সাতক্ষীরায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ, আটক ১
Published: 17th, April 2025 GMT
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার বেলতলা নামক স্থান থেকে ভারত থেকে অবৈধভাবে আনা ট্রাক ভর্তি উন্নত মানের শাড়ি, টিস্যু জর্জেট থানকাপড় ও চায়না ক্লে পাউডারসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এসময় আটক করা হয়েছে ট্রাকের হেলপার মফিজুল ইসলাম ডাবলুকে।
জব্দকৃত মালামালের বাজার মূল্য ১ কোটি ২০ লাখ ২০ হাজার ৬০০ টাকা বলে জানায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টায় পুলিশ সুপার কনফারেন্স রুমে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তথ্য জানান, সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।
এর আগে বুধবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে কলারোয়া উপজেলার বেলতলা নামক স্থান থেকে ট্রাক ভর্তি উক্ত মালামালসহ হেলপারকে আটক করা হয়।
আটক ট্রাক হেলপার মফিজুল ইসলাম ডাবলু (৩৫) সাতক্ষীরা শহরের মধুরমোল্লারডাঙ্গী এলাকার মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে।
পুলিশ সুপার জানান, ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ শাড়ি ও থানকাপড়সহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে কলারোয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক নিজাম উদ্দীন মোল্লার নেতৃত্বে ডিবির একটি চৌকস দল ট্রাকটি অনুসরণ করে তার পিছু নেয়। একপর্যায়ে ট্রাকটিকে ধাওয়া করে কলারোয়া উপজেলার বেলতলা নামক স্থানে গিয়ে গতিরোধ করা হয়।
এসময় ট্রাক ড্রাইভার পালিয়ে গেলেও এর হেলপার ডাবলুকে আটক করা হয়। জব্দ করা হয় ট্রাকটি। যার ট্রাক নং-সাতক্ষীরা-ট-১১-০৬৯৭। জব্দকৃত ট্রাকটি বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে সাতক্ষীরা ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়। এরপর ট্রাকটি তল্লাশি চালিয়ে এক হাজার ১৫০ পিস ভারতীয় উন্নত মানের শাড়ি, ৬০০ গজ টিস্যু জর্জেট থানকাপড়, ৪৫১ বস্তা ভারতীয় চায়না ক্লে পাউডার ও ৭১ বস্তা সাদা পাউডার ও সাগুর দানার ন্যায় ভারতীয় কেমিক্যাল পদার্থ জব্দ করা হয়।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ভোমরা স্থলবন্দরের রিয়াদ ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির গাড়ির মাধমে এসব মালামাল এসেছে।
এছাড়া কোন সিএন্ডএফ এর মাধ্যমে এসব মালামালগুলো ভারত থেকে আনা হয়েছে এবং এর নেপথ্যে কারা জড়িত সেগুলো ডিবি পুলিশের অধিকতর তদন্তে বেরিয়ে আসবে। এ ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের হবে বলে জানান পুলিশ সুপার।
ঢাকা/শাহীন/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস