Samakal:
2025-11-03@15:35:46 GMT

ছড়া কবিতা

Published: 11th, April 2025 GMT

ছড়া কবিতা

খোরশেদ আলম নয়ন 
প্রিয় বৈশাখ

শুকনো পাতায় ছাওয়া-আমাদের ঘর
এই গড়ে-এই ভাঙে-বৈশাখী ঝড়
মেঘনার কালো জল ঢেউ ওঠে কূলে
ঘাটে বাঁধা ডিঙি নাও কেঁপে ওঠে দুলে।

আমের বনের ছায়ে-জাগে কোলাহল
হঠাৎ বৃষ্টি এসে এক হাঁটু জল
বৈশাখে ছিলো ঝড়-বোশেখ মেলা
ছিলো আরো দুরন্ত কিশোর বেলা।

দিদির আঁচলে ঘেরা-নিবিড় মায়া
ছিলো মেঘনার তীর-বটের ছায়া,
ভাটির দেশের নাও-মাটির পুতুল
বারোয়ারি মেলা জুড়ে-কাগজের ফুল।

হাতের রঙিন চুড়ি-পায়ের নূপুর
‘বউ কথা কও’ ডাকা উদাস দুপুর
বোশেখ দিনের সেই-স্বপ্নমধুর-
মেলায় কেনা বাঁশি-খুঁজে আজো সুর।

নাগরদোলায় দোলা-স্বপ্নিল দিন
ছিলো চির মধুময় স্মৃতি অমলিন।
সবুজ প্রান্ত ছুঁয়ে যতো দূর যাই
শ্যামল এ বাংলার রূপ খুঁজে পাই।

পুরাতন গ্লানি মুছে-নতুনের ডাক
নিয়ে আসে বার বার প্রিয় বৈশাখ।
 

 

উৎপলকান্তি বড়ুয়া 
বোশেখের পয়লা

রাত শেষে ভোর হলো
জেগে ওঠো সকলে
আসলের মাঝে ঠাঁই 
পাবে না তো নকলে।

দীদা হেসে কাছে আসে
মুখে সুর শোলক
তাক ডুম তাক বাজে
নতুনের ঢোলক।

পাক ঘরে মা রাঁধেন 
কী স্বাদের পাঁচন!
চিড়া মুড়ি নাড়ু ক্ষির
আনন্দ নাচন।

মুছে যাক ঘুচে যাক
যত ভুল ময়লা
নব রূপে এলো আজ 
বোশেখের পয়লা।
 

 

আলমগীর কবির 
ঝিলমিল ঘুড়ি

বোন চায় মেলা থেকে 
লাল নীল চুড়ি
ভাই বলে কিনে দাও
ঝিলমিল ঘুড়ি। 

কাগজের ফুল আর
রাঙা বাঁশি কিনি
বোনের জন্য মুখে 
মিঠা হাসি কিনি!

সারা মেলা ঘুরে ঘুরে 
ফিরি হাতে নিয়ে
মিঠাই শখের হাঁড়ি 
খুশি সাথে নিয়ে!

বটতলা জমে গেছে 
বৈশাখী মেলা
আনন্দ সুরে যায় 
কেটে বাকি মেলা! 

 

 

মোকাদ্দেস-এ-রাব্বী 
নববর্ষের আনন্দে

রঙ লেগেছে চারিদিকে
সাজাও রঙের ডালা
ঢোল-তবলা বাজাও সবাই 
আজকে খুশির পালা।

ঝুন ঝুন শব্দ তুলে
ঝুমঝুমিটা বাজছে
শব্দ শুনে খোকাখুকি
হেলে দুলে নাঁচছে।

টম টম শব্দ করে
চলছেরে টম গাড়ি
উৎসবের আনন্দ আজ
সবার বাড়ি বাড়ি।

এই আনন্দ ঘরে ঘরে
চলুক বছর জুড়ে
নববর্ষের গানে থাকুক
দুঃখ অনেক দূরে!

 

আবেদীন জনী 
বাজায় বাঁশি

বোশেখ এলো রোদ ছড়ালো
হলদে রোদের ডানা
বোশেখ যেন স্বপ্ন আঁকার
রংতুলি একখানা।

কালি-ধুলো দুঃখগুলো
যায় বাতাসে উড়ে
বোশেখ যেন বাজায় বাঁশি
নতুন ছন্দ-সুরে।

বোশেখ এলো রং ছড়ালো
পড়লো মেলার ধুম
মনটা খুকির প্রজাপতি
দুই চোখে নেই ঘুম।

মেলা থেকে কিনবে খুকি
খেলনা রাশি রাশি
শখের হাঁড়ি, ঘোড়ার গাড়ি
পুতুল-বেলুন-বাঁশি।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আনন দ

এছাড়াও পড়ুন:

ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা

চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।

কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।

এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।

অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।

একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।

এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।

যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা