রূপগঞ্জে বিএনপির ছত্রছায়ায় আওয়ামী দোসর জাহাঙ্গীর ও সন্ত্রাসী রুবেল ফের বেপরোয়া
Published: 19th, April 2025 GMT
রূপগঞ্জে বিএনপির ছত্রছায়ায় আওয়ামী লীগের দোসর জাহাঙ্গীর ঢালী, সন্ত্রাসী রুবেল ফের বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে।
আওয়ামী শাসনামলে সাবেক মন্ত্রী শাহ জাহান খান ও মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর অনুসারি জাহাঙ্গীর ও সন্ত্রাসী রুবেল রূপগঞ্জে ত্রাসের রাজত্ব কায়েমসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ড সংগঠিত করে তারাবো বাজার ও আশপাশের এলাকার মূর্তিমান আতংক হয়ে উঠে। রুবেল ভুইয়া গড়ে তুলে বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী।
বর্তমানেও এ বাহিনী ভোলপাল্টিয়ে বিএনপির ছত্রছায়ায় পূর্বের ন্যায় অপরাধ কর্মকান্ড করে বেড়াচ্ছে। এ বাহিনীর ভয়ে কেউ কিছু বলতে সাহস পায়না। কেউ কিছু বললে তার রক্ষা নেই। রুবেল ভূইয়ার নেতৃত্বে এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, চাঁদাবাজি, লুটপাট, মাদক ব্যবসা, দখলসহ নানান অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে তার বাহিনী।
রুবেল তারাবো দক্ষিণ পাড়া এলাকার মৃত তমিজউদদীন ভূইয়ার ছেলে। তার বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি, লুটপাট, মাদক ব্যবসা, দখলসহ নানান অপকর্মে তিন ডজনেরও বেশি মামলা রয়েছে। সে একাধিকবার র্যাব-পুলিশের হাতে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তারও হয়েছিলো।
জাহাঙ্গীর ঢালী রূপগঞ্জ তারাবো টাটকি এলাকায় ৯ নং ওয়ার্ডে বসবাস করে যাত্রামুড়া নাসাগ্রুপে নিরাপত্তাকর্মীর চাকুরির পাশাপাশি রুবেলের সাথে নানা অপরাধ কর্মকান্ড করে যাচ্ছে। তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ, পিতার নাম জালাল ঢালী।
সে গোপালগঞ্জের পরিচয়ে আওয়ামী লীগের শাসনামলে সাবেক মন্ত্রী শাহ জাহান খানের সহচর হিসেবে জাতীয় গার্মেন্টস টেইলার্স ওয়াকার্স লীগের নেতা বনে এর প্রভাব খাটিয়ে নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন।
গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী সরকারের পতন ঘটলে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা চলে যায় আত্মগোপনে। এরকিছুদিন পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকলে জাহাঙ্গীর ঢালী, রুবেল ভুইয়া নিজেদের বিএনপির নেতাকর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে এলাকায় বিচরণ শুরু করে।
একপর্যায়ে যুবদলের সভাপতি আফজাল কবির ও রূপগঞ্জ তারাবো বিএনপির সভাপতি ওসমানের ছত্রছায়ায় রুবেল ও জাহাঙ্গীর নিজেদের স্বেচ্ছাসেবক দল ও যুবদলের নেতা পরিচয় দেয়া শুরু করে।
এ পরিচয়ে ফের অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েমসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ড সংগঠিত করে মূর্তিমান আতংক হয়ে উঠে। এ সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতেও সাহস পাচ্ছেনা।
বর্তমানে আবার রুবেল নিজেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দিপু ভুইয়ার ঘনিষ্ঠজন পরিচয়েও দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছেন। দিপু ভুইয়ার সাথে তার কিছু ছবি দেখিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝেও সৃষ্টি করছে আতংক।
এভাবে বিএনপি ও যুবদলের শীর্ষ নেতাদের নাম ব্যবহার করে নানান অপকর্ম করায় বিএনপির সুনাম ব্যাপকভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে দাবি বিএনপির ত্যাগী ও সাধারণ নেতাকর্মীদের।
এছাড়াও রুবেল ভূইয়া ও তার বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ও গ্রেপ্তারী পরোয়ানা থাকার পরও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নিরব ভূমিকা পালন করায় বিষ্ময় প্রকাশ করছে ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীরা।
একাধিক সূত্র জানায়, রুপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী এবং এমপি গোলাম দস্তগীর গাজীর বেতনভুক্ত সন্ত্রাসী ছিলো রুবেল ভূইয়া। তাকে নিয়ন্ত্রন করত রূপগঞ্জ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহের ভুইয়া।
মেহের ভুইয়ার আস্ফালনে মন্ত্রী গাজীর ছত্রছায়ায় তার সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ব্যাপক করার লক্ষ্যে একটি শক্তিশালী বাহিনী গঠন করেছে। তার বাহিনীর অন্যতম সদস্যরা হলো শ্রাবণ ও কুত্তা মাসুদ। তাদের অধিনে রয়েছে ৪০/৪৫ জনের একটি বিশাল সন্ত্রাসী গ্রুপ।
এবাহিনীর বিরুদ্ধে গত ১৬ বছর বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, জমি দখল, বিচার শালিশের নামে হয়রানি, আওয়ামী লীগ কর্মী বানানোর হুমকি দিয়ে অবৈধ সুবিধা গ্রহন, প্রকৃত বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি করার একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
রুবেল ভূইয়া সাবেক মন্ত্রী গাজী এমপির মাসিক ৭০ হাজার টাকার বেতন ভূক্ত সন্ত্রাসী হয়েও সে নিজেসহ জাহাঙ্গীর ও তাদের বাহিনীর সদস্যরা গত ৫ আগষ্ট গাজীর শিল্প প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট করতেও দ্বিধাবোধ করেনি।
জাহাঙ্গীর ঢালী ও রুবেল ভূইয়ার হাত থেকে রক্ষা পেতে অবিলম্বে তাদের শেল্টার দাতা এবং সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনে রুপগঞ্জ উপজেলা ও থানা বিএনপির শীর্ষ নেতা সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ব এনপ ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ স ব ক মন ত র র পগঞ জ ব এনপ র অপকর ম ত কর ম এক ধ ক ব যবস আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
মতলবের দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি-দখলদারির অভিযোগ, দল থেকে বহিষ্কার
চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার বিএনপির দুই নেতাকে দলের সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
চাঁদাবাজি, দখলদারি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা ধরনের অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ওই দুজনের বিরুদ্ধে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
বহিষ্কৃত নেতারা হলেন মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌর বিএনপির সহসভাপতি আবদুল মান্নান লস্কর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া। এর মধ্যে মতলব উত্তরের আবদুল মান্নান লস্করকে চাঁদাবাজির মামলায় গত সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি এখন কারাগারে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আবদুল মান্নান লস্কর ও আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়াকে চাঁদাবাজি, দখলদারি ও মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই একই অভিযোগে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইমাম হোসেন গাজীকেও দলের সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহম্মেদের (মানিক) মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে মতলব উত্তর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম বলেন, ওই দুই নেতাকে বহিষ্কারের বিষয়টি জেনেছেন। তবে এ ব্যাপারে চিঠি এখনো পাননি। যেকোনো বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এটি অন্যান্য নেতার জন্যও একটি বার্তা ও শিক্ষা।