গাজায় গণহত্যা: প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাব
Published: 7th, April 2025 GMT
ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফোর্ডহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি অফার প্রত্যাখ্যান করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী জাকির হোসেন।
তিনি ইবির ইনফরমেশন অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের শিক্ষার্থী।
সোমবার (৭ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি।
আরো পড়ুন:
গাজায় হামলা: বিশ্বব্যাপী ধর্মঘটে সাড়া ইবি শিক্ষার্থীদের
নিরাপত্তা শঙ্কায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
তিনি জানান, ফোর্ডহ্যাম ইউনিভার্সিটির গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস থেকে সাইবার সিকিউরিটি প্রোগ্রামে এমএস-এ ভর্তির অফার পেয়েছিলেন। তবে ইসরায়েল ও তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “সম্ভবত আমার একাডেমিক যাত্রার সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্তগুলোর একটি নিয়েছি। আমি সম্মানিত বোধ করেছি ফোর্ডহ্যাম ইউনিভার্সিটির সাইবার সিকিউরিটি প্রোগ্রামে এমএস এর জন্য ভর্তি অফার পেয়ে। কিন্তু গভীর চিন্তাভাবনার পর এবং গাজায় চলমান মানবিক সংকটের প্রেক্ষাপটে, আমি সেই অফারটি বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করেছি ফিলিস্তিনের মানুষের প্রতি সংহতি প্রকাশের জন্য।”
তিনি আরো লেখেন, “আমি বিশ্বাস করি, এমন সময়ে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তগুলো বিবেক ও ন্যায়ের শক্তিশালী বার্তা বহন করতে পারে। আমার হৃদয় গাজার সঙ্গে।”
সাইবার সিকিউরিটির ক্ষেত্রে জাকিরের একাধিক অর্জন রয়েছে। তিনি একটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সাইবার সিকিউরিটি প্রতিযোগিতায় পঞ্চম স্থান অর্জন করেন। এছাড়া তিনি এবং তার দল ইন্টার-ইউনিভার্সিটি সাইবার ড্রিল ২০২২-এ দ্বিতীয় রানার্স আপ হন।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
সুদানের এল-ফাশের শহর ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চলছে। কৃত্রিম ভূ–উপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন দাবি করেছেন। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সসের (আরএসএফ) লড়াই চলছে। গত রোববার তারা এল-ফাশের দখল করে। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় বছরের দীর্ঘ অবরোধের পর পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটিটিও ছিনিয়ে নেয় তারা।
শহরটি পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।
এল-ফাশের থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী তাওইলা শহরে জীবিত বেঁচে ফেরা কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে এএফপির সাংবাদিক কথা বলেছেন। সেখানে গণহত্যা হয়েছে জানিয়ে তাঁরা বলেন, শহরটিতে মা-বাবার সামনেই শিশুদের গুলি করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পালানোর সময় সাধারণ মানুষকে মারধর করে তাঁদের মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়েছে।
পাঁচ সন্তানের মা হায়াত শহর থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের একজন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে থাকা তরুণদের আসার পথেই আধা সামরিক বাহিনী থামিয়ে দেয়। আমরা জানি না, তাদের কী হয়েছে।’
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, গত শুক্রবার পাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতে ‘বড় ধরনের কোনো জমায়েত চোখে পড়েনি।’ এ কারণে মনে করা হচ্ছে, সেখানকার জনগণের বড় একটি অংশ হয় ‘মারা গেছে, বন্দী হয়েছে কিংবা লুকিয়ে আছে।’ সেখানে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আল-ফাশের থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে। এখনো কয়েক হাজার মানুষ শহরটিতে আটকা পড়েছে। আরএসএফের সর্বশেষ হামলার আগে সেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করত।
শনিবার বাহরাইনে এক সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বলেন, সুদান একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। আরএসএফ নাগরিকদের সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।