক স্থাপনাতেও আঘাত হানা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
আইডিএফ মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা এখনো ইরানের ভেতরে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, ইসরায়েল গতকাল শুক্রবার ভোরে ইরানে হামলা চালায়। এর জবাবে আজ শনিবার ইরানও ইসরায়েলের বিভিন্ন এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রকাশিত খবর ও ছবি থেকে দেখা গেছে, ইরানি হামলায় ইসরায়েলের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কেবল তাই নয়, বস্তুগত ক্ষতির পাশাপাশি বেশ কয়েকজন হতাহতের খবরও পাওয়া গেছে।