শাহরুখের সঙ্গে বিবাদের গুঞ্জনে মুখ খুললেন নির্মাতা রোহিত
Published: 22nd, April 2025 GMT
‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’ সিনেমা বিশাল সাফল্যের পর ‘দিলওয়ালে’ সিনেমায় একসঙ্গে কাজ করেছিলেন শাহরুখ খান ও নির্মাতা রোহিত শেঠি। তবে দ্বিতীয় ছবিটি বক্স অফিসে তেমন সফল না হওয়ায় তাঁদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে-এমন গুঞ্জন বহুদিন ধরেই বলিউডে ঘুরছে। অবশেষে রোহিত শেঠি নিজেই সে গুঞ্জনের জবাব দিলেন।
‘গেম চেঞ্জার্স’ পডকাস্টে কোমল নাহতার সঙ্গে আলাপচারিতায় রোহিত স্পষ্টভাবে বলেন, ‘না, শাহরুখের সঙ্গে এমন কিছুই হয়নি।’
শাহরুখ খানের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব নেই ব্যাখ্যা করে রোহিত বলেন, “আমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্মান আগেও ছিল সেটা এখনও বজায় রয়েছে। ‘দিলওয়ালে’ সিনেমার পর আমরা ঠিক করি নিজেদের প্রোডাকশন হাউজ খুলব এবং নিজেরাই সিনেমা তৈরি করব। যদি ক্ষতি হয়, সেটাও আমাদেরই হোক। যদিও ‘দিলওয়ালে’ তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।”
রোহিত জানান, ‘দিলওয়ালে’ হয়তো ভারতের বাজারে প্রত্যাশা অনুযায়ী চলেনি, কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে এটি ছিল একটি বড় সফলতা। ছবিটি শাহরুখ ও গৌরী খানের প্রযোজনা সংস্থা রেড চিলিজ এন্টারটেইনমেন্ট এর ব্যানারে নির্মিত হয়েছিল।
রোহিত শেঠি আরও জানান, চলচ্চিত্র দুনিয়ায় গড়ে ওঠা সম্পর্কগুলো তাঁর কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। অজয় দেবগনের সঙ্গে তাঁর ভাইয়ের মতো সম্পর্ক, যেখানে অজয়কে তিনি বড় ভাই হিসেবেই দেখেন। পাশাপাশি রণবীর সিং ও দীপিকা পাডুকোনের সঙ্গেও তাঁর গভীর বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে।
দীপিকার পেশাদারিত্বের প্রশংসা করে রোহিত বলেন, “সে ‘সিংগাম এগেইন’ এর শেষ শিডিউলের শুটিং শেষ করেছে যখন সে চার মাসের গর্ভবতী। এমন সম্পর্ক সত্যিই খুব বিরল।”
বর্তমানে শাহরুখ খান তাঁর নতুন ছবি ‘কিং’ সিনেমা নিয়ে ব্যস্ত, যেখানে প্রথমবার তিনি মেয়ে সুহানা খানের সঙ্গে পর্দা ভাগ করতে যাচ্ছেন। সিদ্ধার্থ আনন্দ পরিচালিত এই ছবিতে আরও থাকছেন অভিষেক বচ্চন ও অভয় বার্মা।
অন্যদিকে রোহিত শেঠি ব্যস্ত রয়েছেন ‘সিংহাম এগেইন’ নিয়ে-তাঁর জনপ্রিয় ‘কপ ইউনিভার্স’-এর নতুন কিস্তি, যেখানে দেখা যাবে একঝাঁক তারকাকে।
এই খোলামেলা বক্তব্যের পর রোহিত ও শাহরুখের সম্পর্কে ভাঙনের গুজব কার্যত বন্ধ হয়ে গেল বলেই মনে করছেন বলিউডের অনেকে। সূত্র: বলিউড হাঙ্গামা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: দ লওয় ল
এছাড়াও পড়ুন:
মানব পাচার প্রতিরোধে প্রয়োজন সরকার ও সমাজের সমন্বিত পদক্ষেপ
মানব পাচার প্রতিরোধ একক কোনো প্রতিষ্ঠান, প্রকল্প কিংবা মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়। সরকার ও সমাজের সবার সক্রিয় অংশগ্রহণের ভিত্তিতে মানব পাচার প্রতিরোধ করতে হবে। এ ছাড়া সংঘবদ্ধ পাচারচক্র নিশ্চিহ্ন করতে হলে দেশে শক্ত আইনি কাঠামো তৈরি করতে হবে।
বিশ্ব মানব পাচারবিরোধী দিবস-২০২৫ পালন উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন। সুইজারল্যান্ডের সহায়তায় উইনরক ইন্টারন্যাশনালের বাস্তবায়ন করা ‘আশ্বাস’ প্রকল্পের আওতায় বৃহস্পতিবার এ আলোচনার আয়োজন করা হয়।
এবারের বিশ্ব মানব পাচারবিরোধী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সংঘবদ্ধ অপরাধ মানব পাচার, বন্ধ হোক শোষণের অনাচার’। এ প্রতিপাদ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ‘সমন্বিত উদ্যোগে বন্ধ হোক নির্যাতন: সম্মিলিত কণ্ঠস্বর ও অংশীদারত্বের ভিত্তিতে হোক পরিবর্তন’ শীর্ষক ওই আলোচনার আয়োজন করা হয়।
আলোচনায় সরকারি কর্মকর্তা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতিনিধি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যমকর্মী, পাচারের শিকার ব্যক্তি ও তৃণমূলের মানব পাচারবিরোধী কর্মী অংশগ্রহণ করেন।
আলোচনায় পাচার থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি ও মানব পাচার প্রতিরোধে সক্রিয় কর্মীদের বক্তব্যে মাঠপর্যায়ের বাস্তবতা উঠে আসে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর আমন্ত্রিত অতিথিরা ফিতা কেটে প্রদর্শনী স্টল উদ্বোধন করেন। এসব স্টলে পাচার থেকে বেঁচে ফেরাদের তৈরি করা পণ্য ও পোশাক প্রদর্শিত হয়।
উদ্বোধনী আলোচনার পর ‘মানব পাচার প্রতিরোধ ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বিচার বিভাগের ভূমিকা’ শীর্ষক একটি প্যানেল আলোচনা হয়। এতে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতিনিধি, সরকারি আইনজীবী, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, পাচার থেকে বেঁচে ফেরাদের প্রতিনিধি এবং মানব পাচার প্রতিরোধে সক্রিয় কর্মীদের সমন্বয়ে গঠিত প্যানেলে আলোচনা হয়। আলোচনায় বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রয়োজনীয়তা, মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি এবং পাচার থেকে বেঁচে ফেরাদের আইনি সহায়তা ও ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকার নিয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়।
এরপর ‘মানব পাচার প্রতিরোধ ও ভুক্তভোগীদের অধিকার রক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগ’ শীর্ষক আরও একটি প্যানেল আলোচনা হয়। এ আলোচনায় আলোচকেরা সম্মিলিতভাবে মানব পাচার প্রতিরোধে কার্যকর কৌশল নির্ধারণ এবং ভুক্তভোগীবান্ধব ও মানবিক সহায়তা কাঠামো গড়ে তোলার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন।
এ আলোচনায় সচেতনতামূলক কার্যক্রমের জন্য অঞ্চলভিত্তিক জনপ্রিয় টুলস তৈরি, সাইবার-ট্রাফিকিং প্রতিরোধে ডিজিটাল নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অংশীদারত্বের ভিত্তিতে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমেই টেকসই পুনরেকত্রীকরণ নিশ্চিতের বিষয়গুলো উঠে আসে।
এ আয়োজন ‘আশ্বাস’ প্রকল্পের সারভাইভার লিডার (পাচার থেকে বেঁচে ফেরা), যাঁরা অন্য সব সারভাইভার জন্য একটি আশার আলো হিসেবে কাজ করছেন এবং মানব পাচার প্রতিরোধে সক্রিয় কর্মীরা, যাঁরা মানব পাচার প্রতিরোধে নিজেদের এলাকায় বিশেষ অবদান রাখছেন, তাঁদের সম্মাননা দেওয়া হয়।
আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মমতাজ আহমেদ, ঢাকায় সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স কহিন অশ পিনইয়ানি, এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক দাউদ মিয়া, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব লুৎফুন্নাহার ও প্রাণ–আরএফএল গ্রূপের পরিচালক উজমা চৌধুরী প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন। আলোচনায় সমাপনী বক্তব্য দেন উইনরক ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টিভ বাংলাদেশ ও আশ্বাসের প্রকল্প পরিচালক দীপ্তা রক্ষিত।