৬ বলে ৬ ছক্কা থেকে ৯ ছক্কায় রেকর্ড সেঞ্চুরি
Published: 9th, April 2025 GMT
সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন ছিল না। কী পারেন সেটি তো দিল্লি প্রিমিয়ার লিগ, মুশতাক আলী ট্রফিতেই দেখিয়েছেন। কাল দেখা গেল আইপিএলেও। চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে মাত্র ৩৯ বলে সেঞ্চুরি করেছেন পাঞ্জাবের প্রিয়াংশ আর্য, যা বলের হিসেবে আইপিএল চতুর্থ দ্রুততম। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক না হওয়া ক্রিকেটারদের মধ্যে তাঁর সেঞ্চুরিই এখন আইপিএলে দ্রুততম।
আর্যর উত্থানটা হঠাৎ করেই। এখন পর্যন্ত কোনো প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেননি। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ম্যাচ খেলেছেন ৭টি। এই ৭ ম্যাচে সব মিলিয়ে রান করেছেন আবার ৭৭।
বাঁহাতি এই ওপেনার চোখে পড়েন গত বছরের আগস্টে দিল্লি প্রিমিয়ার লিগের পারফরম্যান্স দিয়ে। সেই টুর্নামেন্টের একটি ম্যাচে সাউথ দিল্লির হয়ে নর্থ দিল্লির বিপক্ষে বাঁহাতি স্পিনার মনন ভরদ্বাজের বলে ৬ বলে ৬টি ছক্কা মারেন।
টুর্নামেন্টে ১০ ইনিংস সর্বোচ্চ ৬০৮ রান করেন এই বাঁহাতি ওপেনার। স্ট্রাইকরেট ছিল ১৯৮.
এরপর মুশতাক আলী ট্রফি। দিল্লির হয়ে এই টুর্নামেন্টে নিলামের ঠিক আগের দিন ৪৩ বলে ১০২ রান করেন আর্য। এই ম্যাচে তাঁর প্রতিপক্ষ দলে ছিলেন ভুবনেশ্বর কুমার ও পীযূষ চাওলার মতো বোলার।
এ কারণেই মাত্র ৩০ লাখ ভিত্তিমূল্যের এই ক্রিকেটারের নিলামে দাম ওঠে ৩ কোটি ৮০ লাখ রুপি, যা এবারের আইপিএল অ্যানক্যাপড ক্রিকেটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ। দিল্লি ক্যাপিটালস, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর সঙ্গে লড়াই করে তাঁকে দলে নেয় পাঞ্জাব কিংস। সেই লড়াইয়ে জেতার সুফলই পাঞ্জাব পেল গতকাল।
আইপিএলে ঝোড়ো ইনিংস নতুন কিছু নয়। রান উৎসবের টুর্নামেন্টে হয়তো এটিই স্বাভাবিক। তবে এরপরও আর্যর ইনিংসটির গুরুত্ব আলাদা। তাঁর দল পাঞ্জাব যে ৮৩ রান তুলতেই হারিয়েছিল ৫ উইকেট। সেই পাঁচ ব্যাটসম্যানের কেউই দুই অঙ্কও ছুঁতে পারেননি।
আবার প্রতিপক্ষ দলে উইকেটের পেছনে ছিলেন এমএস ধোনি। বল হাতে ছিলেন মাতিশা পাতিরানা, নুর আহমেদ, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজারা। এমন বোলিং আক্রমণের বিপক্ষেই নিজের মতো করে ব্যাটিং করে গেছেন আর্য। ইনিংসের ১৩তম ওভারে পাতিরানার বলে মেরেছেন টানা ৩ ছক্কা ও একটি চার। যে চার তাঁকে নিয়ে যায় তিন অঙ্কের ঘরে!
আর্যর টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত ম্যাচ খেলেছেন ৪টি। কাল সেঞ্চুরির আগে অনেকটা নিশ্চুপই ছিলেন। আইপিএল অভিষেকে ৪৭ রান করার পর পরের দুই ম্যাচে আউট হন ৮ ও ০ রানে। ৩ ম্যাচে ছক্কা মেরেছিলেন মাত্র ২টি। সেটাই কাল পুষিয়ে দিয়েছেন ৯টি ছক্কা মেরে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ন কর
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।