রাজধানীর পল্লবীর কালশী ফ্লাইওভারে প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে ফ্লাইওভার থেকে ছিটকে পড়ে নিহত দুই তরুণের পরিচয় মিলেছে। তাদের নাম তোফাজ্জাল ও রিয়াদ। তারা দুজন বন্ধু। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

পল্লবী থানার এস আই আতিকুর রহমান সমকালকে জানান, তোফাজ্জাল ঢাকায় থাকতেন। রিয়াদ ঢাকায় বেড়াতে এসেছিলেন। 

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, দুই তরুণ মোটরসাইকেলে করে ফ্লাইওভারে উঠছিলেন। এ সময় একটি টয়োটা সিএইচ-আর মডেলের প্রাইভেটকারের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে পেছনে বসা আরোহী প্রায় ২৫ ফুট নিচে রাস্তায় ছিটকে পড়েন। আশপাশের পথচারীরা তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। ঘটনাস্থলে মোটরসাইকেলটি দুমড়েমুচড়ে যায়। এ ছাড়া চালক ফ্লাইওভারের ওপরে ছিটকে পড়েন।

প্রত্যক্ষদর্শী আরেক প্রাইভেটকারচালক আহসান হাবিব বলেন, মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন দুই তরুণ। একটি প্রাইভেটকারের সঙ্গে সংঘর্ষের পর মোটরসাইকেলের পেছনে বসা তরুণ ফ্লাইওভার থেকে নিচে পড়ে যান। আশপাশের লোকজন এসে তাঁকে উদ্ধার করেন। দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেলটি ভেঙেচুরে যায়। আহত চালক ফ্লাইওভারে পড়েছিলেন। তাঁর অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক। সংঘর্ষের পর গাড়িটি ফ্লাইওভারের রেলিংয়ে ধাক্কা লেগে দুমড়েমুচড়ে গেছে।

নাইম মাহমুদ নামে আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ফেসবুকে লেখেন, ‘ইসিবি থেকে মিরপুর ডিওএইচএসের দিকে কালশী ফ্লাইওভার হয়ে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ শুনি পেছনে গাড়ির চাকা ফেটে যাওয়ার আওয়াজ। লুকিং গ্লাসে দেখলাম, পেছনে একটা কালো গাড়ি রাস্তার বাঁয়ে লেগে গেল। বাইকের একজন লোক উড়ে ফ্লাইওভার থেকে নিচে রাস্তায় পড়ে গেল। আরেকজন বাইকার গুরুতর আহত।’

তিনি আরও লেখেন, একজন ঘটনাস্থলে মারা যায়। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ বারবার কল দেওয়া হয়। তবে তারা সাড়া দিতে অনেক দেরি করে। পরে কিছু লোক পল্লবী থানায় যায়। ততক্ষণে থানা পুলিশ রওনা হয়ে গিয়েছিল।

পুলিশ জানায়, গুরুতর আহত অবস্থায় দু’জনকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাদের স্থানান্তর করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। সেখানে রাত ১২টার দিকে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, নিহত দুই তরুণের বয়স আনুমানিক ২০ বছর।

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো.

ফারুক বলেন, মৃতদেহ দুটি ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল পল্লবী থানা পুলিশের হেফাজতে আছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন হত ফ ল ইওভ র থ ক স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা

আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।

শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’

স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।

ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’

আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ