রাজধানীতে ৬৬ কিলোমিটার বেগে কালবৈশাখী
Published: 10th, April 2025 GMT
রাজধানীতে আজ বৃহস্পতিবার সারাদিন প্রচণ্ড গরম ছিল। বিকেল থেকে আকাশ ছিল মেঘলা। এর পর বিকেল ৫টা ৩৮ মিনিটের দিকে শুরু হয় কালবৈশাখী। ঘণ্টায় এর গতিবেগ ছিল ৬৬ কিলোমিটার। এ সময় বৃষ্টি হয় সামান্যই। আগামীকাল শুক্রবারও দেশের ১১টি অঞ্চলে বজ্রঝড় হতে পারে। বাতাসের গতিবেগ উঠে যেতে পারে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত।
বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছিল। এর প্রভাবে আজ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল আবহাওয়া অধিদপ্তর। লঘুচাপটি অবশ্য এখন দুর্বল হয়ে গেছে।
রাজধানীতে আজ যে ঝড়ের গতি ছিল, তা এ মাসে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবীর। তিনি বলেন, আকাশ বেশ কালো করে মেঘ জমেছিল। কিন্তু যথেষ্ট ঝোড়ো হাওয়া থাকলেও বৃষ্টি ততটা হয়নি।
আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর তপ্ত অবস্থা দেখে বিকেলে যে এমন ঝোড়ো হাওয়া আসবে, তা আন্দাজ করা কঠিন ছিল। বিকেল ৪টা পর্যন্ত গরম ছিল।
আজ রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৩৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। কিন্তু বিকেল ৫টা থেকে আবহাওয়া একদম বদলে যেতে শুরু করে। এর পর মেঘের গর্জনের সঙ্গে শুরু হয় ঝোড়ো হাওয়া।
এদিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে; ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মমিনুল ইসলাম বলেন, দিনে একটানা দীর্ঘ সময় বেশি তাপমাত্রা থাকলে এবং বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকলে বিকেলে কালবৈশাখীর জন্য অনুকূল আবহাওয়া তৈরি হয়। আজ এ কারণেই কালবৈশাখী আঘাত হানে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
লাখপুরের রংবাহারি রাম্বুটান
১৯ জুলাই সকাল ১০টা। নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মরজাল বাজারে গাড়ি থেকে নামলাম। ততক্ষণে ব্যাপারীদের পাইকারি কেনাকাটা শেষ। মালপত্র বেঁধেছেঁদে গাড়িতে তোলা হচ্ছে। কিন্তু ফুটপাতে তখনো ভিড়। খুচরা ক্রেতারা পছন্দের জিনিস কিনতে দরদাম করছেন। ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পড়লাম, দেখা যাক কী পাওয়া যায়।
কাঁঠালের দোকানে তেমন ভিড় নেই। লটকনের দোকান বেশি, বিক্রিও ভালো। আকার অনুযায়ী দাম। এখানে না এলে জানতামই না, এত বড় আকারের লটকন হতে পারে! এক গৃহস্থ টুকরিতে কলম্বো লেবু নিয়ে বসে আছেন। এই লেবু আকৃতি ও সুগন্ধের জন্য বিখ্যাত। আরেকটু এগিয়ে গিয়ে থামতেই হলো। কয়েকটি দোকানে সাজানো হলুদ আর লাল রঙের রাম্বুটান!
দেখতে ফুলের মতো আকর্ষণীয় রঙের এই ফল সবার নজর কাড়ছে। ক্রেতারা দাম জানতে চাইছেন। কেউ কেউ কিনছেনও। জানতে চাইলাম, এই রাম্বুটান কোথা থেকে এল? দোকানির উত্তর শুনে চোখ ছানাবড়া। নরসিংদীর কয়েকটি গ্রামেই নাকি ইদানীং চাষ হচ্ছে রাম্বুটান। দারুণ ব্যাপার। এ খবর জানা ছিল না।
কাছাকাছি দূরত্বে কোনো গ্রামে গেলে কি রাম্বুটানের বাগান দেখতে পাওয়া যাবে? এ প্রশ্নের উত্তর দিলেন স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তা মো. সুজন মিয়া। তিনি জানালেন,Ñকাছেই বেলাব উপজেলার লাখপুর গ্রামে চমৎকার একটি বাগান আছে।
আমরা দ্রুত বাগানের পথ ধরি। বাগানে যেতে যেতে মনে হলোÑ ঘন গাছপালার ছাউনির ভেতর দিয়ে ক্রমেই যেন হারিয়ে যাচ্ছি! এখানকার বেশির ভাগ গাছই লটকনের। বাগানগুলো এতই বড় যে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ভালোভাবে দেখা যায় না।
অল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছে গেলাম লাখপুর গ্রামে। উয়ারী ও বটেশ্বর–লাগোয়া এই গ্রামে রাম্বুটানের বাগানে গিয়ে চমকে উঠি। বেশ বড় বড় অনেক গাছ। গাছে গাছে দুই রঙের রাম্বুটান। চমৎকার দৃশ্য।
এ রংবাহারি ফল দেখার জন্য সারা দিন অনেক মানুষ ভিড় করেন সেখানে। কেউ কেউ দেখছেন, আবার কিনছেনও। একটু সময় নিয়ে বাগানটি ঘুরে দেখি। ছয়-সাত বছর বয়সী সব গাছই ফলভারে আনত। পাকা ফলগুলো দেখতে রঙের ঝরনাধারার মতো, বহুবর্ণিল। বাগান থেকে তরতাজা কিছু ফল কিনি। মন ভরে ছবি তুলি।
একসময় রাম্বুটান চিনতাম না। ২০০৫ সালে হংকংয়ে বেড়াতে গিয়ে বন্ধু মোস্তাফিজুর রহমান শাহিনের বাসায় প্রথম এ ফল খাই। পরে কুয়ালালামপুর শহরের আশপাশে রাম্বুটানের অনেক গাছ দেখেছি। দুই বছর পর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মপ্লাজম সেন্টারে গাছভর্তি রাম্বুটান দেখে চমৎকৃত হয়েছিলাম। বীজ থেকে তৈরি চারাগুলো সেখানে প্রথম লাগানো হয় ১৯৯৮ সালে। প্রায় সাত বছর পর গাছগুলোতে ফল আসতে শুরু করে। আকৃতি ও স্বাদের দিক থেকেও ফলগুলো সমমানের।
বাগানে সুদর্শন হলুদ রঙের রাম্বুটান