সোনারগাঁ জাদুঘরে বর্ণাঢ্য আয়োজনে চলছে বৈশাখীমেলা
Published: 17th, April 2025 GMT
প্রাচীন বাংলার রাজধানী ঐতিহাসিক সোনারগাঁয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের সুবর্ণ জয়ন্তী ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ১৫ দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
গত সোমবার (১৪ এপ্রিল) বৈশাখের সকালে লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন প্রাঙ্গণে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মিজ ইলিয়া সুমনা এ মেলার উদ্বোধন করেন। আগামী ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে এ মেলা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ফাউন্ডেশনের পরিচালক কাজী মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন, জাতীয় কারুশিল্প পরিষদের সভাপতি ও বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালনা বোর্ডের সদস্য চন্দ্র শেখর সাহা, সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা রহমান প্রমুখ। এ সময় বিপুল সংখ্যক দেশী ও বিদেশি দর্শণার্থী উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রার মাধ্যমে এ উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পাশাপাশি ফাউন্ডেশনের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব পালিত হয়। এ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে জামদানি, শতরঞ্জি, নকশিকাঁথা, মৃৎশিল্প, দারুশিল্প, হাতপাখা, কাঠখোদাই শিল্প, পটচিত্রশিল্প, শোলা শিল্প, বাঁশ-বেত শিল্প এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কারুশিল্পীদের সৃষ্টিশীল কর্মের উপস্থাপন এবং বিপণনের সুযোগ রয়েছে।
এছাড়াও উৎসব চলাকালীন প্রতিদিনই থাকবে বাউল গান ও লোকজ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পুতুলনাচ, হালখাতা, বায়স্কোপ, সাপের খেলা, নাগরদোলাসহ গ্রামীণ বিনোদনের নানা আয়োজন। থাকছে হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ খেলা—তিন গুটি, সাত গুটি, বাঘবন্দ, কানামাছি, গোল্লাছুট, বউচি ও কপাল টোক্কা। আর রসনা তৃপ্তির জন্য থাকবে মুখরোচক সব বাঙালি খাবার।
নববর্ষের মেলা উপলক্ষে ফাউন্ডেশনের প্রধান ফটক থেকে শুরু করে উৎসব প্রাঙ্গণ পর্যন্ত রঙ-বেরঙের বাতি ও বিভিন্ন প্রাচীন মোটিফ দিয়ে সাজানো হয়েছে ফাউন্ডেশন চত্বর। তাছাড়া বিভিন্ন সড়কে ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে চলছে বৈশাখী প্রচারণা এবং ফাউন্ডেশন চত্বরে থাকছে জমকালো আয়োজন ও লোকজ মঞ্চে থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ স ন রগ উপলক ষ
এছাড়াও পড়ুন:
কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’
নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি।
৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে।
আরো পড়ুন:
দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে
সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা
২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা।
চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী।
উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।”
চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।”
চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়।
মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত