খুলনায় পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ প্রকল্প ‘স্থগিত’ করার প্রতিবাদ জানিয়েছেন নাগরিক সংগঠনের নেতারা। তাঁরা দ্রুত খুলনায় গ্যাস সরবরাহের দাবি জানান।

আজ শনিবার দুপুরে ‘খুলনা নাগরিক সমাজ’ নামের একটি নাগরিক সংগঠনের সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়। নগরের শান্তিধাম মোড়ে সংগঠনটির অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দাবি পূরণ না করা হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্যসচিব মো.

বাবুল হাওলাদার। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, খুলনায় পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহের জন্য ২০১২ সালে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে পাইপলাইন বসানোর কাজ শুরু করে। ওই প্রকল্পের আওতায় খুলনার আড়ংঘাটা পর্যন্ত ১৬৫ কিলোমিটার পাইপ বসানো হয়। পরে প্রকল্পটি পতিত ঘোষণা করে নির্মাণসামগ্রী সরিয়ে নেওয়া হয়। ওই প্রকল্পে বিপুল পরিমাণ অর্থের অপচয় হলেও কর্তৃপক্ষকে কোনো ধরনের জবাবদিহির আওতায় আসতে হয়নি। পরে ভোলা-বরিশাল-খুলনা রুটে গ্যাস সরবরাহের সিদ্ধান্তে এ অঞ্চলের মানুষ আবার আশায় বুক বাঁধেন। কিন্তু নতুন প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইসহ বেশ কিছু কাজ এগিয়ে যাওয়ার পর হঠাৎ করে গত মার্চের প্রথম সপ্তাহে খুলনার গ্যাস সরবরাহ প্রকল্পটি স্থগিত করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। এর আগে খুলনায় যেসব শিল্পকলকারখানা গড়ে উঠেছিল, সেগুলোও একের পর এক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শিল্পনগরী খুলনা এখন বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছে। খুলনায় ন্যূনতম ইন্ডাস্ট্রিয়াল কানেকশনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করতে পারলে খুলনায় আবারও শিল্পের জাগরণ হতে পারে। গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারলে উৎপাদন খরচ অনেকটা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার যে সুযোগ সৃষ্টি হবে, তাতে গড়ে উঠবে নতুন নতুন শিল্পকারখানা। বাড়বে ব্যক্তি উদ্যোক্তাও। গ্যাস না থাকায় এ অঞ্চলে বিনিয়োগে উৎসাহ নেই শিল্প উদ্যোক্তাদের।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, খুলনায় শিল্পকারখানা গড়ে উঠলে বা বন্ধ শিল্পকারখানা চালু হলে শুধু খুলনার মানুষের কর্মসংস্থানই হবে না, কমবেশি ওই সুবিধা ভোগ করবেন সমগ্র দেশের মানুষ। খুলনায় উৎপাদনের চাকা সচল হলে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে জাতীয় অর্থনীতিতেও।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ য স সরবর হ প রকল প

এছাড়াও পড়ুন:

বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ

ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) আজ সোমবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুপুরের পর ডিইপিজেডের সব কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকল্পটিতে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে তারা উৎপাদন করতে না পারায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে ডিইপিজেডে প্রায় ৯০টি কারখানার এক লাখের মতো শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়।

বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে উল্লেখ করে মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার যদি এটি অব্যাহত থাকে, তবে সংকট আরও বাড়বে। শ্রমিকেরা কাজ না করতে পেরে বিক্ষুব্ধ হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠবে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এ ধরনের ঘটনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘তিতাস বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ারের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে। তারা বকেয়া পরিশোধ করেনি। এ ব্যাপারে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে, বেপজাকে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ধরনের পদক্ষেপের আগে ডিইপিজেডের গুরুত্ব বিবেচনা করে আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা উচিত ছিল।’

এ বিষয়ে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাসের কোনো প্রেশার নেই। প্রেশার শূন্য। কিন্তু কেন তিতাস কর্তৃপক্ষ এমনটি করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরা নিজেরাও বিষয়টি নিয়ে জানি না। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, বকেয়া নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই। তিতাস কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিল, সেটি জানা নেই।’

জানতে চাইলে তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদানির সঙ্গে চুক্তি ক‌রে শুল্ক ফাঁকি
  • শিল্প খাতের উৎপাদন যেন ব্যাহত না হয়
  • কারাগারে গাঁজা সরবরাহ করতে গিয়ে নিজেই কারাগারে
  • ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা কী
  • ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ নেই, ৯০ কারখানায় ছুটি
  • মঙ্গলবার ৭ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব জায়গায়
  • পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে আরও ২৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কিনছে ভারত
  • পর্তুগাল ও স্পেনে নজিরবিহীন বিদ্যুৎ বিপর্যয়, পর্যুদস্তু জনজীবন
  • হাসপাতালে ডায়রিয়ার প্রকোপ শয্যা ও স্যালাইন সংকট
  • বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ