রূপগঞ্জে সরকারি অফিসকে টার্গেট করে সক্রিয় মোটরসাইকেল চোর চক্র, আতঙ্ক
Published: 21st, April 2025 GMT
রূপগঞ্জে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মোটরসাইকেল চোরচক্রের সদস্যরা। বিশেষ করে দামী ব্যান্ডের মোটরসাইকেল চুরি করাই যেনো থাকে তাদের মূল লক্ষ্য। উপজেলা পরিষদ-ভুমি অফিসসহ গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা-ঘাটে থাকে তাদের উৎপাত।
গেলো এক মাসে রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদে সেবা নিতে আসা লোকজনের দামী ব্রান্ডের অন্তত ৩টি মোটরসাইকেল চুরি করে নিয়ে গেছে এ চোরচক্রের সদস্যরা।
সোমবার দুপুরে রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ ভবনের প্রধান ফটকের সামনে থেকে ভোলাব ইউপি সদস্য মো.
উপজেলা আঙ্গীনা সহ আশপাশের কয়েকটি সিটি টিভি ফুটেজে দেখা যায়, প্যান্ট-শার্ট পড়া ও মুখে মাস্ক পড়ে উপজেলা পরিষদের ভবন সহ আশপাশে ঘুরাফেরা করছে সক্রিয় চোর সদস্যরা।
এক পর্যায়ে আশপাশ ফাঁকা বুঝে পৃথকস্থান থেকে একই কৌশলে ২টি মোটরসাইকেলের তালা ভেঙ্গে চুরি করে নিয়ে যায় চোর সদস্যরা। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় প্রথক ভাবে ২টি অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগী ভোলাব ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার বাদশা মিয়া জানান, দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদ ভবনের এলজিআরডি অফিসে জরুরী কাজ করতে আসেন তিনি।
কাজ শেষ করে ১ টা ২০ মিনিটে উপজেলা পরিষদের ভবন থেকে নেমে দেখেন তার মোটরসাইকেল ইয়ামাহা-এফজেড ভার্সন-২ (ঢাকা মেট্রো-ল-৪১৮৩৬০) মোটরসাইকেলটি নেই।
আশপাশে খুঁজাখুজির পর উপজেলা পরিষদের সিটি টিভি ফুটেজ দেখে জানতে পারেন মোটরসাইকেলটি তালা ভেঙ্গে চুরি করে নিয়ে গেছে চোরচক্রের সদস্যরা। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
আরেক ভুক্তভোগী শরিফ ভুঁইয়া জানান, দুপুর ১২টা ৪৫মিনিটের দিকে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন কমিশনারের ভবনের সামনে পালসার ১৫০ সিসি মোটরসাইকেলটি রেখে কাজ করছিলেন।
কাজ শেষে ফিরে এসে তিনিও মোটসাইকেলটি খুঁজে না পেয়ে উপজেলা পরিষদের সিসি টিভি ফুটেজ দেখে জানতে পারেন একই কায়দায় মোটরসাইকেলটির তালা ভেঙ্গে একইচক্রের চোর সদস্যরা মোটরসাকেলটি চুরি করে নিয়ে গেছে।
বিগত দিনে, উপজোলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অফিসের সামনে থেকে অসংখ্য মোটরসাইকেল চুরি করে নিয়ে গেছে এ চক্রটি। একটি ঘটনারও রহস্য বা চোরচক্রকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তাই দিনদিন ব্যপরোয়া হয়ে উঠেছে চোরচক্রের সদস্যরা।
এসব বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত আলী জানান, অভিযোগ পেয়েছি। চোরচক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: সরক র র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ র পগঞ জ র স মন উপজ ল আশপ শ
এছাড়াও পড়ুন:
মানবাধিকারের প্রতিশ্রুতি দিল র্যাব, চায় সাইবার ইউনিট
অপরাধের ধরন বদলে যাচ্ছে। অভিনব কৌশলে সক্রিয় সাইবার অপরাধীরা। প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলা করা নতুন চ্যালেঞ্জ। এ জন্য স্বতন্ত্র সাইবার ইউনিট চেয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
পুলিশ সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন গতকাল বুধবার কর্মপরিকল্পনার সারসংক্ষেপ তুলে ধরে বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট। সেখানে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), র্যাবসহ একাধিক ইউনিট একুশ শতকের জটিল অপরাধ ও তা নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তিগত প্রস্তুতির বিষয়টি সামনে আনে। গতকাল পুলিশের যে ইউনিটগুলো পরিকল্পনা তুলে ধরেছে, তা হলো হাইওয়ে পুলিশ, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), নৌ পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), শিল্প পুলিশ, র্যাব, অ্যান্টিটেররিজম ইউনিট, রেলওয়ে পুলিশ ও সিআইডি।
কীভাবে প্রত্যন্ত এলাকার ভুক্তভোগী র্যাবের সহযোগিতা পেতে পারেন, সে বিষয়টি উপস্থাপন করেন বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) এ কে এম শহিদুর রহমান। তিনি দ্রুত গুজব প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থার ওপর জোর দেন। র্যাবের জন্য আলাদা একটি সাইবার ইউনিটের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেন। র্যাব জনবান্ধব হওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে র্যাবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে ডিজি বলেন, ‘কার্যক্রমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও মানবাধিকার বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ র্যাব। অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে তদন্ত সেলকে শক্তিশালী করা হয়েছে। একটি মানবাধিকার সেলও গঠন করা হয়েছে।’
রুদ্ধদ্বার বৈঠকে উপস্থিত সূত্রের মতে, র্যাব ডিজির উপস্থাপনায় মূলত বাহিনীর অর্জনগুলো তুলে ধরা হয়।
সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিআইডি ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়। সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি (ভারপ্রাপ্ত) গাজী জসীম অনুষ্ঠানে জানান, জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী মামলার অনুসন্ধানে সিআইডি বিশেষ টিম গঠন করেছে। সাবেক মন্ত্রী, প্রভাবশালীদের সন্দেহজনক সম্পদের উৎস ও প্রকৃতি নিয়ে নিবিড়ভাবে চলছে তদন্ত। এস আলম, বেক্সিমকো, বসুন্ধরা, নাবিল, ইউনিক, সিকদার গ্রুপসহ কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা ও অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। এ সময় প্রায় ৫ হাজার ৮০০ শতাংশ জমি ও হাজার কোটি টাকা মূল্যের সম্পদ শনাক্ত করা হয়েছে। কক্সবাজারের টেকনাফের একটি মামলায় ১০ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করা হয়েছে।
সিআইডির উপস্থাপনায় আরও বলা হয়, ফরেনসিক শাখা দিন দিন অপরাধ বিশ্লেষণের নির্ভরযোগ্য কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। জনবল, সরঞ্জাম এবং অর্থের সীমাবদ্ধতার পাশাপাশি সিআইডিতে আছে কাঠামোগত ও প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ। কোনো জেলা ইউনিটে একটিও অপারেশনাল যানবাহন নেই। এ ছাড়া অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে অনিয়মিত বদলি আতঙ্ক রয়েছে। সাইবার পুলিশ সেন্টারে রয়েছে সরঞ্জামের অভাব। ফরেনসিক ল্যাবে সফটওয়্যারের জন্য বাজেট-স্বল্পতার কথা তুলে ধরেন তারা।
হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে পণ্য ও যাত্রী পরিবহনে নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেওয়া হয়। মহাসড়কে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই প্রতিরোধে চলমান কার্যক্রম তুলে ধরা হয়েছে। বর্তমানে মহাসড়কের সিসিটিভি থেকে হাইওয়ে পুলিশ ডিজিটাল অটো ফাইন সিস্টেম, ট্রাফিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, ক্লোন নাম্বারপ্লেট শনাক্ত, হাইস্পিড ডিটেকশন করে থাকে।
এর আগে মঙ্গলবার পুলিশ সপ্তাহের প্রথম দিন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পক্ষ থেকে তাদের কর্মকাণ্ড ও পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়। সেখানে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৩(২) ধারায় তালিকাভুক্ত ব্যক্তিকে ডিটেনশনে (নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিনা বিচারে আটক রাখা) নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং পরিস্থিতির অবনতি যেন না ঘটে, সে জন্য তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের ডিটেনশনে নেওয়া উচিত। সরকারের অনুমতি পেলে এসবির পক্ষ থেকে তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের বিস্তারিত জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হবে। ডিটেনশনে নেওয়ার জন্য যাদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে, তাদের কেউ কেউ পেশাদার অপরাধী।