নোয়াখালীতে ১২ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ
Published: 9th, April 2025 GMT
নোয়াখালীতে ১২ বছরের এক মেয়েশিশুকে (১২) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গতকাল মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকে নোয়াখালীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম আহসানুল কবির (৪০)। তাঁর বাড়ি রংপুর। একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের বিপণনকর্মী হিসেবে কাজের সূত্রে তিনি বেগমগঞ্জের একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছেন।
শিশুটির বাবা প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ও তাঁর স্ত্রী দুজনই চাকরি করেন। গতকাল রাতে ঈদের ছুটি কাটিয়ে গ্রাম থেকে বেগমগঞ্জের বাসাটিতে ফেরেন। রাতে কর্মস্থলে যেতে হয় তাঁর স্ত্রীকে। তিনিও বাসার বাইরে ছিলেন। মেয়েশিশুটি খালার সঙ্গে ঘরে ছিল। তিনি বলেন, বাসায় ঘর ঝাড়ু দেওয়ার সময় মুখ চেপে ধরে শিশুটিকে নিজের ঘরে নিয়ে যান পাশের ভাড়াটিয়া। এরপর তার মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে ও দড়ি দিয়ে হাত বেঁধে ধর্ষণ করা হয়। চিৎকার শুনে খালা সেখানে ছুটে যান। স্থানীয় বাসিন্দারাও এগিয়ে এসে শিশুটিকে উদ্ধার করেন।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রাজীব আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, শিশুটির শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তাঁর স্বাস্থ্যের কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন। সেগুলো করা হচ্ছে।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লিটন দেওয়ান আজ বুধবার দুপুর সোয়া ১২টায় প্রথম আলোকে বলেন, শিশুটির পরিবার থানায় অবস্থান করছে। তাদের এজাহার পেলে ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে। অভিযোগের আলোকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্ত ব্যক্তি পিটুনিতে আহত হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব গমগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
অপহরণে বাঁধা দেওয়ায় যুবককে গুলি করে হত্যা, আটক ৩
অপহরণে বাঁধা দেওয়ায় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে মো. শাকিল (৩১) নামের এক যুবককে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নিহতের ছোটভাই শুভকেও (২৮) গুলি করলে লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। পরে তাকে পিস্তলের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করে আহত করে। পুলিশ তাৎক্ষণিক হত্যাকাণ্ডের কোনো কারণ জানাতে পারেনি।
সোমবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের গঙ্গাবর বাজারের ইসলামিয়া মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শাকিল একই গ্রামের মো. সোলাইমান খোকনের ছেলে এবং পেশায় একজন থাই গ্লাস মিস্ত্রি ছিলেন। ঈদুল আযহার আগে শাকিলের সৌদি আরব যাওয়ার কথা ছিল।
স্থানীয়রা জানায়, রাত ৮টার দিকে শাকিলসহ কয়েকজন ছয়ানীর গঙ্গাবর বাজারের ইসলামিয়া মার্কেটের একটি দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। ওই সময় এলাকায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে নয়জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এসে লাবিব নামে এক যুবককে জোরপূর্বক তুলে নিতে চেষ্টা করে। তখন শাকিলসহ আরো কয়েকজন তাদের বাঁধা দিলে সন্ত্রাসীরা শাকিলকে গুলি করে। পিস্তলের গুলি শাকিলের বুকে ও মাথায় বিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
এ সময় তার ছোটভাই শুভ বড়ভাই শাকিলকে বাঁচাতে গেলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীর দল কিন্তু গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে তাকে পিস্তলের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করে আহত করে। গুলি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করে তিন জনকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে আটক করে রাখে। তবে তাৎক্ষণিক আহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
তাৎক্ষণিক এলাকার লোকজন দুই ভাইকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক শাকিলকে মৃত ঘোষণা করে। নিহতের ছোট ভাই শুভ জানান, আটকসন্ত্রাসীদের সাথে স্থানীয় গঙ্গাবর গ্রামের যুবক লাবিবের সাথে পূর্ব বিরোধ ছিল। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে বেগমগঞ্জ উপজেলার আগলাইয়ার পুর ইউনিয়নের নয়জন সন্ত্রাসী সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে এসে লাবিবকে গঙ্গাবর বাজারে এসে জোরপূর্বক অপহরণ করে নিতে চেষ্টা করে। এসময় বাজারের লোকজনের সাথে শাকিল ও লাবিবকে রক্ষা করতে এগিয়ে যায়। ওই সময় সন্ত্রাসীরা শাকিলকে লক্ষ্য করে পিস্তল দিয়ে গুলি ছোড়ে। গুলি বুকে ও মাথায় বিদ্ধ হলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ সময় তিনি তার ভাইকে বাঁচাতে গেলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে অপহরণকারীরা। পরে স্থানীয় লোকজন তার ভাই ও শাকিলকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
নিহত শাকিল বিবাহিত ছিলেন। তার ৮মাস বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে সে ছিল দ্বিতীয়।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের রেজিস্ট্রার বই সূত্রে জানা যায় রাত ৮ টা ৩৫ মিনিটের দিকে শাকিলকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। তার বুকে ও মাথায় গুলির চিহ্ন রয়েছে।
ঘটনাস্থলে অবস্থানরতম বেগমগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবীবুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, স্খানীয় এলাকাবাসী অস্ত্রধারী তিনজনকে গণধোলাই দিয়ে আটক করে রেখেছে। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। আমরা তাদের উদ্ধারে চেষ্টা করছি।