আধিপত্য বিস্তার ও স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এইচ এম সুমন হালদারকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। ২০২৪ সালের ৭ জুলাইয়ের এ ঘটনায় পদটি শূন্য হওয়ায় ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু সিদ্দিক বেপারিকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কয়েক মাস যেতেই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকেও গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়ে পোস্টার সাঁটানো হয়েছে দেয়ালে দেয়ালে।

পোস্টারে লেখা হয়েছে, ‘মৃত্যুর দিন গুনতে থাক, মৃত্যু খুব কাছে তোর। এবার আমি তোরে গুলি করুম, ঠিক মাথায়। আইতাছি কিছুদিন পরে প্রস্তুতি নে মরার জন্য আপ্পু বেপারি।’ এমন হুমকি পেয়ে পাঁচগাঁও ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিক বেপারি ওরফে আপ্পু বেপারি ইউএনওকে বিষয়টি জানান। তাঁর পরামর্শে টঙ্গিবাড়ী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তিনি। পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এতে কারা জড়িত, তা শনাক্ত করতে পারেনি।

এ পরিস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান নিজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকলেও ইউনিয়ন পরিষদের কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন বলে জানা গেছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে হত্যার হুমকির পর আতঙ্ক কাটতে না কাটতেই গত মঙ্গলবার রাতে কাপড় পেঁচিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের বৈদ্যুতিক মিটারে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার সকালে ইউপি সচিব এ দৃশ্য দেখে ইউএনওকে জানান। পরে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পরিষদের নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এসব ঘটনায় কারা জড়িত, তা কেউ বলতে পারছেন না।

এমন পরিস্থিতিতে ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, সচিব, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উদ্বেগে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিক বেপারি বলেন, ‘আমাকে গুলি করে হত্যার হুমকি দেওয়ার পর ইউনিয়ন পরিষদের বৈদ্যুতিক মিটারে কাপড় পেঁচিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে মিটারের চারপাশ আগুনে 
পুড়ে গেছে। বুধবার সকালে পরিষদে গিয়ে ইউপি সচিব আগুন দেওয়ার ঘটনা দেখতে পেয়ে আমাকেসহ উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছেন। খবর পেয়ে ইউএনও মহোদয় সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।’

জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৭ জুলাই বেলা দেড়টার দিকে আধিপত্য ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পাঁচগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান এইচ এম সুমন হালদারকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরদিন ৮ জুলাই তাঁর ছোট ভাই ইমন হালদার বাদী হয়ে সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মিলেনুর রহমান মিলনসহ সাতজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চারজনকে আসামি করে মামলা করেন। এ মামলায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অন্যরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে।

টঙ্গিবাড়ী থানার ওসি মো.

মহিদুল ইসলাম বলেন, গুলি করে হত্যার হুমকির ঘটনায় করা জিডির তদন্ত করছে পুলিশ। মিটারে আগুন দেওয়ার ঘটনার বিষয়টিও জেনেছেন। ঘটনার নিবিড় তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বৈদ্যুতিক মিটারে আগুন এবং হত্যার হুমকির বিষয়টি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অবহিত করেছেন বলে জানান ইউএনও মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, থানায় সাধারণ ডায়েরির পাশাপাশি নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ইউনিয়ন পরিষদে দ্রুত সিসি ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর ছ ন র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাশিয়ার প্রয়াত বিরোধী নেতা নাভালনির শরীরে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল: স্ত্রীর দাবি
  • রূপালী লাইফের আর্থিক হিসাবে ৬৯ কোটি টাকার গরমিল
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তি ইউনিটে ভর্তি: মাইগ্রেশন, বিষয় ও প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ প্রকাশ
  • হেলথ টেকনোলজি কোর্সে ভর্তি, অপেক্ষমাণ থেকে তৃতীয় মেধাতালিকা প্রকাশ
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে আবেদন আজ বিকেলে, ক্লাস ১৩ নভেম্বর
  • তাপমাত্রা বেড়ে দেশের ক্ষতি ২১ হাজার কোটি টাকা, কীভাবে হচ্ছে, কেন হচ্ছে
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
  • শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দিল ঢাকা ইন্স্যুরেন্স
  • সোনালী ও রূপালী মুনাফায়, অগ্রণী ও জনতা লোকসানে