ঢাবি শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন
Published: 6th, April 2025 GMT
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের নৃশংস গণহত্যার প্রতিবাদে আগামীকাল সোমবার সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া বিকেলে সংহতি সমাবেশের ডাক দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতারা।
রবিবার (৬ এপ্রিল) বিশ্বব্যাপী ঘোষিত ‘দ্য ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা’ কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে তারা এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ঢাবির অন্তত ২৬টি বিভাগ ও একটি অনুষদের শিক্ষার্থীরা বিবৃতির মাধ্যমে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি ঘোষণা দেন।
বিবৃতি দেওয়া বিভাগগুলোর মধ্যে রয়েছে, আরবি, ইসলামিক স্টাডিজ, আইন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, পালি অ্যান্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ, যোগাযোগ বৈকল্য, শিক্ষা ও গবেষণা, উন্নয়ন অধ্যয়ন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি, নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং, তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল, অণুজীব বিজ্ঞান, প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান, ভূগোল ও পরিবেশ, মৃত্তিকা, পনি ও পরিবেশ বিভাগ।
আরো পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবিতে কাল ঢাবিতে সংহতি সমাবেশ
বহিরাগত যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করবে ঢাবি
এছাড়া বিবৃতি দিয়েছে, ইন্সটিটিউট অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি, ফার্মেসী, ফাইন্যান্স, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস এবং ইতিহাস বিভাগ। চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকেও কর্মসূচি ঘোষণা করে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে ।
এদিকে, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের গণহত্যার বিরুদ্ধে এবং স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিতে সোমবার (৭ এপ্রিল) ঢাবি শিক্ষার্থীদের নিয়ে সারাদেশে সংহতি সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম সদস্য সচিব রেজওয়ান আহমেদ রিফাত।
রবিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ আন্দোলনের দুই সংগঠক মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ এবং এবি জোবায়ের বিশ্বব্যাপী ‘নো ওয়ার্ক নো স্কুল' কর্মসূচি সফল করতে প্রতিটি বিভাগের প্রতি আহ্বান জানান।
পরে এ কর্মসূচি সফলের আহ্বান জানিয়ে নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি আবু সাদিক কায়েম। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতেও এ কর্মসূচি সফলের আহ্বান জানানো হয়।
কেন্দ্রীয়ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিকেল ৪টায় এই সংহতি এবং বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
আরো পড়ুন: স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবিতে কাল ঢাবিতে সংহতি সমাবেশ
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ