Samakal:
2025-08-01@06:39:10 GMT

মন্টু-ঝন্টু ও পাখি রহস্য

Published: 18th, April 2025 GMT

মন্টু-ঝন্টু ও পাখি রহস্য

মন্টু-ঝন্টু দুই বন্ধু। একই স্কুলে একই শ্রেণিতে পড়ে। থাকেও একই এলাকায়। ঝন্টুর মামা ঢাকায় থাকেন। তবে অন্য এলাকায়। সেদিন ভোরে মামা ফোন দিয়ে জানালেন, তাদের পাশের বাসায় ডাকাত পড়েছে। এমন ঘটনা জানার পর ঝন্টুদের পরিবারের সবাই নড়েচড়ে বসে। ঝন্টুর মা কাজের খালা আফিয়ার মাকে ডেকে বলে দিলেন, ‘খবরদার! হুট-হাট দরজা খুলবা না। বেল বাজলে দরজার আই হোল দিয়ে দেখে পরিচিত হলে দরজা খুলবা; নাহয় আমাদের ডাকবা।’
আফিয়ার মাও মনে হলো ভয় পেয়েছেন। তিনি মাথা নেড়ে সম্মতি দিলেন, ‘জ্বে আম্মা। আইচ্ছা।’
রঞ্জু মামার পাশের বিল্ডিং-এর পাঁচ তলায় ডাকাতির ঘটনা ইন্টারেস্টিং বলেই মনে হলো ঝন্টুর। দিনে-দুপুরে ডাকাতির কথাটা আগে বই-পুস্তকে পড়েছে। এ ডাকাতিটা বাস্তবেই দিনে-দুপুরে ডাকাতি! ডাকাতরা ঢুকেছে যখন তখন দুপুর ১২টা ৫ মিনিট। একটা বিকট শব্দে পাশের ট্রান্সফরমারটা বিস্ফোরিত হওয়ায় বিদ্যুৎ চলে গিয়েছিলো। জেনারেটরের সাহায্যে লিফট চালু হলেও ডাকাতরা লিফটে না উঠে সিঁড়ি বেয়ে উঠেছিলো। এটি বোঝা গেছে ডাকাতদল চলে যাওয়ার পর অ্যাপার্টমেন্টের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে। পুলিশ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আসামি ধরার চেষ্টা করছে। বাসায় তখন একমাত্র কাজের খালা ছিলেন। খালা বয়স্ক হওয়ায় আর তাঁর মৃগী রোগ থাকায় ডাকাত দেখে দাঁত কপাটি লেগে গোঁ গোঁ করে জ্ঞান হারিয়ে ফেলায় ডাকাতদের কাজ করতে বেশ সুবিধা হয়েছে!
অজ্ঞান খালাকে বেঁধে রেখে বাসার আলমারির তালা ভেঙে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা সবই নিয়েছে তারা। জেনারেটরের শব্দে ডাকাতদের সুবিধা হয়েছে। কারণ, বাইরের কেউ আলমারির তালা ভাঙার শব্দ পায়নি। জেনারেটরের প্রচণ্ড শব্দ পাঁচতলা থেকে অতি সহজেই পাওয়া যাচ্ছিলো। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে আপাদমস্তক কালো বোরকায় ঢাকা দুই মহিলা ঢুকছে ওই ফ্ল্যাটে। সম্ভবত কাজের খালার কাছে সহজ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য এই বেশ ধারণ। ডাকাতরা লিফটে ওঠেনি। এর কারণ হতে পারে ডাকাত দু’জনের কোনো একজন এই অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের সবার কাছে পরিচিত। লিফটে উঠলে বোরকা পরা সত্ত্বেও কারও না কারও চোখে ধরা পড়ার আশঙ্কা থাকে! এই রিস্ক হয়তো ডাকাতরা নিতে চায়নি। ডাকাতির বাকি সব কিছুই ট্র্যাডিশনাল স্টাইলের সাথে মিলে গেছে। যেমন, ঘরে লোকজন কম থাকার সময়কে ডাকাতির জন্য বেছে নেওয়া। কাজের খালার সরলতা বা অসচেতনতার সুযোগে ঘরে ঢুকে পড়া। খালাকে বেঁধে রেখে টাকা-পয়সা, ধন-সম্পদ সব লুটে নেওয়া। শুধু একটা জায়গায় অমিল পাওয়া গেলো–তা হলো পাখি ডাকাতি। ওই ফ্ল্যাটে একটা পোষা তোতা ছিলো। ডাকাতরা তোতাটাকেও নিয়ে গেছে। ডাকাতদের মধ্যে কোনো একজনের হয়তো পাখি পছন্দ করতো। সেজন্যই নিয়েছে; মনে মনে ভাবলো ঝন্টু।
ডাকাতদের সবকিছুই খারাপ নয়– এরকম একটি বিষয় নিয়ে আলাপের জন্য মন্টুকে ফোন দেবে মনে করতে মন্টুর ফোন চলে এলো। মায়ের কাছ থেকে ফোনটা নিয়ে ‘হ্যালো’ বলতে উদ্বিগ্ন মন্টুর গলা শোনা গেলো।
একটু আগে আমাদের পাড়ায় একটা অদ্ভুত চুরি হয়েছে। চোর ঘরের কিছুই নেয়নি। শুধু দেয়ালে টাঙ্গানো একটি ছবি নিয়ে গিয়েছে।
বলিস কী! শুধু একটি ছবি নেওয়ার জন্য চোর ঢুকেছে?
হ্যাঁ। ছবিটি যে কোনো দামি ছবি তাও নয়। সাধারণ মোবাইল ক্যামেরায় তোলা ছবি প্রিন্ট করে বাঁধাই করা হয়েছে। একটি ময়না পাখির ছবি।
অবাক কাণ্ড! ঝন্টু আপন মনে বলে ওঠে। ডাকাতরা পাখি ডাকাতি করে; চোর চুরি করে পাখির ছবি। এ আবার কোন রহস্য!
ময়না চুরি না করে তার ছবি চুরি করেছে। কারণ কী? ঝন্টু জিজ্ঞেস করলো।
আরে ময়নাটা বাসায় ছিলো না। ময়নাসহ বাসার লোকজন গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলো বেড়াতে। চোর ঢুকে ছিলো ফাঁকা ঘরে। রান্নাঘরের ‍গ্রিল কেটে ঢুকেছিলো। বাড়ির দারোয়ান শব্দ পেয়ে ওপরে উঠে এসে তালা খুলে দেখে সব ঠিক আছে। শুধু ড্রয়িং রুম থেকে ময়না পাখির ছবিটা উধাও।
আশ্চর্যের বিষয় কি জানিস? মগবাজারে আমার মামার অ্যাপার্টমেন্টের ওপরের তলার এক ফ্ল্যাটেও গতকাল ডাকাতি হয়েছে। ডাকাতরা ঘরের সবকিছু নিয়েছে সাথে পোষা তোতা পাখিটাও।
তাহলে তো দুটো ঘটনার একটা জায়গায় মিল আছে। সেটি হলো পাখি। এবং দুটোই কথা বলা পাখি; টকিং বার্ড। ঝন্টু যোগ করলো।
কারেক্ট। এ থেকে একটি বিষয় পরিষ্কার হচ্ছে। কথা বলা পাখির মধ্যে মূল্যবান কিছু খুঁজে পেয়েছে চোর-ডাকাত সম্প্রদায়।
সিসি ক্যামেরার ভিডিও দেখে অভিযান চালালো দুই বন্ধু। তবে পুলিশ ডাকাত ভেবে তাদের ধরে নিয়ে গেলো থানায়। পরে তাদের কাছ থেকে সব শুনে সবাই তাদের প্রশংসা করে। আসল ডাকাতদের ধরে নেয় পুলিশ। ওদের কৌতূহলী মন আর সাহসের কারণে আন্তঃদেশীয় ডাকাত দলের সদস্যরা ধরা পড়ে। মূলত, এই ডাকাতদলই পাখি বিক্রি করে এবং পাখির মাধ্যমে বিভিন্ন বাসার গোপন তথ্য সংগ্রহ করে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

পাল্টা শুল্ক কার্যকরে নতুন সময়সূচি ঘোষণা ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া সর্বশেষ নির্বাহী আদেশে বিভিন্ন দেশের ওপর আরোপিত নতুন শুল্কহার কার্যকর হওয়ার সময়সূচিতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ৭ আগস্ট থেকে তা কার্যকর হবে।

এর আগে ট্রাম্প ১ আগস্টের মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি সম্পন্ন করার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন। তখন তিনি বলে দিয়েছিলেন, এ সময়ের মধ্যে চুক্তিতে না পৌঁছালে চড়া শুল্ক আরোপ করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বৃহস্পতিবার নতুন নির্বাহী আদেশে ৭০টির বেশি দেশের ওপর নতুন পাল্টা শুল্কহার ঘোষণা করেছেন। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সেগুলো আগামী সাত দিনের মধ্যে কার্যকর হবে।

যেসব পণ্য ৭ আগস্টের মধ্যে জাহাজে তোলা হবে বা বর্তমানে যাত্রাপথে রয়েছে এবং সেগুলো যদি ৫ অক্টোবরের আগে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছে যায়, তবে সেগুলোর ক্ষেত্রে শুল্ক প্রযোজ্য হবে না।

অবশ্য কানাডার ওপর যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত ৩৫ শতাংশ শুল্ক ১ আগস্ট অর্থাৎ আজ থেকেই কার্যকর হচ্ছে।

আরও পড়ুনকোন দেশে কত শুল্ক বসালেন ট্রাম্প৪ ঘণ্টা আগে

উত্তর আমেরিকার এই দুই প্রতিবেশী দেশ একে অপরের অন্যতম বড় বাণিজ্য সহযোগী হলেও ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে অস্বস্তিকর দ্বন্দ্ব তৈরি হয়।

কানাডা যেসব পণ্য রপ্তানি করে, তার প্রায় তিন-চতুর্থাংশই যায় যুক্তরাষ্ট্রে। ধাতব পদার্থ ও কাঠের পাশাপাশি কানাডা বিপুল পরিমাণে তেল, গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশ, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, খাদ্যপণ্য এবং ওষুধ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যারা বাণিজ্য চুক্তি করেনি, তাদের জন্য অনেক দেরি হয়ে গেছে: ট্রাম্প১ ঘণ্টা আগে

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি কানাডার সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা চালিয়ে যেতে আগ্রহী। তবে তিনি সতর্ক করেছেন, নতুন ৩৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগে আর কোনো চুক্তির সুযোগ নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ