হাজায় গণহত‌্যার প্রতিবা‌দে সা‌বেক বি‌রোধীদ‌লীয় নেতা জিএম কা‌দেরের নেতৃ‌ত্বে রাজধানী‌তে বি‌ক্ষোভ মি‌ছিল ও সমাবেশ ক‌রে‌ছে জাতীয় পা‌র্টি।

ফিলিস্তিনী জনগণের প্রতি সমর্থন ও ইসরায়েলের বর্বর হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার বিকা‌লে কেন্দ্রীয় কার্যালয় কাকরাইল চত্বর থে‌কে মি‌ছিল‌টি বের করা হয়। মি‌ছি‌লটি প্রধান প্রধান সড়ক ঘু‌রে জাতীয় প্রেসক্লা‌বে গি‌য়ে শেষ হয়।

মি‌ছিলপূর্ব সমা‌বে‌শে জিএম কা‌দের ব‌লেন, “সরকারের উচিত ফিলিস্তিনীদের পাশে দাঁড়ানো। ফি‌লি‌স্তি‌নি‌দের রক্ষা কর‌তে হ‌বে।”

আরো পড়ুন:

আ.

লীগ নিষিদ্ধের প্রসঙ্গে যা বললেন জিএম কাদের

‘ক্লিন ইমেজের’ আড়ালে ‘কলঙ্ক’, দুদকের জালে জিএম কাদের

বিশ্ব নেতাদের সাথে সরকারকে এ বিষ‌য়ে ব‌্যবস্থা নেওয়ার দা‌বিও জানান তি‌নি।

হত্যাযজ্ঞের তীব্র প্রতিবাদ জানি‌য়ে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ব‌লেন, “ফিলিস্তিনের ভাই-বোনদের প্রতি আমাদের ভালোবাসা ও সমর্থন অব্যাহত থাকব। আমরা তাদের পাশে আছি, সব সময় তাদের পাশে থাকব। ফুটফুটে শিশুদের টার্গেট করে হত্যা করা হচ্ছে বিশ্ব বিবেক কী করে মেনে নিতে পারে? আমরা কি মানুষ? আমাদের মনুষত্ব কি শেষ হয়ে গেছে? ফিলিস্তিনীদের সব ন্যায্য দাবির প্রতি আমাদের সমর্থন থাকবে।”

“বিশ্ব নেতাদের সাথে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, ফিলিস্তিনীদের পাশে দাঁড়ান। অসহায় ফিলিস্তিনীদের রক্ষা করার ব্যবস্থা করুন। নিরিহ মানুষ যেনো পাশবিক নির্যাতনের শিকার না হয়।”

গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, “সরকারের উচিত ফিলিস্তিনীদের পাশে দাঁড়ানো। ফিলিস্তিনীদের স্বার্থে আমাদের কী করতে হবে সরকার তা ঠিক করে দিক। আমরা ফিলিস্তিনীদের স্বার্থের সব কর্মকাণ্ডে সক্রিয় থাকব।  আমরা ফিলিস্তিনীদের মুক্তি চাই। আমরা চাই, ফিলিস্তিনীরা যেনো মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকতে পারে।”

বর্তমান সরকারের সমা‌লোচনা ক‌রে জাপা চেয়ারম‌্যান ব‌লেন, “এ সরকার আমলে অনেক মানুষ নতুন করে বেকার হচ্ছে। সরকারের কিছু ঘনিষ্ঠ মানুষ বেকারদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে। তাদের দিয়ে বিভিন্ন মানুষকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ভয়-ভীতি দেখানোর কাজে বেকারদের ব্যবহার করা হচ্ছে। এ কারণেই, ফিলিস্তিনীদের সমর্থনে অনুষ্ঠিত মিছিল থেকে লুট-পাটের ঘটনা ঘটছে। ভাঙচুর ও আত্মসাতের ঘটনা ঘটিয়ে কিছু মানুষ তাদের ক্ষমতা প্রদর্শন করতে চাচ্ছে। এভাবে সাধারণ মানুষকে ভয় দেখাতে চাচ্ছে তারা। আমরা তাদের ভয়-ভীতি দেখানোকে পরোয়া করি না। যারা দুরে আগুন লাগিয়ে নিজেকে নিরাপদ ভাবছেন, দুদিন পরে সেই আগুন আপনার ঘরেও লাগতে পারে। সাধারণ মানুষের ওপর যে অত্যাচার চলছে তা অবশ্যই শেষ হবে।”

উপস্থিত ছিলেন পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, ইমরান হোসেন মিয়া, লিয়াকত হোসেন খোকা, মনিরুল ইসলাম মিলন, আরিফুর রহমান খান,  ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন তাপস, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা নুরুল আজহার শামীম, প্রফেসর ড. গোলাম মোস্তফা, অ্যাডভোকেট মমতাজ উদ্দিন, খলিলুর রহমান খলিল, ইঞ্জিনিয়ার মাইনুল রাব্বি চৌধুরী রুম্মন,  মাসরেকুল আজম রবি,  হাজী শাহজাহান, ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ  রাজু, সুলতান মোহাম্মদ সেলিম, আহাদ ইউ চৌধুরী শাহিন, আমির উদ্দিন ডালু, হুমায়ুন খান, আক্তার হোসেন দেওয়ান, এম এ সোবাহান, যুগ্ম মহাসচিব  শামসুল হক, মোহাম্মদ আমির হোসেন, আব্দুল হামিদ ভাসানী, শামীম আহমেদ রিজভী, এম এ হান্নান, জুবের আলম খান রবিন, খন্দকার দেলোয়ার জালালী, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য    নির্মল দাস, মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন হেলাল, এবিএম লিয়াকত হোসেন চাকলাদার, আবুল খায়ের, মিজানুর রহমান মিরু, আজাহার সরকার মাসুদুর রহমান মাসুম,  মাহমুদ আলম, জহিরুল ইসলাম মিন্টু, যুগ্ম সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য  জাকির হোসেন মৃধা, আবু সাদেক বাদল, মামুনুর রহিম সুমন, মোড়ল জিয়াউর রহমান, শরিফুল ইসলাম চৌধুরী অর্ণব, সমরেশ মণ্ডল মানিক, দ্বীন ইসলাম শেখ, শেখ মো. শান্ত, ঈসারুহুল্লাহ আসিফ, মোহাম্মদ ইউসুফ, ইঞ্জিনিয়ার জুবায়ের, শেরপুর জেলার আহ্বায়ক মাহমুদুল হক মনি, ইঞ্জিনিয়ার জুবায়ের, শ্রমিক পার্টির সভাপতি  মোফতার উদ্দিন জসিম, কৃষক পার্টির সদস্য সচিব এম এ কুদ্দুস মানিক, প্রিন্স, মোটর শ্রমিক পার্টির আহ্বায়ক মেহেদী হাসান শিপন, সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, হকার্স পার্টির আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন আনু, যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন, ছাত্র সমাজের আহ্বায়ক মারুফ হাসান তালুকদার প্রিন্স যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল রেজা প্রমুখ।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম হ ম মদ র রহম ন সরক র র ল ইসল ম আম দ র জ এম ক সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

যে ‘ধর্মীয় অনুপ্রেরণায়’ ইরানে এই হামলা চালাল ইসরায়েল

ইসরায়েল আবারও ইরানে বড় রকমের হামলা করেছে। হামলায় ইরানের বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণুবিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। হামলা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি ও আবাসিক এলাকায়। একদিন পর পাল্টা হামলা চালায় ইরান। এতে কয়েকজন ইসরায়েলি নিহত হয়। ধ্বংস হয় তেলআবিবের কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।

ইসরায়েল তার ইরানবিরোধী এ হামলার নাম দিয়েছে ‘রাইজিং লায়ন’। এ নাম রাখা হয়েছে হিব্রু বাইবেলের একটি চরণ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে। যে নাম ইসরায়েলের একটি শক্তিশালী ও বিজয়দীপ্ত ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি দেয়।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার ইহুদিদের সবচেয়ে পবিত্র উপাসনাস্থল জেরুজালেমের ওয়েস্টার্ন ওয়ালের একটি ফাটলে হাতে লেখা একটি চিরকুট রেখে আসার সময় ছবি তোলেন। এটি ছিল মূলত ইরানে ইসরায়েলের হামলার ইঙ্গিত।

শুক্রবার তার অফিস থেকে সেই চিরকুটে একটি ছবি প্রকাশ করা হয়। সেখানে লেখা ছিল: ‘জনগণ সিংহের মতো উঠে দাঁড়াবে।’

এই বাক্যাংশটি হিব্রু বাইবেলের গ্রন্থ বুক অব নাম্বারস (গণনা পুস্তক) ২৩:২৪ পদ থেকে এসেছে। যেখানে বলা হয়েছে: ‘দেখো, এই জাতি একটি মহান সিংহের মতো উঠে দাঁড়াবে এবং একটি তরুণ সিংহের মতো নিজেকে উদ্দীপ্ত করবে; সে শিকার না খাওয়া পর্যন্ত বিশ্রাম নেবে না এবং নিহতদের রক্ত না পান করা পর্যন্ত থামবে না।’

এই চরণটি হিব্রু বাইবেলের অ-ইসরায়েলীয় একজন নবী ও ভবিষ্যদ্বক্তা বালামের প্রথম ভবিষ্যদ্বাণীর অংশ। সেখানে তিনি ইসরায়েলের শক্তি ও ক্ষমতার কথা বলেন। তাদের এমন এক সিংহের সঙ্গে তুলনা করেন যে নিজের ক্ষুধা না মেটানো পর্যন্ত বিশ্রামে যায় না।

অনেকেই মনে করেন, এই অভিযানের নাম ইরানের শেষ শাহ-এর পুত্রের প্রতি ইঙ্গিত হতে পারে। কারণ পারস্য রাজপরিবারের প্রতীক হিসেবেও সিংহ ব্যবহৃত হতো।

ইসরায়েলের ঐশ্বরিক অধিকারের দাবি

ইসরায়েল প্রায়শই তার সামরিক অভিযানের নাম হিব্রু বাইবেল বা ওল্ড টেস্টেমেন্ট থেকে নেয় বা ধর্মীয় অনুপ্রেরণা থেকে গ্রহণ করে। ফিলিস্তিনি ভূমির উপর ইহুদিদের তথাকথিত ঐশ্বরিক অধিকারের দাবি এবং মধ্যপ্রাচ্যে তাদের যুদ্ধকে ন্যায্যতা দিতে ইসরায়েল এসব ধর্মীয় বিষয় ব্যবহৃত করে বলে অনেকে মনে করে থাকেন।

উদাহরণস্বরূপ, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সিরিয়ার সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে চালানো এক অভিযানের নাম দিয়েছিল, ‘অ্যারো অব বাশান।’ ‘বাশান’ শব্দটি ইসরায়েলিদের ধর্মগ্রন্থ ওল্ড টেস্টামেন্টে ব্যবহৃত হয়েছে। এটি দিয়ে মূলত সিরিয়ার দক্ষিণ ও জর্ডান নদীর পূর্বে অবস্থিত একটি অঞ্চলকে নির্দেশ করা হয়। বাশানের রাজাকে পরাজিত করে ইসরায়েলিরা সেই অঞ্চলকে দখল করেছিল।

গাজা উপত্যকার ওপর হামলা চালাতেও অস্ত্র ও অভিযানের জন্য হিব্রু বাইবেলীয় প্রতীক বা অনুষঙ্গ ব্যবহার করছে ইসরায়েল। নেতানিয়াহু অন্তত তিনবার গাজায় আক্রমণের জন্য হিব্রু বাইবেলীয় আমালেক কাহিনি ব্যবহার করেছেন।

২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু হিব্রু বাইবেল ও ওল্ড টেস্টামেন্টের গ্রন্থ ‘বুক অব ডিউটেরনমি’(২৫:১৭) এর থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন:

‘আমালেক তোমার সঙ্গে যা করেছিল তা মনে রেখো, আমরা মনে রাখি এবং আমরা যুদ্ধ করি।’

এর মধ্য দিয়ে গাজাবাসীদের উপর পূর্ণাঙ্গ হামলা করা উচিত বলে নেতানিয়াহু ইঙ্গিত করেন। কারণ ডিউটেরনমির এই উদ্ধৃতি বাইবেলের স্যামুয়েল গ্রন্থে বর্ণিত আমালেকীয়দের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ ধ্বংসের আহ্বান হিসেবে বিবেচিত হয়।

বাইবেলের এ কাহিনিতে ইসরায়েলিদের ওপর আক্রমণকারীদের সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করার আহ্বান জানানো হয়েছে। গাজার গোটা জনসংখ্যাকে সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন করে দিতে বাইবেলের এ কাহিনিকে হাজির করেছেন নেতানিয়াহু।

গণহত্যার মামলায় নেতানিয়াহুর বক্তব্য

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা গণহত্যার মামলায় আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) প্রথম শুনানিতে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষের আইনজীবী হিব্রু বাইবেলের উদ্ধৃতির মাধ্যমে নেতানিয়াহুর এই বক্তব্যকে গাজার জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যায় প্ররোচনা হিসেবে তুলে ধরেন।

আইনজীবী আরও জানান, নেতানিয়াহু ৩ নভেম্বর সেনাদের উদ্দেশ্যে লেখা আরেকটি চিঠিতে একই আমালেকীয় গল্প পুনরাবৃত্তি করেন।

ধর্মীয় নাম ব্যবহার করে সামরিক প্রযুক্তি

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি গাজায় বোমাবর্ষণে সহায়তা করছে, তাদের নাম ‘ল্যাভেন্ডার’ এবং ‘দ্য গসপেল’, যা উভয়ই হিব্রু বাইবেলীয় ধর্মগ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে।

টিআরটি ওয়ার্ল্ডের বিশ্লেষক রাভালে মহিদিনের মতে, প্রায়ই ধর্মীয় ধর্মগ্রন্থ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ইসরায়েলের অস্ত্রের নামকরণ করা হয়। যেমন, স্যামসন রিমোট কন্ট্রোলড ওয়েপন স্টেশন।

জেরিকো ব্যালিস্টিক মিসাইল-এর নাম রাখা হয়েছে জেরিকো শহরের নামে। হিব্রু বাইবেল ও ওল্ড টেস্টামেন্টের একটি গ্রন্থ ‘বুক অব যশুয়া’ অনুসারে ইসরায়েলিরা এই শহর ফিলিস্তিনিদের কাছ দখল করেছিল।

ডেভিড’স স্লিং নামক আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার নাম রাখা হয়েছে বাইবেলের মেষপালক ডেভিড ও বিশাল যোদ্ধা গোলিয়াথের মধ্যকার বিখ্যাত সেই লড়াইয়ের স্মরণে, যেখানে ডেভিডের বিজয় হয়েছিল। এই কাহিনী আছে হিব্রু বাইবেল ও ওল্ট টেস্টামেন্টের একটি গ্রন্থ ‘বুক অব স্যামুয়েল’-এ।

*দ্য নিউ আরব, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা বিষয়ক লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম। টিআরটি ওয়ার্ল্ডের বিশ্লেষক ও হার্ভার্ডের গবেষক রাভালে মহিদিনের একটি লেখার অবলম্বনে দ্য নিউ আরব এ বিশ্লেষণটি প্রকাশ করেছে। অনুবাদ করেছেন: রাফসান গালিব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য, ভালো উদ্যোগ নিলেও বিরোধিতা আসে
  • যে ‘ধর্মীয় অনুপ্রেরণায়’ ইরানে এই হামলা চালাল ইসরায়েল
  • তেহরানে ইসরায়েলের বিমান হামলার নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল