জুলাই-আগস্টের গ্রাফিতি মুছে ফেলা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। এতে দু’জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। সোমবার দুপুরে পাবনার ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- ছাত্র মাহবুবুর রহমান জিহাদ ও তানজিদ জামান দিহান। ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। দিহান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঈশ্বরদী উপজেলা সমন্বয়ক বলে জানা গেছে।

ঘটনার পর ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীর মধ্যে ধাওয়া, বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন এবং পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছেন ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

সম্প্রতি ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের দেয়ালে জুলাই-আগস্ট গ্রাফিতি মুছে ফেলা হয়। সেখানে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের নাম লেখা হয়। এর প্রতিবাদে সোমবার মানববন্ধনের আয়োজন করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। 

অন্যদিকে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের কর্মী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যার ঘটনায় বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এতে নেতৃত্ব দেন জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম নয়ন। বক্তব্য দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা মাহবুবুর রহমান পলাশ, ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র আনোয়ার হোসেন জনি, খন্দকার তৌফিক আলম সোহেল, মামুনুর রহমান নান্টু প্রমুখ।

সমাবেশের একপর্যায়ে উভয়পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিলে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেন। অধিকাংশ দৌড়ে পালিয়ে গেলেও কয়েকজন আহত হন।

আহত তানজিদ জামান দিহান বলেন, ঈশ্বরদীর বিভিন্ন দেয়ালে আঁকানো গ্রাফিতি মুছে ফেলা ও জুলাই অভ্যুত্থানকে মুছে ফেলার প্রতিবাদে আমাদের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি প্রতিহত করতে ছাত্রদল নেতা রফিকুল ইসলাম নয়ন প্রকাশ্যে তার লোকজন নিয়ে হামলা চালিয়েছে।  

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিতে সোমবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করে ঈশ্বরদী উপজেলা, পৌর ও কলেজ ছাত্রদল। ঈশ্বরদী প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম নয়ন।

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয় ছাত্রদলের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি বানচাল করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসীরা মানববন্ধন করার চেষ্টা করেছিল, যা ছাত্রজনতা প্রতিহত করেছে।

ঈশ্বরদী থানার ওসি শহিদুল ইসলাম শহিদ বলেন, ছাত্রদের ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ এলাকায় উত্তেজনা ও ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এসব ঘটনায় কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ করেনি বলে জানান ওসি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প বন ব এনপ ছ ত রদল র ন ত কর ম র ছ ত রদল র ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে ‍শিবচর থানায় মামলাটি করেন।

এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।

মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রস্তাবিত কাঠামোয় বিশ্ববিদ্যালয় চান না সাত কলেজের শিক্ষকেরা
  • দুর্গাপূজায় অরাজকতা রোধে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান মহিলা পরিষদের
  • বন কর্মকর্তার ১৭ বিয়ে: আদালতে মামলা, তদন্তে পিবিআই
  • শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
  • সুনামগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান পরিবর্তনের দাবিতে ৫টি পরিবেশবাদী সংগঠনের মানববন্ধন
  • ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবিতে মানববন্ধন
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তাঁর মাকে হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন