সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়মিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দাবি
Published: 19th, April 2025 GMT
সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়মিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়ে তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিষদ। এক সপ্তাহের মধ্যে সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। দাবি মেনে নেওয়া না হলে কঠোর কর্মসূচি নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
আজ শনিবার দুপুরে নগরের চৌহাট্টা এলাকার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্রশাসনিক কর্মকর্তা কাজী মাসুদ। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত ২৩৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী বিনা বেতনে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সাবেক উপাচার্য এনায়েত হোসেন তাঁদের চাকরি স্থায়ীকরণের আশ্বাস দিলেও তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২৩ সালে দুই দফায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় এবং ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। তবে এখনো নিয়োগপ্রক্রিয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর সাবেক উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার গা ঢাকা দেন। পরে রেজিস্ট্রার ৩০ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করেন এবং ৭ নভেম্বর উপাচার্য ক্যাম্পাসে গেলে তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। প্রশাসনের অনুরোধে ১৫ দিনের মধ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবিদাওয়া মেনে নেওয়ার আশ্বাসে উপাচার্যকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অস্থায়ী কর্মকর্তা–কর্মচারীদের নিয়োগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন নাজমুল ইসলামকে সভাপতি করে ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়।
পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের অনুমোদনক্রমে ৬ ডিসেম্বর অনিয়মিত নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকরি নিয়মিতকরণের লক্ষ্যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়মিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্ধারিত ১৯ ডিসেম্বরের মধ্যে আবেদনপত্র জমা দেন। পরবর্তী সময়ে ৩১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি তাঁদের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়।
গত বছরের ২০ ডিসেম্বর সাবেক উপাচার্য এনায়েত হোসেন পদত্যাগ করেন। চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি নতুন উপাচার্য হিসেবে ইসমাইল হোসেন পাটোয়ারী যোগ দেন। তিনি যোগ দেওয়ার পর ১৬ মার্চ অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। ২৩ মার্চের সিন্ডিকেট সভায় তদন্ত কমিটির সভাপতি না থাকায় বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়নি। সিন্ডিকেট সভার পর থেকে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কার্যালয়ে আর অফিস করেননি। তিনি সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের স্বৈরাচারের দোসরদের দিয়ে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পঞ্চগড় সীমান্ত দিয়ে ৭ জনকে ঠেলে দিয়েছে বিএসএফ
পঞ্চগড় সদর উপজেলার একটি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে ৭ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তাদেরকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
শুক্রবার (১৩ জুন) সকালে নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটলিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিন সকালে উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের গোলাবাড়ি এলাকার সীমান্ত পিলার ৭৪৩ এর ১ নম্বর সাব পিলার সংলগ্ন এলাকা থেকে তাদের আটক করে বিজিবির টহল দল। এই সীমান্ত এলাকাটি নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটলিয়নের আওতাধীন।
জানা গেছে, শুক্রবার ভোর রাতে তাদেরকে পুশ-ইন করে ভারতের বালাচান ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা। আটক ৭ জনই বাংলাদেশের নাগরিক। এদের মধ্যে ২ জন পুরুষ, ৩ জন নারী ও ২ জন শিশু রয়েছে। তাদেরকে সদর থানায় হস্তান্তরের আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
আটককৃতরা হলেন- নড়াইলের কালিয়া উপজেলার জামরিল গ্রামের আফসার শেখের ছেলে অরিফুল ইসলাম (৩১), আরিফুল শেখের ছেলে ইমরান (১১) ও রায়হান শেখ (৭), একই গ্রামের মজিবুর রহমান মোল্লার মেয়ে রহিমা বেগম (৩০), সিদ্দিক মোল্লার মেয়ে খাদিজা বেগম (৩৬), একই উপজেলার বিস্টুপুর এলাকার আইনাল বিশ্বাসের ছেলে আল মামুন বিশ্বাস (৩০) এবং যশোরের অভয়নগর উপজেলার জয়েরা এলাকার তাহাজ্জুত খানের মেয়ে নাজমিন আক্তার (৪০)।
বিজিবি জানায়, আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, দীর্ঘদিন যাবত ভারতের অভ্যন্তরে অবৈধভাবে অবস্থান করে কাজ করছিলো তারা। সম্প্রতি তাদেরকে আটক করে ভারতীয় পুলিশ। পরবর্তীতে বালাচান বিএসএফ ক্যাম্প কর্তৃক তাদেরকে গেইট দিয়ে বের করে বাংলাদেশে পুশ-ইন করে। ঘটনার পরপরই বিজিবির টহল দল অভিযান ৭ বাংলাদেশিকে আটক করে। তাদেকে পঞ্চগড় সদর থানায় হস্তান্তর করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটলিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ বদরুদ্দোজা বলেন, আমাদের টহল দল সীমান্ত এলাকা থেকে পুশ-ইনকৃত ৭ জন বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করেছে। তাদের প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং আইনি প্রক্রিয়া শেষে থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ হিল জামান জানান, বিজিবি তাদের থানায় হস্তান্তর করলে আমরা পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
ঢাকা/নাঈম/টিপু