নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় দুই স্কুলছাত্রী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তাদের পরিবার। ভুক্তভোগী দুই ছাত্রীর বাবা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত আটজন এলাকায় প্রভাবশালী এবং তাঁদের পূর্বপরিচিত। তাঁদের মামলার করার মতো সামর্থ্য নেই। তাই থানায় না গিয়ে তাঁরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের কাছে বিচার চেয়েছেন।

দুই ছাত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই দুই স্কুলছাত্রী গত সোমবার বিকেলে দুই তরুণের সঙ্গে নদীতে নৌকায় বেড়াতে গিয়েছিল। সন্ধ্যায় ওই দুই তরুণ নৌকাটি তীরে ভিড়িয়ে আনেন। এ সময় কৌশলে তাঁরা দুই ছাত্রীকে একটি বিদ্যালয়ের পেছনে নির্জন স্থানে নিয়ে যান। পরে তাঁরা আরও ছয় বন্ধুকে ডেকে আনেন। এরপর তাঁরা ভয় দেখিয়ে দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। পরে সেখানেই দুজনকে রেখে চলে যান তাঁরা। ভুক্তভোগী দুই ছাত্রী যার যার বাড়িতে ফিরলে তাদের পরিস্থিতি দেখে কারণ জানতে চান তাদের পরিবারের সদস্যরা। একপর্যায়ে তারা ঘটনার বিস্তারিত জানায়।

ভুক্তভোগী এক ছাত্রীর বাবা বলেন, ‘ঘটনা জানার পরই চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে বিচার চেয়েছি। তিনি আমাদের বলেছেন, বিচার করে দেবেন। মেয়ের ভবিষ্যতের চিন্তা থেকে থানা-পুলিশের ঝামেলায় যেতে চাই না।’

ভুক্তভোগী আরেক ছাত্রীর বাবা বলেন, ‘রাতে বাড়িতে ফেরার পর ঘটনা শুনে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। তারা খুবই প্রভাবশালী। আমরা কি আর তাদের সঙ্গে পারব? আমরা গরিব মানুষ, দিন আনি দিন খাই, থানা-পুলিশ করার মতো সামর্থ্য আমার নেই। মেয়েকে ভবিষ্যতে বিয়ে দিতে হবে, এই চিন্তায় এলাকার চেয়ারম্যানের কাছেই বিচার দিয়েছি।’

এ বিষয়ে ওই ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘ভুক্তভোগী দুই ছাত্রীর পরিবার ঘটনাটি আমাকে জানিয়েছে। তারা থানা-পুলিশ চায় না, আমার কাছেই বিচার চায়। বিস্তারিত জানার জন্য আমি লোক পাঠিয়েছি। এলাকার গণ্যমান্যদের নিয়ে দ্রুতই বিচারে বসব।’ ধর্ষণের ঘটনা গ্রাম আদালতে মীমাংসাযোগ্য কি না, তা জানতে চাইলে চেয়ারম্যান কোনো মন্তব্য করেননি।

এ ব্যাপারে রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আদিল মাহমুদ বলেন, ধর্ষণের ঘটনা জানা নেই। কেউ থানায় এসে লিখিত অভিযোগও দেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র পর ব র র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেটে সহপাঠীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ

সিলেটের জকিগঞ্জে সহপাঠীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে দশম শ্রেণির এক ছাত্রী (১৬) দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রথমে দুই শিক্ষার্থীর ছবি ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন বলে এ ঘটনায় করা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

গত শনিবার সকালে উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের পরিত্যক্ত একটি ইটভাটায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরী আজ বুধবার সকালে জকিগঞ্জ থানায় মামলা করেছে।

মামলায় আসামি হিসেবে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের নিদনপুর গ্রামের ইমরান আহমদ (২৩), খিলগ্রামের তানজিদ আহমদ (১৮), মাইজগ্রামের শাকের আহমদ (২৪), একই গ্রামের শাকিল আহমদ (২১) ও মনতৈল গ্রামের মুমিন আহমদ (২০)।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী ২৬ জুলাই সকালে বারহাল ইউনিয়নের একটি পরিত্যক্ত ইটভাটায় এক সহপাঠীকে নিয়ে বেড়াতে যায়। সেখানে অভিযুক্ত পাঁচ তরুণ গোপনে তাঁদের ছবি ধারণ করেন। পরে ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করেন। পরে দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ সময় অভিযুক্ত তরুণেরা দুই শিক্ষার্থীকে বিষয়টি কাউকে জানানো হলে তাঁদের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে ভয় দেখান।

এদিকে ঘটনার তিন দিন পর বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে এলাকার একটি পক্ষ বিষয়টি সালিস বৈঠকে মীমাংসার চেষ্টা করছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। তবে গতকাল মঙ্গলবার রাতে জকিগঞ্জ থানা-পুলিশ ওই স্কুলছাত্রীকে তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ দিতে বিলম্ব ও বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় অভিযুক্ত তরুণেরা গা ঢাকা দিয়েছেন। এ ছাড়া জকিগঞ্জ ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় অভিযুক্ত তরুণেরা অবৈধ পথে সীমান্ত পাড়ি দিতে পারেন বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় লোকজন।

জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে খবর পেয়ে পুলিশ ভুক্তভোগীকে তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে। আজ সকালে মামলা হওয়ার পর থেকে আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিলেটে সহপাঠীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ