হুট করেই আলোচনার কেন্দ্রে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেট। ইতিবাচক কোনো কারণে অবশ্য নয়। কাল মিরপুরে গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে শাইনপুকুরের ম্যাচে কিছু ঘটনা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। এবার তা নিয়ে তদন্ত করার কথা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় শাইনপুকুরের শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মিনহাজুল আবেদীন সাব্বিরের স্টাম্পিং। ব্যাটসম্যান মিনহাজুল আবেদীনকে এগিয়ে আসতে দেখে ওয়াইড করেছিলেন গুলশানের নাঈম ইসলাম। কিপারের কাছে বল যাওয়ার আগেই ব্যাটটা ক্রিজের ভেতর নেওয়ার যথেষ্ট সময় ছিল মিনহাজুলের কাছে।

প্রথমবারে স্টাম্প ভাঙতে পারেননি গুলশানের উইকেটরক্ষক আলিফ হাসান। এই সময়ের মধ্যেই ব্যাটটা তিনি দাগের ভেতরেও নিয়েছিলেন, কিন্তু পুরোটা সময়ই তা শূন্যে ভাসিয়ে রেখেছেন মিনহাজুল। অনেকটা সময় পেয়েও তাঁর ক্রিজে না যাওয়া নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।

এর আগে ৩৬তম ওভারে একটি আউটও প্রশ্ন তৈরি করে। নিহাদ উজ জামানের বল ক্রিজ ছেড়ে অনেকটা বেরিয়ে খেলতে গিয়ে টার্নে হার মানেন রহিম আহমেদ। অনেক বাইরের বলে তিনি কাছে যাওয়ার চেষ্টাও করেননি সেভাবে। ডিফেন্সের মতো ভঙ্গি করে পেছনে ফেরার চেষ্টাও না করে ফিরে যান সাজঘরে।

এসব ঘটনা নজরে এসেছে বিসিবিরও। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছে, ‘বিসিবি নতুন করে খেলার সততা ও নৈতিকতার মানদণ্ড, সবকিছুর ওপরে রাখার প্রতিশ্রুতির কথা জানাচ্ছে। কোনো ধরনের দুর্নীতি ও খেলার স্পিরিটকে ক্ষুণ্ন করে, এমন কোনো ঘটনার বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি আছে বিসিবির।’

দুটি ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক শাহরিয়ার নাফীস দুটি আউটের ভিডিও পোস্ট করে লেখেন, ‘ছি!’ শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মিনহাজুল বিস্ময়করভাবে আউট হলে ৫ রানের জয়ে সুপার লিগ নিশ্চিত হয় গুলশানের। ওই ভিডিও পোস্ট করে ক্রিকেটার শামসুর রহমান লেখেন, ‘সিরিয়াসলি শেইম।’

এসব ঘটনা তদন্ত ও পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে বিসিবি, ‘বিসিবির দুর্নীতিবিরোধী ইউনিট ও লিগের টেকনিক্যাল কমিটি একটি তদন্ত শুরু করেছে ম্যাচে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, তা দেখতে। সব ধরনের ক্রিকেটীয় কার্যক্রমে খেলায় সততা ও নিয়মানুবর্তিতা নিশ্চিত করতে বিসিবি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করে বিসিবি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

ডেঙ্গুতে মাসিক মৃত্যুর রেকর্ড ভাঙল আজ

চলতি বছর ডেঙ্গুতে মাসিক মৃত্যুর রেকর্ড ভেঙে গেল আজ বৃহস্পতিবার। এ বছর এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছিল জুলাই মাসে, ৪১ জন। আর আজ চলতি মাসের ১২ দিন বাকি থাকতেই এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৪৬ জনের। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল বুধবার সকাল আটটা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল আটটা পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৬ জন। এ সময় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬৪৭ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এখন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৬৭ জন। আর এ বছরে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৪০ হাজার ৪৬১ জন।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন হাসপাতালে দেশের সর্বোচ্চ রোগী ভর্তি হয়েছে। এ সংখ্যা ১২৮। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রোগী ভর্তি হয়েছে উত্তর সিটির হাসপাতালগুলোয়, সংখ্যা ১১৩। বরিশাল বিভাগে ১০৮ জন রোগী ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন এ সময়। আর এ বিভাগের জেলা বরগুনায় এ সময় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫২। দেশের কোনো একক জেলা হিসেবে রোগীর এ সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ।

চলতি সেপ্টেম্বর মাসের শুরু থেকেই ডেঙ্গুর সংক্রমণ আগের মাসগুলোর চেয়ে বাড়তে থাকে। এর সঙ্গে বাড়তে থাকে মৃত্যুও। চলতি মাসে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে যত আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে, তা এ সময়ে আগের কোনো মাসে হয়নি। এ বছর যত আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে, তা গত বছরের এ সময়ের চেয়ে বেশি।

সাধারণত বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। এ বছর ডেঙ্গুতে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যুর আশঙ্কা করেছিলেন জনস্বাস্থ্যবিদ ও কীটতত্ত্ববিদেরা। তবে সরকারের পক্ষ থেকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জোরদার কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তৌহিদ উদ্দিন আহমেদ আজ প্রথম আলোকে বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যত কোনো কার্যক্রম নেই। বিষয়টি একেবারে গা–সওয়া হয়ে গেছে। সরকারের কোনো ভাবনা নেই। মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যত ব্যর্থ সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো।

চলতি বছর ডেঙ্গুর সঙ্গে বেড়েছে চিকুনগুনিয়া। চিকিৎসকেরা বলছেন, জ্বর হলে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়া জরুরি। সেই সঙ্গে ডেঙ্গুর পরীক্ষা করাও দরকার।

এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে রোগীর সংখ্যা হয়েছে ১০ হাজার ৫২২। ঢাকার বাইরে এ সংখ্যা ২৯ হাজার ৯৩৯ জন।

তৌহিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ঢাকার বাইরে এবার যে ডেঙ্গু বাড়তে পারে, তা শুরু থেকেই ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু ঢাকার বাইরে মশা নিয়ন্ত্রণে কোনো ব্যবস্থাই নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ