বিদেশে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের তুলনায় জাপানে আয়ের সুযোগ বেশি। জাপানি ভাষা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিনা খরচে দেশটিতে যাওয়ার সুযোগ আছে। জাপানে ২০১৭ সাল থেকে কারিগরি শিক্ষানবিশ হিসেবে কর্মী যাচ্ছেন। নতুন করে বিনা খরচে আরও কর্মী পাঠাতে দেশটির বেসরকারি একটি কোম্পানির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছে সরকার।

আজ বৃহস্পতিবার প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমঝোতা স্মারক সই হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশি কর্মীরা বিনা মূল্যে জাপানি ভাষা ও কারিগরি বিষয়ে প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন। প্রশিক্ষিত কর্মীরা বিনা অভিবাসন ব্যয়ে জাপানে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন। জাপানে বেশি হারে কর্মী পাঠানোর সুযোগ তৈরি হবে।

কেয়ারগিভার, ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্যাকেজিং, প্লাস্টিক মোল্ডিং, রড বাইন্ডিং, স্ক্যাফোল্ডিং, কার পেইন্টিং, ওয়েল্ডিং ও অটোমোবাইল মেকানিক খাতে প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন কর্মীরা। চুক্তি শেষে জাপান থেকে ফিরে আসা কর্মীরা দেশীয় শিল্প খাতে তাঁদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা প্রয়োগ করতে পারবেন।

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, গত সাত বছরে ৬৯৫ জন টেকনিক্যাল ইন্টার্ন জাপানে গেছেন। নতুন এ সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে আরও বেশি কর্মীর জাপানে যাওয়ার সুযোগ হবে। নতুন এ সমঝোতা স্মারকের মধ্য দিয়ে একটা নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো।

সমঝোতা স্মারকে সই করেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া ও জাপানের বেসরকারি কোম্পানি ওনোডেরা ইউজার রান ইনকরপোরেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট তাকাশি সুগেনো।

বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানে এই সমঝোতা স্মারককে একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক আখ্যায়িত করে নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া বলেন, উন্নত দেশগুলোর চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ জনবল তৈরি ও নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে কাজ করছে।

এর আগে ২০১৭ সালে ইন্টারন্যাশনাল ম্যানপাওয়ার ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (আইএম) জাপানের সঙ্গে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের স্বাক্ষরিত একটি সমঝোতা স্মারকের আওতায় সরকারিভাবে বর্তমানে দক্ষ শ্রমিক পাঠানো হচ্ছে দেশটিতে। দেশের বিভিন্ন জেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে জাপানি ভাষার প্রশিক্ষণ দিচ্ছে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)।

আরও পড়ুন৮ মাস প্রশিক্ষণ নিয়ে জাপানে চাকরির সুযোগ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

চার মাস মেয়াদি জাপানি ভাষা শেখার এসব প্রশিক্ষণের পর পরীক্ষায় বসেন কর্মীরা। উত্তীর্ণ হলে আইএম জাপানের ব্যবস্থাপনায় আরও চার মাসের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরপর শিক্ষানবিশ হিসেবে তাঁদের জাপানে নিয়ে যাওয়া হয়। জাপানে বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭০০ টাকা পর্যন্ত বেতন পান কর্মীরা।

জাপানের গড় আয়ু ৮৪ বছর। এসব বয়স্ক মানুষের সেবার জন্য দক্ষ জনবল দরকার। নির্মাণশিল্প, প্রযুক্তি, নার্সিং, কৃষি ও হোটেল ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ট্যুরিজম খাতে কাজের সুযোগ আছে সেখানে। তবে বিদেশি শ্রমিক নেওয়ার ব্যাপারে জাপান বরাবরই রক্ষণশীল। জাপানি ভাষা শিক্ষা ছাড়া দেশটিতে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

আরও পড়ুনবিনা খরচায় জাপান যেতে যা লাগবে০৬ জানুয়ারি ২০২০.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ম র সরক র সমঝ ত

এছাড়াও পড়ুন:

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে রাজপুর প্রধান ডাকঘরের কার্যক্রম

ঝালকাঠির রাজপুর উপজেলার প্রধান ডাকঘরের ভবনটি ১৯৯০ সালে নির্মিত হলেও এরপর আর কোনো সংস্কার হয়নি। ভবনের ছাদের অবস্থা এতটাই খারপা যে, প্লাস্টার খসে পড়ছে এবং বৃষ্টির পানি ভেতরে ঢুকছে। ছাদের বিমের রডও বেরিয়ে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন কাজ করতে হচ্ছে ডাকঘরটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। 

ডাকঘরের পোস্টমাস্টার গোলাম মোস্তফা বলেন, “ছাদের প্লাস্টার খসে পড়ছে, ছাদ থেকে পানি পড়ছে, দ্বিতীয় তলার অবস্থা আরো ভয়াবহ। ভবনটিকে গণপূর্ত বিভাগ ‘ব্যবহারের অনুপোযোগী’ ঘোষণা করলেও এখনও ঝুঁকি নিয়েই কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে।” 

পোস্ট অফিস সূত্র জানায়, ভবনটির চারপাশে কোনো প্রাচীর না থাকায় এটি এখন মাদকসেবীদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে। ভবনের ভেতরে ও বাইরে শেওলা পড়েছে। পুরো ভবনটি বর্ষাকালে ভুতুড়ে পরিবেশ ধারণ করে। কম্পিউটার, স্ক্যানার, ফ্র্যাঙ্কিং মেশিনসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি পানিতে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা নিয়ে কাজ করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পোস্ট অফিসটিতে বর্তমানে মাত্র চারজন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। এর মধ্যে একজন পোস্টম্যান প্রেষণে অন্যত্র কর্মরত থাকায় কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। পর্যাপ্ত আসবাবপত্র না থাকায় এবং জনবল সংকটের কারণে সেবার মানে অবনতি ঘটেছে।

আরো পড়ুন:

চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, পাহাড় ধসের শঙ্কা

বিপৎসীমার ওপরে পটুয়াখালীর নদ-নদীর পানি, ৬ গ্রাম প্লাবিত

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ডাকঘরের এমন জরাজীর্ণ অবস্থা দেখে তারা অনেকেই ভেতরে প্রবেশ করতে ভয় পান। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় এটি ধ্বংসপ্রায় ভবনে পরিণত হয়েছে। ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে পোস্ট বক্সটিও। রাজাপুরের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলায় প্রধান ডাকঘরটির এমন অবস্থা মেনে নিতে পারছেন না তারা। জরুরি ভিত্তিতে ভবনটির সংস্কার ও জনবল নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে ঝালকাঠির পোস্ট অফিস পরিদর্শক আবুল ফয়েজ বলেন, “উপজেলার প্রধান ডাকঘরের দুরবস্থার বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। জনবল সংকট ও অবকাঠামোগত সমস্যার দ্রুত সমাধানের জন্য আমরা আবেদন করেছি।” 

বরিশাল অঞ্চলের ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল (ডিপিএমজি) মন্জুরুল আলম বলেন, “শূন্যপদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া এ বছরের মধ্যেই সম্পন্ন হবে। ভবনের উন্নয়ন প্রসঙ্গে শিগগিরি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/অলোক/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের শুনানি শেষ, আদেশ ৬ আগস্ট
  • ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে রাজপুর প্রধান ডাকঘরের কার্যক্রম