চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় যাত্রীবাহী বাসচাপায় ভ্যানচালকসহ দুজন নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ মহাসড়কের নয়মাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত দুজন হলেন সদর উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের বাসিন্দা ভ্যানচালক আবদুর রাজ্জাক (৬৫) এবং মোহাম্মদজমা গ্রামের চাল ব্যবসায়ী সরোয়ার হোসেন (৭০)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সকালে মোহাম্মদজমা গ্রাম থেকে সরোয়ার হোসেন চালের বস্তা নিয়ে ব্যাটারিচালিত ভ্যানে সরোজগঞ্জ হাটে যাচ্ছিলেন। সিন্দুরিয়া গ্রামের একটি গ্রামীণ সড়ক দিয়ে এসে নয়মাইল এলাকায় মহাসড়কে ওঠার সময় চুয়াডাঙ্গা থেকে ছেড়ে আসা ঝিনাইদহগামী একটি যাত্রীবাহী বাস ভ্যানটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে ভ্যানচালক ও যাত্রী নিহত হন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিন্দুরিয়া পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে নিহত ব্যক্তিদের লাশ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠান।

চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম সরকার বলেন, বাসের চাপায় ভ্যানটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং নিহত ব্যক্তিদের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে। তাঁদের শনাক্ত করতে সময় লেগেছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কুড়িগ্রাম-৪ আসনে জামায়াত-বিএনপির প্রার্থী হলেন ২ ভাই

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে কুড়িগ্রাম-৪ আসন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। এই আসনে বিএনপি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত হয়েছেন আপন দুই ভাই। ফলে স্থানীয় রাজনীতিতে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা।

সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আরো পড়ুন:

মনোনয়ন না পেয়ে হাজী ইয়াছিনের সমর্থকদের মহাসড়কে বিক্ষোভ

গভীর রাতে সীতাকুণ্ডের ৪ বিএনপি নেতা বহিষ্কার

কুড়িগ্রাম-৪ আসনে প্রার্থী হিসেবে আজিজুর রহমানের নাম ঘোষণা করা হয়। অপরদিকে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত হয়েছেন বিএনপি প্রার্থীর আপন ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক। দুই ভাইয়ের এই রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীতা এখন এলাকার চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হয়ে উঠেছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।

জাতীয় সংসদের এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৪১২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৮ হাজার ৭১১ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৬৯ হাজার ৬৯২ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন ৯ জন। কুড়িগ্রামের রৌমারী, রাজিবপুর ও চিলমারী উপজেলা নিয়ে আসনটি গঠিত।

স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই আসনটি ঐতিহাসিকভাবেই গুরুত্বপূর্ণ। বিএনপি ও জামায়াত উভয় দলেরই শক্ত ঘাঁটি হিসেবে কুড়িগ্রাম-৪ দীর্ঘদিন ধরে পরিচিত। ফলে দুই ভাইয়ের মুখোমুখি লড়াই আসনটিকে জাতীয় পর্যায়ে আলোচিত আসনে পরিণত করেছে। 

এক প্রবীণ রাজনীতিক বলেন, “রৌমারী, রাজিবপুর ও চিলমারীর ইতিহাসে এমন দৃশ্য প্রথম। ভাইয়ের বিপরীতে ভাই-এটা নির্বাচনী মাঠে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। জনমনে প্রশ্ন-কে এগিয়ে থাকবেন?” 

স্থানীয়রা বলছেন, দুই দলের সাংগঠনিক সক্ষমতা, তৃণমূল নেতাকর্মীদের সক্রিয়তা ও প্রার্থীদের ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তার ওপরই নির্ভর করবে কে শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হবেন।

জামায়াতের প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তাক বলেন, “আমার বড় ভাই বিএনপি থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হয়েছেন। তিনি যদি সত্যি মনোনয়ন পেয়ে যান, তাহলেও আমাকে পরাজিত করতে পারবে না। কেননা জামায়াতের জনপ্রিয়তা এখন অনেক বেড়েছে। দুই ভাই প্রার্থী হলেও নির্বাচনে এর কোনো প্রভাব পড়বে না।”

বিএনপি প্রার্থী আজিজুর রহমান বলেন, “আমার ছোট ভাই একসময় বিএনপি করতো। আমার কারণে সে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পরবর্তীতে জামায়াতে যোগদেন, সেই দলের প্রার্থী হয়েছেন।” 

তিনি আরো বলেন, “আমাকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা না করলে আমার পরিচয় এবং পারিবারিক ইমেজের কারণে আমার ছোট ভাই এককভাবে নির্বাচনে সুবিধা নিতে পারত। তবে, আমি প্রার্থী হওয়ায় সেই সুযোগ থেকে সে বঞ্চিত হলো। জনগণ আমাকেই চাইছে। তাই আমি আশা করব, আগামী নির্বাচনে দল আমাকে ফাইনাল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেবে।”

ঢাকা/বাদশাহ/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ