গ্রাফিতি মুছে বিএনপি নেতাদের নাম, প্রতিবাদ করায় হামলার অভিযোগ
Published: 22nd, April 2025 GMT
জুলাই-আগস্টের গ্রাফিতি মুছে ফেলা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। এতে দু’জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। সোমবার দুপুরে পাবনার ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- ছাত্র মাহবুবুর রহমান জিহাদ ও তানজিদ জামান দিহান। ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। দিহান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঈশ্বরদী উপজেলা সমন্বয়ক বলে জানা গেছে।
ঘটনার পর ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীর মধ্যে ধাওয়া, বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন এবং পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছেন ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
সম্প্রতি ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের দেয়ালে জুলাই-আগস্ট গ্রাফিতি মুছে ফেলা হয়। সেখানে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের নাম লেখা হয়। এর প্রতিবাদে সোমবার মানববন্ধনের আয়োজন করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের কর্মী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যার ঘটনায় বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এতে নেতৃত্ব দেন জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম নয়ন। বক্তব্য দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা মাহবুবুর রহমান পলাশ, ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র আনোয়ার হোসেন জনি, খন্দকার তৌফিক আলম সোহেল, মামুনুর রহমান নান্টু প্রমুখ।
সমাবেশের একপর্যায়ে উভয়পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিলে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেন। অধিকাংশ দৌড়ে পালিয়ে গেলেও কয়েকজন আহত হন।
আহত তানজিদ জামান দিহান বলেন, ঈশ্বরদীর বিভিন্ন দেয়ালে আঁকানো গ্রাফিতি মুছে ফেলা ও জুলাই অভ্যুত্থানকে মুছে ফেলার প্রতিবাদে আমাদের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি প্রতিহত করতে ছাত্রদল নেতা রফিকুল ইসলাম নয়ন প্রকাশ্যে তার লোকজন নিয়ে হামলা চালিয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিতে সোমবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করে ঈশ্বরদী উপজেলা, পৌর ও কলেজ ছাত্রদল। ঈশ্বরদী প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম নয়ন।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয় ছাত্রদলের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি বানচাল করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসীরা মানববন্ধন করার চেষ্টা করেছিল, যা ছাত্রজনতা প্রতিহত করেছে।
ঈশ্বরদী থানার ওসি শহিদুল ইসলাম শহিদ বলেন, ছাত্রদের ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ এলাকায় উত্তেজনা ও ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এসব ঘটনায় কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ করেনি বলে জানান ওসি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প বন ব এনপ ছ ত রদল র ন ত কর ম র ছ ত রদল র ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
চামড়াশিল্প ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে
কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে পতিত ফ্যাসিস্ট আমলের পুরোনো চক্র ও সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলন। এই সিন্ডিকেট ও চামড়াশিল্প ধ্বংসের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংগঠনটি আয়োজিত ‘চামড়া শিল্পের নৈরাজ্য ও সিন্ডিকেট রুখো’ শীর্ষক মানববন্ধনে এসব কথা বলা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক মির্জা শরিফুল আলম। সভায় বক্তব্য দেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান, কলামিস্ট মীর আবদুল আলীম, রাজনীতিবিদ নুরুজ্জামান হীরা, মানবাধিকারকর্মী আব্দুল্লাহ আল-মামুন প্রমুখ।
কয়েক বছর ধরে কাঁচাচামড়ার দাম কমছে। দাম না পেয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া নদী বা খালে ফেলে দিয়েছেন কিংবা মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন– এমন ঘটনাও ঘটছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। চলতি বছর ৮৫ থেকে ৯০ লাখ পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ট্যানারি মালিকদের। এর ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ সংগ্রহ হয় কোরবানির সময়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান বলেন, এবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। কিছু ক্ষেত্রে বর্গফুটের হিসাবে চামড়ার দাম আরও কম পড়েছে। কোরবানিদাতাদের থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকায় গরুর চামড়া কিনেছেন। সেসব চামড়া আড়তদার ও ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেছেন ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে চামড়া সংগ্রহ করলেও ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। সিন্ডিকেটের কারণে চামড়ার দাম পড়ে গেছে তলানিতে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও বেশির ভাগ ছাগলের চামড়া নষ্ট হয়েছে। বিদেশি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের ফ্যাসিস্ট সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। দেশে ও বিশ্ববাজারে চামড়াজাত পণ্যের দাম আকাশচুম্বী। অথচ কোরবানির চামড়া শিল্প নিয়ে গভীর চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র চলছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, বিদেশি চক্রান্তে দেশের সোনালি আঁশখ্যাত পাট শিল্পকে সুকৌশলে ধ্বংস করা হয়েছে। এবার আরেক সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্পকে শেষ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। গত বছরের মতো এবারও কম দামে সব ধরনের চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে। এতে করে গরিব-অসহায় মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।