সিয়াম আহমেদ অভিনীত ‘জংলি’ সিনেমা ঈদুল ফিতরে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। মুক্তির পর থেকে দর্শক আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শো কম থাকায় অনেকে টিকিট না পেয়ে ফিরে গিয়েছেন বলে দাবি করছেন সিনেমাটির প্রযোজক অভি।
এবার দর্শক চাহিদার কারণে সিনেপ্লেক্সের বিভিন্ন শাখায় ‘জংলি’র শো বেড়েছে। প্রথম দিন থেকেই সিনেমাটির সবগুলো শো হাউজফুল যাচ্ছিল। তবু ‘বরবাদ’ ও ‘দাগি’র কারণে ‘জংলি’র শো-এর পরিমাণ কম ছিল। যে কারণে দর্শকরাও টিকিট না পেয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন। এমন অবস্থায় বিষয়টি বেশ আলোচনার সৃষ্টি করলে স্টার সিনেপ্লেক্সে ‘জংলি’র শো বাড়ানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিনেমাটির প্রযোজনা সংস্থা টাইগার মিডিয়ার কর্ণধার জাহিদ হাসান অভি।
অভি বলেন, “আমাদের ‘জংলি’ গল্পের সিনেমা। এই এক সপ্তাহে সেটা দর্শকদের মুখ থেকেই প্রমাণিত হয়েছে। দর্শক পরিবার নিয়ে হলে এসে ‘জংলি’ দেখছেন। একজন দর্শকও ‘জংলি’র কোনো খারাপ রিভিউ দেয়নি। এটাই আমাদের জন্য বড় প্রাপ্তি। এমন একটি গল্পের সিনেমার শো কমিয়ে রাখা হয়েছিল এতদিন; সিনেপ্লেক্সের সবগুলো শাখায় আমাদের মাত্র সাতটি শো দিয়েছিল। অথচ সবগুলো শোয়ের টিকিট অগ্রিম আগেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছিল। তারপরও শো বাড়ানো হচ্ছিল না। অথচ ঈদের সিনেমার সর্বাধিক ভাইভ ছিল ‘জংলি’র। দর্শকদের ভালোলাগা আর চাহিদার কারণে এক সপ্তাহের মাথায় কেবল স্টার সিনেপ্লেক্সেই জংলির শো দ্বিগুণ করা হয়েছে।”
‘জংলি’ সিনেমাকে লং রেসের ঘোড়া দাবি করে অভি বলেন, “আমি আগেও বলেছি ‘জংলি’ লম্বা রেসের ঘোড়া। আমার বিশ্বাস, দিনকে দিন এটির শো আরো বাড়বে। কারণ এটি পরিবারের সব সদস্যদের নিয়ে দেখার মতো সিনেমা। আর যে সিনেমা পরিবারের দর্শক টানতে পারে, সে সিনেমাগুলোই লং রানে সাফল্য পায়।”
স্টার সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষে থেকে জানা যায়, ঈদের দিন জংলির কেবল সাতটি শো ছিল। দ্বিতীয় দিনে তা বেড়ে হয় ৯টি। চতুর্থ দিনে সেটা কমিয়ে শো দেওয়া হয় মাত্র ৬টি। অষ্টম দিনে শো হয় ৮টি। নবম দিনে এসে সিনেমাটির শো দেওয়া হয়েছে ১৪টি; যা মুক্তির দিনের সংখ্যার দ্বিগুণ।
‘জংলি’ সিনেমার মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছন সিয়াম আহমেদ, বুবলী ও দীঘি। শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছেন নৈঋতা। মুক্তির পরের দিন থেকেই সিনেমাটির গল্প ও আর্টিস্টদের অভিনয় দারুণভাবে প্রশংসিত হচ্ছে।
‘জংলি’ সিনেমার চারটি গানের সংগীত পরিচালনা করেছেন প্রিন্স মাহমুদ। সিনেমাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন দিলারা জামান, শহীদুজ্জামান সেলিম, রাশেদ মামুন অপু, সোহেল খান, এরফান মৃধা শিবলু প্রমুখ।
টাইগার মিডিয়া প্রযোজিত ‘জংলি’ সিনেমার গল্প লিখেছেন আজাদ খান, চিত্রনাট্য করেছেন যৌথভাবে মেহেদী হাসান মুন ও কলকাতার সুকৃতি সাহা।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মানবাধিকারের প্রতিশ্রুতি দিল র্যাব, চায় সাইবার ইউনিট
অপরাধের ধরন বদলে যাচ্ছে। অভিনব কৌশলে সক্রিয় সাইবার অপরাধীরা। প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলা করা নতুন চ্যালেঞ্জ। এ জন্য স্বতন্ত্র সাইবার ইউনিট চেয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
পুলিশ সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন গতকাল বুধবার কর্মপরিকল্পনার সারসংক্ষেপ তুলে ধরে বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট। সেখানে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), র্যাবসহ একাধিক ইউনিট একুশ শতকের জটিল অপরাধ ও তা নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তিগত প্রস্তুতির বিষয়টি সামনে আনে। গতকাল পুলিশের যে ইউনিটগুলো পরিকল্পনা তুলে ধরেছে, তা হলো হাইওয়ে পুলিশ, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), নৌ পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), শিল্প পুলিশ, র্যাব, অ্যান্টিটেররিজম ইউনিট, রেলওয়ে পুলিশ ও সিআইডি।
কীভাবে প্রত্যন্ত এলাকার ভুক্তভোগী র্যাবের সহযোগিতা পেতে পারেন, সে বিষয়টি উপস্থাপন করেন বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) এ কে এম শহিদুর রহমান। তিনি দ্রুত গুজব প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থার ওপর জোর দেন। র্যাবের জন্য আলাদা একটি সাইবার ইউনিটের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেন। র্যাব জনবান্ধব হওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে র্যাবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে ডিজি বলেন, ‘কার্যক্রমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও মানবাধিকার বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ র্যাব। অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে তদন্ত সেলকে শক্তিশালী করা হয়েছে। একটি মানবাধিকার সেলও গঠন করা হয়েছে।’
রুদ্ধদ্বার বৈঠকে উপস্থিত সূত্রের মতে, র্যাব ডিজির উপস্থাপনায় মূলত বাহিনীর অর্জনগুলো তুলে ধরা হয়।
সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিআইডি ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়। সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি (ভারপ্রাপ্ত) গাজী জসীম অনুষ্ঠানে জানান, জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী মামলার অনুসন্ধানে সিআইডি বিশেষ টিম গঠন করেছে। সাবেক মন্ত্রী, প্রভাবশালীদের সন্দেহজনক সম্পদের উৎস ও প্রকৃতি নিয়ে নিবিড়ভাবে চলছে তদন্ত। এস আলম, বেক্সিমকো, বসুন্ধরা, নাবিল, ইউনিক, সিকদার গ্রুপসহ কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা ও অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। এ সময় প্রায় ৫ হাজার ৮০০ শতাংশ জমি ও হাজার কোটি টাকা মূল্যের সম্পদ শনাক্ত করা হয়েছে। কক্সবাজারের টেকনাফের একটি মামলায় ১০ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করা হয়েছে।
সিআইডির উপস্থাপনায় আরও বলা হয়, ফরেনসিক শাখা দিন দিন অপরাধ বিশ্লেষণের নির্ভরযোগ্য কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। জনবল, সরঞ্জাম এবং অর্থের সীমাবদ্ধতার পাশাপাশি সিআইডিতে আছে কাঠামোগত ও প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ। কোনো জেলা ইউনিটে একটিও অপারেশনাল যানবাহন নেই। এ ছাড়া অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে অনিয়মিত বদলি আতঙ্ক রয়েছে। সাইবার পুলিশ সেন্টারে রয়েছে সরঞ্জামের অভাব। ফরেনসিক ল্যাবে সফটওয়্যারের জন্য বাজেট-স্বল্পতার কথা তুলে ধরেন তারা।
হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে পণ্য ও যাত্রী পরিবহনে নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেওয়া হয়। মহাসড়কে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই প্রতিরোধে চলমান কার্যক্রম তুলে ধরা হয়েছে। বর্তমানে মহাসড়কের সিসিটিভি থেকে হাইওয়ে পুলিশ ডিজিটাল অটো ফাইন সিস্টেম, ট্রাফিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, ক্লোন নাম্বারপ্লেট শনাক্ত, হাইস্পিড ডিটেকশন করে থাকে।
এর আগে মঙ্গলবার পুলিশ সপ্তাহের প্রথম দিন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পক্ষ থেকে তাদের কর্মকাণ্ড ও পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়। সেখানে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৩(২) ধারায় তালিকাভুক্ত ব্যক্তিকে ডিটেনশনে (নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিনা বিচারে আটক রাখা) নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং পরিস্থিতির অবনতি যেন না ঘটে, সে জন্য তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের ডিটেনশনে নেওয়া উচিত। সরকারের অনুমতি পেলে এসবির পক্ষ থেকে তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের বিস্তারিত জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হবে। ডিটেনশনে নেওয়ার জন্য যাদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে, তাদের কেউ কেউ পেশাদার অপরাধী।