আ.লীগের সবার হাতে রক্ত, সেই দলে সাকিবের যাওয়া ঠিক হয়নি: প্রেস সচিব
Published: 18th, April 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, আওয়ামী লীগের সবার হাতে রক্তের দাগ, সেই দল থেকে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের নির্বাচন করা ঠিক হয়নি।
শুক্রবার দুপুরে মাগুরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে এ মন্তব্য করেন তিনি।
প্রেস সচিব বলেন, মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসান ক্রিকেট খেলাকে সর্বোচ্চ উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। আবার সেই সাকিব আল হাসান আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচন করেছেন। আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটি নেতাকর্মীর হাতে রক্ত, খুন, গুমে জড়িত, ব্যাংক ডাকাতিতে জড়িত। একজন বিশ্বসেরা ক্রিকেটার হয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন সাবেক এ সংসদ সদস্য। আওয়ামী লীগ জুলাই আন্দোলনে তিন-চার হাজার ছাত্র-জনতাকে খুন করেছে।
ইলিয়াস আলীর কথা মনে করিয়ে তিনি বলেন, তিনি ২০১২ সালে গুম হয়েছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচন কীভাবে হয়েছিল সাকিব আল হাসান ভালোভাবে জানতেন।
সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে সাকিব আল হাসান বলেছেন, কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দেওয়া তো ভুল নয়।
এ প্রসঙ্গ টেনে প্রেস সচিব বলেন, বাংলাদেশের যেকোনো মানুষের রাজনৈতিক দলে যোগদান করা ভুল না। বরং আনন্দের বিষয়। তবে ভুল তথ্য নিয়ে কোনো রাজনৈতিক দলে যোগদান করলেন, জেনে বুঝে কি জঙ্গি পার্টিতে যোগদান করবেন? মাগুরায় ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত একটি নির্বাচনও কি ঠিকভাবে হয়েছে? সব ছিল সাজানো নির্বাচন। ২০২৪ এর জুলাই-আগস্টের আন্দোলন সারা দেশের মতো মাগুরায়ও হয়েছে। আন্দোলনে নির্মমভাবে তিন-চারটা ছেলে মারা গেছে। সাকিব তো তখন মাগুরার সংসদ সদস্য। তিনি কি আন্দোলনে নিহত মানুষের কথা জানতেন না? সাকিব কি কখনও বলেছেন, আমি সরি, আমার নির্বাচনী এলাকার মধ্যে নিহত হয়েছে, আমি এর নিন্দা জানাই?
তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালে মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচন কাভার করতে এসেছিলাম। নির্বাচনী এলাকায় কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। একটা সাজানো নির্বাচন ছিল। আগে থেকে বোঝা যাচ্ছিল কে জিতবে কে হারবে। অনেক রাজনৈতিক প্রার্থী এক-দুই মাস ধরে নির্বাচনী প্রচারণা করেন। সেখানে সাকিব আগে থেকে জানতেন, তার হয়ে কেউ তাকে নির্বাচনে বিজয়ী করে দেবে।
শফিকুল ইসলাম বলেন, মাগুরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থানান্তরিত হচ্ছে না। হাসপাতালটির উন্নয়নে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেশের অন্য একটি ভালো মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। মাগুরা মেডেকিলে কলেজ হাসপাতালটি খুবই ভালো মানের। ইতোমধ্যে মেডিকেল কলেজটি ফলাফলের দিক থেকে চারবার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে।
পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন- মাগুরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ অহিদুল ইসলাম, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ক ব আল হ স ন ম ড ক ল কল জ র জন ত ক আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
আরো পড়ুন:
নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা
সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।
বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।
অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ