লক্ষ্মীপুরে ২ পক্ষের সংঘর্ষে নিহতের জেরে ১৫ বাড়িতে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
Published: 8th, April 2025 GMT
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে বিএনপি কর্মী সাইজ উদ্দিন দেওয়ান (৪০) নিহতের ঘটনার জেরে অন্তত ১৫টি বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকালে উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের বাবুরহাট এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। এসময় বাড়ির মালামাল লুট করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
রায়পুর উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব জিএম শামীমের অনুসারীরা হামলার সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।
আরো পড়ুন:
কক্সবাজারে রেস্টুরেন্টে হামলার ঘটনায় মামলা, আসামি ৩০০
খুলনায় বাটা ও কেএফসি’র শো রুমে হামলা-ভাঙচুর
নিহত বিএনপিকর্মী সাইজ উদ্দিন উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের চরঘাষিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি তিন মাস আগে স্পেন থেকে দেশে আসেন। সাইজ উদ্দিন জিএম শামীম গাজীর অনুসারী ছিলেন।
এলাকাবাসী জানান, আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রুহুল আমিন খান, আব্দুল গণি খান, কাশেম খান, এমদাদুল্লাহ গাজী, আরিফ ও তারেক মুহুরীসহ কয়েকজনের বাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। তারা উপজেলা বিএনপির সদস্য ফারুক কবিরাজের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপির দলীয় সূত্র জানান, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উত্তর চরবংশী ইউনিয়নে উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব জিএম শামীম গাজী ও উপজেলা বিএনপির সদস্য ফারুক কবিরাজের লোকজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এর জেরে দুই দফায় শামীম ও ফারুকের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ কারণে ওই ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, কৃষক দলসহ সব সহযোগী সংগঠনের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।
গতকাল সোমবার বেঁড়ি ও বাবুরহাট এলাকায় কৃষক দল নেতা শামীম গাজী এবং ফারুক কবিরাজের অনুসারী হিসেবে পরিচতি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক ফারুক গাজীর লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে একজন নিহত ও অন্তত ১৫ জন আহত হন। এরই জেরে আজ মঙ্গলবার দুপুরে ফের হামলা চালিয়ে শামীম গাজীর অনুসারীরা ফারুক কবিরাজের লোকজনের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে এলাকাবাসী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
দুই পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষ, হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
বাড়ি ভাঙচুর হওয়া রুহুল আমিনের ভাই আলা উদ্দিন মাস্টার বলেন, “বাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে শামীমের লোকজন। তারা মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। বর্তমানে পরিবার নিয়ে খোলা আকাশের নিচে আছি। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”
রায়পুর থানার ওসি নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, “সংঘর্ষে এক ব্যক্তি নিহত এবং ১৫ জন আহত হন। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। কেউ থানায় কোনো মামলাও করেননি। মামলা করলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনাস্থলে এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে। কয়েকটি বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ গিয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।”
ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ আগ ন অভ য গ জ র অন স র র ল কজন র সদস য য গ কর স ঘর ষ ব এনপ র ঘটন উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।