ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রে নৈশ ক্লাবের ছাদ ধসের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১২৪
Published: 10th, April 2025 GMT
ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের রাজধানী সান্তো দোমিঙ্গোতে নৈশ ক্লাবের ছাদ ধসে পড়ার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১২৪ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ১৫০ জনের বেশি মানুষকে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা গতকাল বুধবার হতাহতের এ সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে প্রাদেশিক গভর্নর ও মেজর লিগ বেসবলের সাবেক খেলোয়াড় অক্তাভিও দোতেলও রয়েছেন। ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধারের পর হাসপাতালে নেওয়ার পথে ৫১ বছর বয়সী দোতেল মারা যান।
নৈশ ক্লাবটির নাম জেট সেট। গত সোমবার দিবাগত রাতে সেখানে জনপ্রিয় মেরেঙ্গু গায়ক রুবি পেরেজের কনসার্ট চলাকালে ছাদ ধসে পড়ে। ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়াদের মধ্যে তিনিও আছেন বলে জানা গেছে।
ঘটনার সময় কয়েক শ মানুষ নৈশ ক্লাবের ভেতরে ছিলেন। ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিতদের উদ্ধারের চেষ্টায় প্রায় ৪০০ জন উদ্ধারকারী কাজ করছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টারের (সিওই) পরিচালক হুয়ান ম্যানুয়েল মেন্ডিজ বলেছেন, ধসে পড়া ছাদের নিচে চাপা পড়া অনেকেই এখনো বেঁচে আছেন বলে আশা তাঁর।
জেট সেট সান্তো দোমিঙ্গো এলাকার একটি জনপ্রিয় নৈশ ক্লাব। সেখানে নিয়মিতই সোমবার সন্ধ্যায় ডান্স মিউজিক কনসার্টের আয়োজন করা হয়। ছাদ ধসে পড়ার সময় রাজনীতিবিদ, ক্রীড়াবিদ ও অন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রেসিডেন্ট লুইস আবিনাদের বলেছেন, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে মন্টে ক্রিস্টি প্রদেশের গভর্নর নেলসি ক্রুজও আছেন। তিনি সাবেক বেসবল খেলোয়াড় নেলসন ক্রুজের বোন।
ক্লাবের ভেতর ধারণ করা ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, রুবি পেরেজ গান গাওয়ার সময় মঞ্চের সামনে লোকজন বসে আছেন। কেউ কেউ আবার পেছনে সংগীতের তালে নাচছিলেন।
আরও পড়ুনডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রে নৈশ ক্লাবের ছাদ ধসের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭৯ ১৬ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ দ ধস
এছাড়াও পড়ুন:
শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবে প্রতিফলিত হোক
রাজধানী শহরসহ দেশের বড় শহরগুলোয় শব্দদূষণের অসহনীয় মাত্রার বিষয়টি কারও অজানা নয়। এটি এখন শুধু শব্দদূষণ নয়, শব্দসন্ত্রাস বলেও অভিহিত হচ্ছে। অতীতে ও বর্তমানে সরকারগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কার্যকর হচ্ছে না। অতীতের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ।
শহরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নীরব এলাকা ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ঘোষণা বাস্তবে কার্যকর হবে, নাকি এটিও অতীতের মতো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে? এর আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু তার ফল তেমন একটা ভালো পাওয়া
যায়নি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘোষণার পর কিছু এলাকায় শব্দ কিছুটা কমলেও সার্বিকভাবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, শুধু ঘোষণা যথেষ্ট নয়, বরং এর কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।
শব্দদূষণের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলতেই হয়। যার কারণে সাউন্ডবক্স বা মাইক বাজানোর বিষয়গুলো তুলনামূলকভাবে কমে এসেছে। তবে গাড়ির হর্ন এতটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা অকল্পনীয়। এটিই এখন রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর শব্দদূষণের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অতিরিক্ত শব্দ হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটিতে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, মানুষ অনিদ্রায় ভোগে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটায়। তাই শুধু অভিজাত এলাকা নয়, পুরো শহরে ধাপে ধাপে কীভাবে নীরব এলাকা ঘোষণা করা যায়, সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে।
তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে আইন আছে। তা যদি আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রয়োগ না করা হয়, এ ঘোষণা কখনোই সফল হবে না। কেবল প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে নীরব এলাকা–ঘোষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন মসজিদ, মন্দির এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখানে গণসচেতনতার কাজে যুক্ত করতে হবে।
গাড়ির হর্ন বাজানো সীমিত করতে পরিবহনের বিভিন্ন ধরনের সমিতি–সংগঠনগুলোর যুক্ততাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির চালকদের অভ্যাসগত পরিবর্তনের জন্য শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকটি নিয়মিতভাবে তাঁদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্নসহ উচ্চমাত্রার যেকোনো হর্ন উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।