ঈদুল ফিতরে কম সংখ্যক শো নিয়ে মুক্তি পায় এম রাহিম পরিচালিত আলোচিত সিনেমা ‘জংলি’। প্রথম দিন থেকেই সিনেমাটির সবগুলো শো হাউজফুল যাচ্ছিল। তবে দর্শকদের কাছে তুমুল চাহিদা থাকলেও স্টার সিনেপ্লেক্সের সবগুলো শাখায় শো কম থাকায় সিনেমাটি দেখতে এসে টিকিট না পেয়ে ফিরে যাওয়ার ঘটনা ঘটছিল প্রতিনিয়ত। জংলি টিম থেকে তাই বার বার শো বাড়ানোর দাবিও তোলা হয়। তবে অজ্ঞাত কারণে শো না বাড়ায় এটা নিয়ে  সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দর্শকদের  অনেকে লেখালেখিও করেন। মাঝে শো দুয়েকটি বাড়িয়েও আবার থমকে যায়। তবে সিনেমাটি মুক্তির এক সপ্তাহ পেরোতেই জানা গেল কেবল স্টার সিনেপ্লেক্সেই দ্বিগুন শো বেড়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিনেমাটির প্রযোজনা সংস্থা টাইগার মিডিয়ার কর্ণধার জাহিদ হাসান অভি। 

অভি জানান, 'আমাদের জংলি গল্পের সিনেমা। এই এক সপ্তাহে সেটা দর্শকদের মুখ থেকেই প্রমাণিত হয়েছে। দর্শক পরিবার নিয়ে হলে এসে জংলি দেখছেন। একজন দর্শকও জংলির কোনো খারাপ রিভিউ দেয়নি। এটাই আমাদের জন্য বড় প্রাপ্তির। এমন একটি গল্পের ছবির শো কমিয়ে রাখা হয়েছিল এতদিন; সিনেপ্লেক্সের সবগুলো শাখায় আমাদের মাত্র সাতটি শো দিয়েছিল। অথচ সবগুলো শোয়ের টিকিট অগ্রিম আগেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছিল। তারপরও শো বাড়ানো হচ্ছিল না। অথচ ঈদের ছবির সর্বাধিক ভাইভ ছিল জংলির। দর্শকদের ভালো লাগা আর চাহিদার কারণে এক সপ্তাহের মাথায় এসে কেবল স্টার সিনেপ্লেক্সেই জংলির শো দ্বিগুন করা হয়েছে।'

অভি আরও বলেন, 'আমি আগেও বলেছি জংলি লম্বা রেসের ঘোড়া। আমার বিশ্বাস দিনকে দিন এটির শো আরও বাড়বে। কারণ এটি পরিবারের সব সদস্যদের নিয়ে দেখার মত ছবি। আর যে ছবি পরিবারের দর্শক টানতে পারে, সে ছবিগুলোই লং রানে সাফল্য পাবে।' 

স্টার সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষে থেকে জানা যায়, ঈদের দিন জংলির কেবল সাতটি শো ছিল। দ্বিতীয় দিনে তা বেড়ে হয় ৯টি।  চতুর্থদিনে সেটা কমিয়ে শো দেওয়া হয়েছিল মাত্র ৬টি। অষ্টম দিনে এসে শো হয় ৮টি। নবম দিনে এসে সিনেমাটির শো দেওয়া হয়েছে ১৪টি । যা মুক্তির দিনের সংখ্যার দ্বিগুন। 

জংলি সিনেমা মূখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছন সিয়াম আহমেদ, বুবলী ও দীঘি। শিশু শিল্পী চরিত্রে অভিনয় করেছেন নৈঋতা। মুক্তির পর দিন থেকেই সিনেমাটির গল্প ও আর্টিস্টদের অভিনয় দারুণভাবে প্রংশিত হচ্ছে। 

সিয়াম আহমেদ বলেন, 'জংলি আমাদের সিনেমা। আমাদের দেশের গল্পের সিনেমা। কমার্শিয়াল অ্যাপ্রোচেই আমরা ফ্যামিলিফ্রেন্ডলি একটি সিনেমা বানিয়েছি। যেমন ধরুন, আমরা ছবিতে শিশুদের ব্যাড টাচ ও গুড টাচের বিষয়টিও তুলে এনেছি। সিনেমাটির জন্য পুরো টিম অক্লান্ত পরিশ্রম করে দারুণ একটি গল্প বলার চেষ্টা করেছে। মুক্তির পরদিন থেকে হলে গিয়ে দর্শকদের প্রতিক্রিয়া সরাসরি দেখার চেষ্টা করেছি। ছবিটি দেখার পর দর্শকরা যে রিঅ্যাকশন দিচ্ছে, তাতে মনে হয়েছে গল্পটি বলতে আমরা সফল। তবে মুক্তির পর দিন থেকে ছবিটি আরও শো পেলে আরও দারুণ কিছু ঘটতে পারতো। 

প্রথম দিন থেকে শো না পাওয়া দরুণ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সিনেমাটির ‘ক্যাপ্টেন অব দ্য শিপ’ এম রাহিম। তিনি বলেন, 'জংলি দারুণ একটি গল্পের সিনেমা, শুরু থেকেই বলে আসছি। মুক্তির দিন থেকে দর্শকদের চাহিদাও তুঙ্গে ছিল। অথচ আমাদের শো কম দেওয়া হলো, বার বার বলার পরও তারা শো বাড়াল না। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি ভালো সিনেমা হলে দর্শকদের কাছে সেটি গুরুত্ব পাবেই। শেষ অব্দি সেটাই ঘটছে। দর্শকরা জংলি দেখছেন। শুধু দেখছেন না পরিবারের অন্য সদস্যদেরও দেখার জন্য বলছেন। এটিই আমাদের বড় প্রাপ্তি।'

জংলি সিনেমার চারটি গানের সংগীত পরিচালনা করছেন প্রিন্স মাহমুদ।  সিনেমাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন দিলারা জামান, শহীদুজ্জামান সেলিম, রাশেদ মামুন অপু, সোহেল খান, এরফান মৃধা শিবলু প্রমুখ।

টাইগার মিডিয়া প্রযোজিত ‘জংলি’ সিনেমার গল্প লিখেছেন আজাদ খান, চিত্রনাট্য করেছেন যৌথভাবে মেহেদী হাসান মুন ও কলকাতার সুকৃতি সাহা।


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স য় ম আহম দ ঈদ র স ন ম পর ব র কর ছ ন আম দ র সবগ ল

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ