কুয়েট শিক্ষার্থীদের নামে মামলা ও বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
Published: 15th, April 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের নামে মামলা এবং বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির একদল প্রাক্তন শিক্ষার্থী। এই কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে অংশ নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়।
সমাবেশে কুয়েটের ২০১৪–১৫ সেশনের যন্ত্রকৌশল বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মাইনুল হক বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা মনে করেন উপাচার্য তাঁর দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি–সমর্থিত সন্ত্রাসীরা হামলা চালালে তিনি নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। সেনাবাহিনীকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেননি। এর পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলন যখন আরও জোরালো হলো, ছাত্রছাত্রীরা অপরাধীদের বিচারের দাবি জানালেন, তখন উপাচার্য ক্যাম্পাস বন্ধ করে দিলেন। এরপরেও শিক্ষার্থীরা যখন থাকার চেষ্টা করলেন, তিনি তখন হলের বিদ্যুৎ ও পানি বন্ধ করে দিলেন, ফলে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে বাড়ি চলে যান।
কুয়েটের এনার্জি সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী জিহাদুল হক তালুকদার বলেন, ‘আমরা প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বর্তমান শিক্ষার্থীদের এক দফা দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করছি। ভিসি যেই কাজ করেছেন, এরপর আর তাঁর পদে থাকার নৈতিক অধিকার নেই। তিনি সেই নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন।’
আরও পড়ুন৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার, ২ মে হল খোলার সিদ্ধান্ত২১ ঘণ্টা আগেসমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, ‘যারা ছাত্রদল, বিএনপি ও যুবদল সন্ত্রাসীদের হাতে মার খেলো, রক্তাক্ত হলো, মিথ্যা বানোয়াট মামলা খেলো, তাদেরকেই এখন বহিষ্কার করা হলো। বহিষ্কৃত ৩৭ শিক্ষার্থীর মধ্যে বেশির ভাগই হামলার শিকার হয়েছিলেন।’
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে কমিটি করা হয়। ওই দিন রাতেই খানজাহান আলী থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করে প্রশাসন। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়। এর মধ্যে ১০ এপ্রিল কুয়েটের ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আমলি আদালতে মামলা করেন নগরের মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার হোচেন আলী নামের এক ব্যক্তি।
মামলার পরপরই ১৩ এপ্রিল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরও পড়ুনকুয়েটের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বুয়েট শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন৭ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আরব আমিরাতকে ৪৯ রানে গুঁড়িয়ে ইতিহাস গড়ল যুক্তরাষ্ট্র
দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে রচিত হলো এক অভাবনীয় ইতিহাস। ‘আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ লিগ-টু’ এর ম্যাচে সোমবার (০৩ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বনিম্ন রানে গুটিয়ে গেল সংযুক্ত আরব আমিরাত।
২৯৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ২২.১ ওভারে ৪৯ রানে অলআউট হয় আমিরাত। যা তাদের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বনিম্ন সংগ্রহ। ফলে যুক্তরাষ্ট্র জেতে ২৪৩ রানের বিশাল ব্যবধানে। যা আবার রানের ব্যবধানে তাদের ওয়ানডে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয়। শুধু তাই নয়, ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসে এটা ২০তম সবচেয়ে বড় জয়, রানের ব্যবধানে।
আরো পড়ুন:
মিতালিকে ছাড়িয়ে ইতিহাস গড়লেন মান্ধানা
গৌহাটি টেস্টে ‘লাঞ্চের আগে টি-ব্রেক’! জানুন কেন এই ব্যতিক্রম
মারাত্মক আগুন ঝরানো স্পেলে শুরুতেই আমিরাতের টপ অর্ডার উড়িয়ে দেন রুশিল উগরকর (৫ উইকেট ২২ রানে) ও সৌরভ নেত্রাভলকর (৩ উইকেট ৪ রানে)। তাদের তোপে প্রথম পাওয়ার প্লেতেই ধসে পড়ে আমিরাত। মাত্র দশ ওভারেই স্কোরবোর্ডের চিত্র ১৬/৭! সেখান থেকে কেবল লজ্জার ব্যবধান কমানোই ছিল তাদের একমাত্র লক্ষ্য।
কিন্তু ভাগ্যও এদিন সঙ্গ দেয়নি। আর এক ঘণ্টার মধ্যেই আমিরাতের ইনিংস গুটিয়ে যায় ৪৯ রানে। তাতে ওয়ানডে ইতিহাসে নিজেদের সবচেয়ে বড় পরাজয় বরণ করে আমিরাত। একমাত্র নম্বর ১০ ব্যাটার জুনায়েদ সিদ্দিক পৌঁছাতে পেরেছিলেন দুই অঙ্কে (১২)। আর তিনিই একমাত্র ব্যাটার যিনি মারতে পেরেছিলেন একটি ছক্কা।
এর আগে ব্যাট হাতে যুক্তরাষ্ট্রও শুরুতে চাপে ছিল। সপ্তম ওভারেই ৩ উইকেট হারিয়ে রানের রান ছিল ২৮। কিন্তু এরপর যা ঘটল, তা ছিল এক মহাকাব্যিক ঘুরে দাঁড়ানো।
সাইতেজা মুক্কামাল্লা (১৩৭ অপরাজিত) ও মিলিন্দ কুমার (১২৩ অপরাজিত) মিলে গড়েন ২৬৪ রানের অবিচ্ছিন্ন পার্টনারশিপ। যা যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ানডে ইতিহাসের অন্যতম সেরা জুটি। দুজনই শুরুতে বলের গতি সামলে নিয়েছিলেন ধৈর্য ধরে। এরপর ছন্দে ফিরেই দাপট দেখিয়েছেন চার-ছক্কায়।
শেষ ১০ ওভারে তারা তুলে নেন ৯৪ রান, কোনো উইকেট না হারিয়ে। দুর্দান্ত স্ট্রাইক রোটেশন ও দৌড়ে রান তোলার নিপুণতায় তারা পুরো সময় চাপ ধরে রাখেন আমিরাতের বোলার ও ফিল্ডারদের ওপর।
প্রথম ইনিংস শেষ হওয়ার আগেই বোঝা যাচ্ছিল, এই রান তাড়া করা সহজ হবে না। আর সত্যিই, যুক্তরাষ্ট্রের বোলারদের নিষ্ঠুর নির্ভুলতায় সেই আশঙ্কাই পরিণত হয় ইতিহাসে। আমিরাতের ওয়ানডে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ পরাজয়ের ইতিহাসে। যুক্তরাষ্ট্র জয়ী ২৪৩ রানে। যা এক নতুন অধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেট ইতিহাসে!
ঢাকা/আমিনুল