খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করে বিক্ষোভ করছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার ক্যাম্পাসের ভাস্কর্য দুর্বার বাংলার পাদদেশে বেলা একটার দিকে সমাবেশ করে ‘মেক কুয়েট, ফ্রি এগেইন’ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।

কর্মসূচিতে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা হল খুলে দেওয়ার দাবি জানান। হল খুলে দেওয়ার দাবিসংবলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। তাঁরা এখনই প্রশাসনের কাছে বহিষ্কার হওয়া ৩৭ শিক্ষার্থীর সবার নাম প্রকাশ করার দাবি জানান। বিক্ষোভ প্রদর্শন শেষে স্লোগান দিতে দিতে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক ভবনগুলোর সামনে গিয়ে হ্যান্ড মাইকে শিক্ষকদের কাছে হলে ঢোকার সহায়তার আহ্বান জানান। এদিকে আজ কুয়েটের দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একজন প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদল ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নৃশংস হামলায় প্রায় ১৫০ জন শিক্ষার্থী রক্তাক্ত হন। আমাদের ওপর গুলি চালানো হয়। এর প্রতিবাদে কুয়েটের শিক্ষার্থীরা বিচারের দাবি করলে বিচারের নামে নাটক করে দুই মাস পর কুয়েটের ৪২ জন প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়। এরপর গতকাল সোমবার সিন্ডিকেট সিদ্ধান্তেও বহিষ্কারের নামে নাটক করে প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদেরও বহিষ্কার করার নির্দেশ দেওয়া হয়। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এসব নাটক আর সহ্য করা হবে না। আমাদের ধৈর্যের সীমা পার হয়ে গেছে। আজ তিন দিন ধরে আমরা খোলা আকাশের নিচে মশার কামড় খেয়ে কষ্ট সহ্য করছি।’

এর আগে গতকাল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে আগামী ২ মে থেকে সব আবাসিক হল শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া ও ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খুলে দেওয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের দুর্বার বাংলা চত্বরে অবস্থান নেন। পরে মিছিল করে বিভিন্ন বিভাগে গিয়ে শিক্ষকদের আন্দোলনে অংশ নেওয়ার অনুরোধ জানান.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হল খ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্র-জনতার ওপর গুলি: এআই দিয়ে শনাক্ত করে কৃষক লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ

ঢাকার গুলশান ও বাড্ডা এলাকায় আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় কৃষক লীগের ভাটারা থানা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান ওরফে রাজুকে শনাক্ত করে পুলিশ। এরপর তাঁকে গত রোববার রাজধানীর মতিঝিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গুলশান থানা–পুলিশ জানায়, চলতি বছরের ১৯ জুলাই গুলশান ও বাড্ডা এলাকায় আন্দোলনরত ছাত্র ও জনতার ওপর গুলি চালান মিজানুর রহমান। এ সময় জব্বার আলী নামের এক ভ্যানচালকের ডান পায়ে গুলি লাগে। পুলিশ সদর দপ্তরের একটি দল ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) সাহায্যে বিশ্লেষণ করে মিজানুর রহমানকে শনাক্ত করে। পরে তাঁকে আইনের আওতায় আনার পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুর সালাম আজ বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, মিজানুর রহমান কারাগারে আছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানোর বিষয়টি স্বীকার করেছেন। বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। ১৭ জুন রিমান্ড আবেদনের শুনানি হবে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মিজানুর রহমান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর জাকির হোসেনের (বাবুল) ক্যাডার বাহিনীর অন্যতম সংগঠক ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে তিনি এলাকায় চাঁদাবাজি, জমি দখলসহ নানা অপরাধে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময় গুলশান-বাড্ডা এলাকায় ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানো এবং ককটেল নিক্ষেপের ঘটনায় তাঁর সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে গুলশান, ভাটারা ও বাড্ডা থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্র-জনতার ওপর গুলি: এআই দিয়ে শনাক্ত করে কৃষক লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ