শেয়ারবাজার থেকে এসিআই লিমিটেডের আরও ১৪ লাখ শেয়ার কিনবেন কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ দৌলা। নিয়ম অনুযায়ী, গতকাল বৃহস্পতিবার স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে তিনি শেয়ার কেনার এ ঘোষণা দিয়েছেন। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দেওয়া ঘোষণায় আরিফ দৌলা জানিয়েছেন, ৩০ এপ্রিলের মধ্যে তিনি এই শেয়ার কেনা সম্পন্ন করবেন।

ঢাকার শেয়ারবাজারে গতকাল এসিআই লিমিটেডের প্রতিটি শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ১৯৪ টাকা ৬০ পয়সা। সেই হিসাবে ১৪ লাখ শেয়ার কিনতে আরিফ দৌলাকে ২৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। তবে আগামী কয়েক দিনে শেয়ারের দাম কমলে-বাড়লে তাতে এই বিনিয়োগও কমবে বা বাড়বে।

চলতি বছরের শুরু থেকে কয়েক দফায় বাজার থেকে নিজের কোম্পানির শেয়ার কেনার ঘোষণা দিয়েছেন আরিফ দৌলা। বছরের শুরুতে গত ৯ জানুয়ারি তিনি বাজার থেকে কোম্পানিটির ৬ লাখ শেয়ার কেনার ঘোষণা দেন। ওই দিন এসিআইয়ের শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ১৫৩ টাকা ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে ৬ লাখ শেয়ার কিনতে তাঁর খরচ হয় ৯ কোটি ২১ লাখ টাকা। প্রথম দফায় ৬ লাখ শেয়ার কেনার এক মাস পর ১০ ফেব্রুয়ারি নতুন করে আরও ২৫ লাখ শেয়ার কেনার ঘোষণা দেন। কোম্পানিটির ওই দিনের শেয়ারের বাজারমূল্য অনুযায়ী তাতে তাঁর খরচ হয় সাড়ে ৩৭ কোটি টাকা। এরপর গতকাল নতুন করে আরও ১৪ লাখ শেয়ার কেনার ঘোষণা দেন আরিফ দৌলা। এই শেয়ার কিনতে তাঁর খরচ হবে প্রায় সোয়া ২৭ কোটি টাকা। সেই হিসাবে চলতি বছরের চার মাসে শেয়ারবাজার থেকে আরিফ দৌলা তাঁর নিজের কোম্পানির ৪৫ লাখ শেয়ার কেনার ঘোষণা দেন। তাতে তাঁর বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়াবে ৭৪ কোটি টাকা।

এমন একসময়ে আরিফ দৌলা বাজার থেকে এসিআইয়ের শেয়ার কেনা শুরু করেছেন, যখন গত দুই বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ২৬০ থেকে কমে ১৯৫ টাকায় নেমে এসেছে। এসিআই কোম্পানি-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শেয়ারবাজারের মন্দা সময়ে নিজেদের কোম্পানির শেয়ার কেনার মাধ্যমে বাজারে পুঁজি বিনিয়োগ করছেন কোম্পানিটির উদ্যোক্তারা। কোম্পানির প্রতি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখতেই উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ কারণে গত জানুয়ারিতে বাজার থেকে এসিআইয়ের ১৬ লাখ শেয়ার কেনেন কোম্পানির চেয়ারম্যান আনিস উদ দৌলা। পাশাপাশি একই মাসে বাজার থেকে ১৫ লাখ ১৫ হাজার শেয়ার কেনেন কোম্পানিটির পরিচালক সুস্মিতা আনিস। ওই সময়ের বাজারমূল্যের হিসাবে আনিস উদ দৌলা ও সুস্মিতা আনিস বাজার থেকে প্রায় ৪৭ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছিলেন। তাতে সব মিলিয়ে গত চার মাসে কোম্পানিটির চেয়ার‌ম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালক মিলে এসিআইয়ের ১২১ কোটি টাকার বেশি মূল্যের শেয়ার কিনেছেন।

শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে ঘোষণা দিয়ে বাজার থেকে শেয়ার কেনার এ ধরনের উদ্যোগ বাজারের জন্য খুবই ইতিবাচক। শেয়ারের দাম কমে গেলে উদ্যোক্তারা যখন শেয়ার কেনায় এগিয়ে আসেন, তখন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা আশাবাদী হন; যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির শেয়ারের দামে। এসিআইয়ের শেয়ারের দামের ক্ষেত্রেও তার প্রভাব দেখা গেছে। গত জানুয়ারিতে যখন প্রথম কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালক শেয়ার কেনার ঘোষণা দেন, তখন কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য নেমেছিল দেড় শ টাকার ঘরে। তাঁদের শেয়ার কেনার ঘোষণার পর এটির দাম বেড়ে ২০০ টাকার কাছাকাছি পৌঁছেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র আর ফ দ ল বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুরসহ ৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা ও খিলগাঁওয়ে দুজনকে গুলি করে হত্যা এবং দুজনকে আহত করার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো.শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

অন্য যে চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে, তাঁরা হলেন ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম, রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল ও পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) চঞ্চল চন্দ্র সরকার।

আসামিদের মধ্যে এএসআই চঞ্চল চন্দ্র গ্রেপ্তার আছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পড়ে শুনিয়ে ট্রাইব্যুনাল জানতে চান, তিনি দোষ স্বীকার করেন কি না। জবাবে চঞ্চল চন্দ্র নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। আগামী ১৬ অক্টোবর এ মামলার সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।

এদিকে ট্রাইব্যুনাল–১–এ গণ–অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ সাক্ষ্য গ্রহণ হওয়ার কথা ছিল। তবে তা হয়নি। আগামী বৃহস্পতিবার এ মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ