পূর্বে উদিত সূর্যের কড়া তাপের দিনে বাংলাদেশের ক্রিকেট আকাশে নতুন কিছু শুরুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দল। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ২৫ বছরে যা গড়ে উঠেনি টেস্ট সংস্কৃতি, সেটাই নতুন করে শুরুর ঘোষণা মিলেছিল অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর কণ্ঠে।
আত্মবিশ্বাসী ক্রিকেট খেলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেল্ফ ক্রিকেট থেকে বেরিয়ে ঐক্যবদ্ধ লড়াই করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে হোক বা দক্ষিণ আফ্রিকা, এক দাঁড়িপাল্লায় মেপে প্রতিটি বল বুক চিতিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু ২২ গজে দেখা মিলল গা-ছাড়া ক্রিকেটের। তাতে টেস্ট সংস্কৃতি গড়ে তোলার যে অভিপ্রায় তা ভেস্তে গেছে প্রথম সুযোগে।
নিবেদনে প্রবল ঘাটতি, হতশ্রী ব্যাটিং প্রদর্শনী ও লড়াইয়ের জেদের অভাব। তাতে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম দিনটি জিম্বাবুয়ে নিজেদের করে নিয়েছে। সময় যত গড়িয়েছে, মধ্য গগন থেকে সূর্য পশ্চিমে যতটা হেলেছে বাংলাদেশের সম্ভাবনার সূর্যও ডুবেছে অতলে।
আরো পড়ুন:
অবশেষে জিম্বাবুয়ে সিরিজ সম্প্রচারকারী চ্যানেল পেলো বিসিবি
সিলেট ও চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট
টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত দিয়ে মাত্র ১৯১ রানে অলআউট বাংলাদেশ। ধারহীন বোলিংয়ের বিরুদ্ধে জবাব দিতে নেমে জিম্বাবুয়ে কোনো উইকেট না হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৬৭ রান তুলে রাঙিয়েছে প্রথম দিন। ১০ উইকেট হাতে রেখে দিন শেষ করার স্বস্তিতে মুখে চওড়া হাসি অতিথি শিবিরে।
সাদা পোশাকের ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যর্থতার গল্পগুলো একই রকম। ব্যাটিং ব্যর্থতায় হতাশার সমুদ্রে হারিয়ে যাওয়া। বোলিংয়ে শেষ কয়েক বছর লড়াই করলেও ব্যাটিং মাথা ব্যথার কারণ। কালেভাদ্রে হাসে ব্যাট। বেশিরভাগ সময়ই থাকে আড়ালে। সিলেটের ২২ গজে আজকের দিনটা ছিল তেমনই।
যদিও বোলারদের এখানে ক্রেডিট দেওয়ার সুযোগ সামান্য। জিম্বাবুয়ের বোলাররা আহামরি বোলিং করেননি যে বাংলাদেশ ৬১ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ফেলবে। অতীত রেকর্ডও বিশ্রী। এই টেস্টের আগে অলআউট হওয়া দশ ইনিংসের মধ্যে ছয়টিতেই দুইশ ছুঁতে পারেনি।
যার শুরুটা ওপেনিং জট থেকে। সবশেষ ৩১ ইনিংসে উদ্বোধনী জুটিতে কোনো সেঞ্চুরি আসেনি। এবার ৩১ রানেই উদ্বোধনী জুটিতে ফাটল। সাদমান স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরার ১ রান পরই মাহমুদুল হাসান জয় উইকেটের পেছনে তালুবন্দি হন। প্রথম সেশনে আর কোনো বিপদ বাদেনি। কিন্তু দ্বিতীয় সেশনেই সব ওলটপালট। উইকেট আহামরি কঠিন ছিল না। ব্যাটিংয়ের জন্য সহজ ছিল। জিম্বাবুয়ের বোলাররাও আহামরি বোলিং করেননি যে ব্যাটিংয়ে ধস পড়বে।
আত্মঘাতি শটে উইকেট উপহার দিয়ে না আসলে ব্যাটসম্যানদের আউট করা কঠিন ছিল। অতিথিদের জন্য কাজটা সহজ করে দেন অধিনায়ক শান্ত (৪০), মুশফিকুর (৪), মুমিনুল (৫৬) ও মিরাজ (১)। তাদের পথ অনুসরণ করেন তাইজুল (৩)। ৪৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চরম বিপদে পড়ে বাংলাদেশ।
সেখান থেকে তুলে দাঁড়ানোর শক্তি লেজের ব্যাটসম্যানদের ছিল না। জাকের আলীর ২৮, হাসান মাহমুদের ১৯ রান স্কোরবোর্ড কিছুটা সমৃদ্ধ করে। ওতোটুকুই যা লড়াই। টেস্টে স্কোরবোর্ড সমৃদ্ধ করে ব্যাটিং জুটি। শুরুর দুই ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফেরার পর তৃতীয় উইকেটে মুমিনুল ও শান্ত ১২৮ বলের জুটি গড়েছিলেন। ৬৬ রান আসে তাদের জুটিতে। যা দলের পক্ষে ছিল সর্বোচ্চ। বাকিটা সময়ে কেবল ছিল আসা-যাওয়ার মিছিল।
একই উইকেটে জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা ১৪.
ব্যাকফুটে থাকা বাংলাদেশ দ্বিতীয় দিন ফিরতে না পারলে টেস্টের প্রথম ইনিংসেই ম্যাচের এপিটাফ লিখে নিয়েছে ধরে নেওয়াই যাবে।
ঢাকা/আমিনুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রথম য টসম উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে বন্দুক হামলায় তিন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরো দুই পুলিশ।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ২টার কিছু পর এক পারিবারিক বিরোধের তদন্তে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে পুলিশ। খবর বিবিসির।
আরো পড়ুন:
শেরপুরে পুলিশের উপর হামলা: থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪
ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ ও থানায় হামলা, ভাঙচুর-আগুন
পেনসিলভানিয়া স্টেট পুলিশের কমিশনার কর্নেল ক্রিস্টোফার প্যারিস জানান, অভিযুক্ত বন্দুকধারী পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে।
গুলির ঘটনার পর ইয়র্ক কাউন্টির নর্থ কোডোরাস টাউনশিপের স্প্রিং গ্রোভ এলাকার একটি স্কুল জেলা সাময়িকভাবে ‘শেল্টার ইন প্লেস’ ঘোষণা করে। তবে পরে জানানো হয়, স্কুল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জনসাধারণের জন্য বর্তমানে কোনো সক্রিয় হুমকি নেই। এ ঘটনা ঘটে ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১০০ মাইল (১৬০ কিমি) পূর্বে অবস্থিত ইয়র্ক কাউন্টির এক গ্রামীণ এলাকায়।
তারা বলছে, আগের দিন শুরু হওয়া একটি তদন্তের অংশ হিসেবে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। তবে তদন্ত চলমান থাকায় বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা হয়নি।
পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জোশ শাপিরো বিকেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, “আমরা তিনজন মহামূল্যবান প্রাণ হারালাম, যারা এই দেশকে সেবা দিয়েছেন। এই ধরনের সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সমাজ হিসেবে আমাদের আরো ভালো করতে হবে।”
নিহত তিন কর্মকর্তার সম্মানে গভর্নর শাপিরো রাজ্যের সব সরকারি ভবন ও স্থাপনায় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেন।
ঢাকা/ইভা