Samakal:
2025-05-01@11:54:41 GMT

ছড়া কবিতা

Published: 11th, April 2025 GMT

ছড়া কবিতা

খোরশেদ আলম নয়ন 
প্রিয় বৈশাখ

শুকনো পাতায় ছাওয়া-আমাদের ঘর
এই গড়ে-এই ভাঙে-বৈশাখী ঝড়
মেঘনার কালো জল ঢেউ ওঠে কূলে
ঘাটে বাঁধা ডিঙি নাও কেঁপে ওঠে দুলে।

আমের বনের ছায়ে-জাগে কোলাহল
হঠাৎ বৃষ্টি এসে এক হাঁটু জল
বৈশাখে ছিলো ঝড়-বোশেখ মেলা
ছিলো আরো দুরন্ত কিশোর বেলা।

দিদির আঁচলে ঘেরা-নিবিড় মায়া
ছিলো মেঘনার তীর-বটের ছায়া,
ভাটির দেশের নাও-মাটির পুতুল
বারোয়ারি মেলা জুড়ে-কাগজের ফুল।

হাতের রঙিন চুড়ি-পায়ের নূপুর
‘বউ কথা কও’ ডাকা উদাস দুপুর
বোশেখ দিনের সেই-স্বপ্নমধুর-
মেলায় কেনা বাঁশি-খুঁজে আজো সুর।

নাগরদোলায় দোলা-স্বপ্নিল দিন
ছিলো চির মধুময় স্মৃতি অমলিন।
সবুজ প্রান্ত ছুঁয়ে যতো দূর যাই
শ্যামল এ বাংলার রূপ খুঁজে পাই।

পুরাতন গ্লানি মুছে-নতুনের ডাক
নিয়ে আসে বার বার প্রিয় বৈশাখ।
 

 

উৎপলকান্তি বড়ুয়া 
বোশেখের পয়লা

রাত শেষে ভোর হলো
জেগে ওঠো সকলে
আসলের মাঝে ঠাঁই 
পাবে না তো নকলে।

দীদা হেসে কাছে আসে
মুখে সুর শোলক
তাক ডুম তাক বাজে
নতুনের ঢোলক।

পাক ঘরে মা রাঁধেন 
কী স্বাদের পাঁচন!
চিড়া মুড়ি নাড়ু ক্ষির
আনন্দ নাচন।

মুছে যাক ঘুচে যাক
যত ভুল ময়লা
নব রূপে এলো আজ 
বোশেখের পয়লা।
 

 

আলমগীর কবির 
ঝিলমিল ঘুড়ি

বোন চায় মেলা থেকে 
লাল নীল চুড়ি
ভাই বলে কিনে দাও
ঝিলমিল ঘুড়ি। 

কাগজের ফুল আর
রাঙা বাঁশি কিনি
বোনের জন্য মুখে 
মিঠা হাসি কিনি!

সারা মেলা ঘুরে ঘুরে 
ফিরি হাতে নিয়ে
মিঠাই শখের হাঁড়ি 
খুশি সাথে নিয়ে!

বটতলা জমে গেছে 
বৈশাখী মেলা
আনন্দ সুরে যায় 
কেটে বাকি মেলা! 

 

 

মোকাদ্দেস-এ-রাব্বী 
নববর্ষের আনন্দে

রঙ লেগেছে চারিদিকে
সাজাও রঙের ডালা
ঢোল-তবলা বাজাও সবাই 
আজকে খুশির পালা।

ঝুন ঝুন শব্দ তুলে
ঝুমঝুমিটা বাজছে
শব্দ শুনে খোকাখুকি
হেলে দুলে নাঁচছে।

টম টম শব্দ করে
চলছেরে টম গাড়ি
উৎসবের আনন্দ আজ
সবার বাড়ি বাড়ি।

এই আনন্দ ঘরে ঘরে
চলুক বছর জুড়ে
নববর্ষের গানে থাকুক
দুঃখ অনেক দূরে!

 

আবেদীন জনী 
বাজায় বাঁশি

বোশেখ এলো রোদ ছড়ালো
হলদে রোদের ডানা
বোশেখ যেন স্বপ্ন আঁকার
রংতুলি একখানা।

কালি-ধুলো দুঃখগুলো
যায় বাতাসে উড়ে
বোশেখ যেন বাজায় বাঁশি
নতুন ছন্দ-সুরে।

বোশেখ এলো রং ছড়ালো
পড়লো মেলার ধুম
মনটা খুকির প্রজাপতি
দুই চোখে নেই ঘুম।

মেলা থেকে কিনবে খুকি
খেলনা রাশি রাশি
শখের হাঁড়ি, ঘোড়ার গাড়ি
পুতুল-বেলুন-বাঁশি।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আনন দ

এছাড়াও পড়ুন:

যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের

কেবল বাংলা নববর্ষই নয়, যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। 

মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে "বাংলা নববর্ষ: ইতিহাস, সংস্কৃতি ও উত্তরাধিকার" শীর্ষক এক সেমিনারে বাংলা নববর্ষের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, সাংস্কৃতিক তাৎপর্য ও সামাজিক প্রভাব নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অনুরোধ করেন।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, কেবল বাংলা নববর্ষই নয়, যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখা জরুরি। রাজনীতির সঙ্গে রাষ্ট্র ও সমাজের সম্পর্ক সঠিকভাবে গড়ে উঠলে কোনো উৎসবই নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত হয় না। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে সাংস্কৃতিক চিন্তা-চেতনার যে স্বকীয়তা রয়েছে, তা অক্ষুণ্ন রাখাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত। বুদ্ধিভিত্তিক ও সচেতন উদ্যোগের মাধ্যমে ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব। বাংলা নববর্ষের প্রতি জনগণের গভীর অনুরাগ রয়েছে, তাই এটিকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে।

সেমিনারে আইআরডিসি’র সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হকের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন 
আইআরডিসি-এর সভাপতি ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন।

সেমিনারে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. নাছির আহমেদ তার মূল প্রবন্ধে বাংলা নববর্ষের ঐতিহাসিক বিবর্তন এবং নববর্ষ উদযাপনের ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার নিয়ে দুই পর্বে বিশদ আলোচনা করেন। তিনি বলেন, বাংলা নববর্ষ কেবল বাঙালিদের উৎসব নয়, বরং এটি ধর্ম, গোত্র ও সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকল বাংলাদেশির একটি সমন্বিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়া, বাংলা সনের উৎপত্তি, এর অর্থনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা এবং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মাত্রা নিয়েও তিনি গভীরভাবে আলোকপাত করেন।

এছাড়াও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্‌দীন এবং বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফজলে এলাহি চৌধুরী প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন। তাঁরা বাংলা নববর্ষের আন্তর্জাতিক ও  সামাজিক সংহতি এবং সাংস্কৃতিক বিকাশে এর ভূমিকা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত তুলে ধরেন। একইসাথে বাংলা নববর্ষের বহুমাত্রিক তাৎপর্য ও এর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা করেন।

এসময় সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গবেষক উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উপহার পেল পহেলা বৈশাখে জন্ম নেওয়া জেরিনের পরিবার
  • ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে উৎসবকে রাজনীতি মুক্ত রাখতে হবে: মোহাম্মদ আজম
  • দৃশ্যপটে ‘আনন্দ’, মঙ্গল কোথায়
  • যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের