মাগুরায় যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যাওয়া ৮ বছর বয়সী শিশু আছিয়াকে নিয়ে গান গাইলেন জনপ্রিয় সংগীত পরিচালক ও কণ্ঠশিল্পী বাপ্পা মজুমদার। ‘মাগুরার ফুল’ শিরোনামের গানটি লিখেছেন এবং সুর করেছেন স্বনামধন্য কবি, গীতিকার ও সুরকার মাহবুবুল খালিদ। হৃদয়স্পর্শী গানটিতে বাপ্পা মজুমদারের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়েছেন একঝাঁক তরুণ শিল্পী।

গত ৫ মার্চ মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী মাঠপাড়া গ্রামে বোনের বাড়ি বেড়াতে এসে যৌন নির্যাতনে গুরুতর অসুস্থ হয় আছিয়া। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৩ মার্চ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এর প্রতিবাদে এবং আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মাগুরাসহ সারা দেশে ব্যাপক আন্দোলন হয়। অমানবিক নির্যাতনে আছিয়ার মৃত্যুতে ব্যথাতুর হয়ে ওঠে প্রতিটি সচেতন মানুষের হৃদয়।

মাত্র ৮ বছর বয়সী শিশুর প্রতি এমন ভয়াবহ নির্যাতন ও তার করুণ মৃত্যুর ঘটনায় মর্মাহত হন মানবদরদী কবি, গীতিকার ও সুরকার মাহবুবুল খালিদ। তিনি এ ঘটনার প্রতিবাদে ‘মাগুরার ফুল’ শিরোনামে হৃদয়স্পর্শী একটি গান রচনা ও সুরারোপ করেন। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেজন্য মানুষকে সচেতন করার উদ্দেশ্যে গানটি লেখা। 

‘মাগুরার ফুল ছোট্ট মুকুল, ঝরে গেলো ফুটে ওঠার আগেই/ডাক্তার হবার স্বপ্নটা তার, নিভে গেলো পিশাচের এক ছোবলেই, এক ছোবলেই’-এমন কথামালায় গানটি শুরু হয়েছে। মাগুরার সেই শিশু আছিয়াসহ নির্যাতিত সব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এ গানের মাধ্যমে সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

সম্প্রতি গানটির ভয়েস রেকর্ডিং ও মিক্স-মাস্টারিংসহ অডিওর সব কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সংগীতাযোজনে ছিলেন শেখ পুলক ও রোমান রহমান। চন্দন রায় চৌধুরীর পরিচালনায় একটি মিউজিক ভিডিও নির্মাণ করা হচ্ছে। এ গানে বাপ্পা মজুমদারের সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন মৌটুসী খান, মৌলি মজুমদার এবং মৌমিতা বড়ুয়া।

গানটি খুব শিগগিরই মাহবুবুল খালিদের সংগীতবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘খালিদ সংগীত’ (www.

khalidsangeet.com)-এ প্রকাশ করা হবে। একই সঙ্গে ‘খালিদ সংগীত’ ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ এবং ‘মাহবুবুল এ খালিদ’ ফেসবুক পেজসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার করা হবে।

স্বনামধন্য কবি, গীতিকার ও সুরকার মাহবুবুল খালিদ সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গান লিখে থাকেন। ইতোমধ্যেই তার লেখা ৫ শতাধিক গান ‘খালিদ সংগীত’ (www.khalidsangeet.com) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। তার লেখা বেশিরভাগ গানে গীতিকার নিজেই সুরারোপ করেছেন।

‘মাগুরার ফুল’ গানে কণ্ঠ দেওয়ার বিষয়ে বাপ্পা মজুমদার বলেছেন, “মাগুরার ছোট্ট শিশু আছিয়ার মৃত্যুর ঘটনা আমাদের সবাইকে ব্যথিত করেছে। এরকম প্রচণ্ড নাড়া দেওয়া প্রতিটি ঘটনা কিছুদিন পর আমাদের মন থেকে মুছে যায়। ছাড় পেয়ে যায় এর সঙ্গে জড়িত পিশাচেরা। প্রথিতযশা গীতিকার মাহবুবুল খালিদ এই ঘটনাকে গানের মাধ্যমে এমনভাবে তুলে ধরেছেন, যা বার বার আমাদের বিবেককে নাড়া দেবে। এরকম ব্যতিক্রমী একটি গানে কণ্ঠ দিয়ে আমার ভীষণ ভালো লাগছে। আশা করি, গানটি সবার হৃদয় ছুঁয়ে যাবে।”

মাহবুবুল খালিদের লেখা এ ধরনের সচেতনতামূলক প্রতিবাদী আরো অনেক গান রয়েছে। নির্যাতিত ও হত্যার শিকার মানুষদের নিয়ে তার লেখা গানের মধ্যে রয়েছে ফেলানী, আদুরী ইত্যাদি।

ঢাকা/রাহাত/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক র ম হব ব ল খ ল দ

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে নতুন করে শুরু ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সোমবার সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ