সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার ফুলজোড় নদীতীরের ভূঞাগাঁতী এলাকায় বউমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার দিনব্যাপী এ মেলায় নানা বয়সী-নারীদের পাশাপাশি ভিড় জমিয়েছিল শিশু-কিশোরেরা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অষ্টমী স্নানোৎসবের পরের দিন উপজেলার ঘুড়কা ইউনিয়নের ভূঞাগাঁতী এলাকায় এ মেলা বসে। তবে মেলায় আসা বেশির ভাগ ক্রেতা বিভিন্ন ধর্মের গৃহিণী ও নারী।

স্থানীয় কয়েকজন জানালেন, অষ্টমী স্নানের পরের দিন এলাকার নানা বয়সী নারীদের জন্য এই মেলার আয়োজন করা হয়। স্নানের দিন যে বারোয়ারি মেলা বসে, সেখানে বাড়ির কাজ ফেলে তাঁদের যাওয়া হয় না। তাই অনেক বছর হলো নিয়ম মেনে বউমেলা বসে। এদিন গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় নানা জিনিস, মাটির হাঁড়িপাতিলের পাশাপাশি বাহারি পণ্য কেনেন নারীরা। এ ছাড়া শিশুদের খেলনা ও বিভিন্ন স্বাদের মিষ্টান্ন বেশ বিক্রি হয়।

রায়গঞ্জ উপজেলা সদরের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিদ্যুৎ কুমার মোদক বলেন, ‘প্রথমবারের মতো বউমেলায় এসেছি। মেলার সার্বিক দিক দেখে অনেক ভালো লেগেছে।’

বউমেলা উপলক্ষে বাড়িতে বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনের ভিড় জমে। ভূঞাগাঁতী এলাকার দুজন গৃহবধূ জানান, অনেক কিছুর পরিবর্তন হলেও বউমেলা আগের মতোই আছে। এ মেলা থেকে সংসারের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক কিছু কিনেছেন তাঁরা। মেলা উপলক্ষে বাড়িতে অনেক কুটুম এসেছেন। তাঁদের খাওয়ানো ও মেলায় ঘুরানো হয়।

মুরারীপাড়া থেকে কয়েকজন নারী এসেছেন মাটির হাঁড়িপাতিল কিনতে। তাঁরা বললেন, খই-মুড়ি ভাজার বাসন সারা বছর পাওয়া যায় না। তাই মেলা থেকে এসব কিনতে এসেছেন। স্থানীয় একটি কলেজের শিক্ষার্থী বলেন, ‘আগে মা-পিসিদের সঙ্গে বউমেলায় আসতাম। এবার বান্ধবী ও বোনদের সঙ্গে বউমেলায় এসেছি। বছরের এক দিন খুব মজা করে কাটাই আমরা।’

উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির সাবেক সহসভাপতি শংকর কুমার দাস বলেন, যুগের পরিবর্তনে অনেক কিছু পাল্টে গেছে। তবুও আবহমান বাংলার বৈচিত্র্যময় এই মেলায় মানুষের বিশেষ করে নারীদের অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো। আগে বউমেলায় ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই নারী ছিল। তবে এখন তার কিছুটা ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ক ক উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রম আইনের সংশোধন কবে হবে, তা বলছে না শ্রম মন্ত্রণালয়

শ্রম আইন সংশোধনের অধ্যাদেশ কবে হবে, সে বিষয়ে আর সময়সীমার কথা বলছে না শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। গত নভেম্বর মাসে এই মন্ত্রণালয় বলেছিল, ২০২৫ সালের মার্চ মাসের মধ্যে এ অধ্যাদেশ হবে। মার্চ শেষে এপ্রিলও শেষ হচ্ছে আজ বুধবার।

সচিবালয়ে আজ ‘মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আইন সংশোধনীর ক্ষেত্রে সময়সীমা থাকার পক্ষে নন তিনি। শ্রমিক–মালিকদের স্বার্থ রক্ষাসহ শিগগিরই তা করা হবে। বিষয়টি এখন কোন প্রক্রিয়ায় আছে, তা বলতে রাজি হননি শ্রম উপদেষ্টা।

শ্রম উপদেষ্টা বলেন, এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’। তিনি আরও বলেন, ‘একসময় স্লোগান ছিল দুনিয়ার মজদুর, এক হও।’ এখন তা বদলে গেছে। এখন হবে ‘দুনিয়ার মালিক-শ্রমিক, এক হও’। এখন ভালো মালিকেরা শ্রমিকদের সন্তানের মতো মনে করেন।

প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে ১০১টি ধারা ও উপধারা সংশোধন হবে। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ১০ থেকে ২০ মার্চ অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গভর্নিং বডির বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

আইএলওর বৈঠকে যোগ দিতে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে যে দলটি জেনেভা সফর করে, সেখানে শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হুমায়ুন কবীর, যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হোসেন সরকার ও শ্রম উপদেষ্টার একান্ত সচিব মো. জাহিদুল ইসলাম ছিলেন।

এর আগে গত বছরের ১০ নভেম্বর তৎকালীন শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান আইএলওর গভর্নিং বডির বৈঠক থেকে দেশে ফিরে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, মার্চের মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন হবে। উপদেষ্টা তখন এ–ও বলেছিলেন, আগের সরকারের আইনমন্ত্রীর (আনিসুল হক) নেতৃত্বাধীন দলকে আইএলও পর্ষদে অপদস্থ করা হয়েছিল। অথচ এবারের চিত্র ছিল ভিন্ন। বাংলাদেশের পদক্ষেপগুলো নিয়ে বরং প্রশংসা করা হয়েছে। কয়েকটি দেশ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলো তুলে নেওয়ার কথাও বলেছিল।

জানা গেছে, শ্রম অধিকার বাস্তবায়নে ঘাটতির অভিযোগ এনে জাপানসহ ছয়টি দেশের পক্ষ থেকে আইএলওতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। মামলাগুলো চলমান।

আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাত মিলিয়ে দেশে ৭ কোটি ৬৫ লাখ শ্রমিক রয়েছে। এদিকে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদকে (টিসিসি) শ্রমিকপক্ষ জানিয়েছে, আইন সংশোধনের সময় সব শ্রমিকের কথা মাথায় না রেখে প্রধানত পোশাক খাতের শ্রমিকদের কথা বিবেচনা করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মে দিবস আর জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস উপলক্ষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীতে শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ–স্কুল পর্যায়ে রচনা ও প্রবন্ধ লেখার ওপরে বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হবে।

এ ছাড়া শ্রম অধিকার বিষয়ে প্রকাশিত বা প্রচারিত মানসম্মত সংবাদ বা স্থিরচিত্র যাচাই করে সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহকদের দেওয়া হবে পুরস্কার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্ষমতায় গেলে নারীদের মর্যাদা, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে: জামায়াত আমির
  • এখনো শ্রমিকদের লড়াই করতে হচ্ছে, কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি
  • শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের মহান মে দিবস আজ
  • কর্মক্ষেত্রে অধিকার আদায়ের রক্তাক্ত গৌরবময় দিন
  • শ্রম আইনের সংশোধন কবে হবে, তা বলছে না শ্রম মন্ত্রণালয়
  • শিগগিরই শ্রম আইন সংশোধন করা হবে: শ্রম উপদেষ্টা 
  • আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবসে শিল্পকলা একাডেমির  দুই দিনের আয়োজন
  • মেরাদিয়ায় পশুর হাট বসানো যাবে না, নির্দেশ হাইকোর্টের
  • আইনগত সহায়তা দিবসে আলোচনা সভা-শোভাযাত্রা
  • আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন