শরীর তখনো জমে উঠেনি। আড়মোড়া তখনো ভাঙেনি। জড়তা কাটেনি। উইকেটে বল কেমন আচরণ করছে তা কোনোভাবেই বুঝে উঠার কথাও নয়। রৌদ্রজ্জ্বল দিনের শুরুতে বল ও চোখের যে সমন্বয় তাও ঠিকঠাক হয়নি। অথচ মাঠে নামার এক মিনিটে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক শান্ত হয়ে উঠলেন অশান্ত! এমন এক শট খেললেন যা খেলে আউট হওয়াও কঠিন। তালগোল পাকানো এক শটে নিজের উইকেট উপহার দিয়ে এলেন জিম্বাবুয়েকে। যে সাফল্যে জিম্বাবুয়ের মুখে যেন থামছিলই না। তাদের শরীরী ভাষায় স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল, ‘‘এভাবেও কিভাবে আউট হয়?’’
স্রেফ অপেশাদারিত্ব। মনোযোগের বিশাল ঘাটতি। অথচ আগের রাতে মুমিনুল হক জানিয়ে গিয়েছিলেন টিকে থাকতে হলে, ‘‘ক্যালকুলেটিভ ক্রিকেট খেলতে হবে।’’ কিন্তু ৬০ রানে দিন শুরু করা শান্তর পরিকল্পনা ছিল ভিন্ন। তাইতো বাংলাদেশের জন্য হুমকি পেসার মুজারাবানির শর্ট বল পুল করতে গেলেন। ঠিক পুল শটটা খেললেনও না। বল ততক্ষণে ব্যাটের উপরিভাগে লেগে চলে যায় ফাইন লেগে। অনেকটা পথ দৌড়ে নাওউচি সহজ ক্যাচ নিয়ে শান্তকে দেখালেন ড্রেসিংরুমের পথ। জিততে বাংলাদেশে আসা জিম্বাবুয়ে দিনের দ্বিতীয় বলে এমন সাফল্য পাবেন, থিতু হওয়া ব্যাটসম্যানকে ফেরাবেন তা কল্পনাও করতে পারেননি। বাংলাদেশকে এই ম্যাচে টিকে থাকতে হলে শান্তর ব্যাটে তাকিয়ে থাকতে হতো। গতকাল দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে মুমিনুলকে নিয়ে পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি গড়েছিলেন। যেখানে নিজের প্রথম ২২ বলে ৫ চার হাঁকিয়েছিলেন। বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন, দিনটা ছিল তার। কিন্তু রাত পার হতেই সব ওলটপালট।
সকাল পৌনে ১০টায় শুরু হওয়ার কথা ছিল খেলা। বৃষ্টি ও ভেজা আউটফিল্ডের কারণে ৭৫ মিনিট পিছিয়ে ১১টায় শুরু হয় খেলা। ১১টা ২ মিনিটে শান্তর নামের পাশে বসে যায় আউট। এমন উদ্ভট শট, দায়সারা ব্যাটিং, দলকে বিপদে ফেলার রেকর্ড শান্তর আগেও ছিল। এই মাঠেও আছে। ২০২৩ সালে সিলেটে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে এর চেয়েও খারাপ শটে আউট হয়েছিলেন শান্ত। কিউই পার্ট টাইম স্পিনার গ্লেন ফিলিপসের বল এগিয়ে এসে ওড়াতে গিয়ে মিড অফে ক্যাচ দেন। অফস্পিনারের বল হাত থেকে ছুটে ফুলটস হয়ে যায়। শান্ত এগিয়ে আসায় তার কোমড় বরাবর বল আসে। শরীরের জোরে বল ওড়াতে চেয়ে শান্ত টাইমিং মেলাতে পারেননি। বল উঠে যায় মিড অফে। সেখানে উইলিয়ামসনের নিখুঁত হাত খুঁজে পায় বল। বোলার এমন সাফল্যে নিজে অবাক। ২২ গজে হতবাক হয়ে যান শান্ত। যে আউট নিয়ে প্রবল সমালোচনাও হয়েছিল। দুই বছর পর একই কাণ্ড ঘটালেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশের বিপক্ষে কঠিন দিন, তবে এখনো ম্যাচে আছি: মুজারাবানি
জয়কে নিয়ে নিজেকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন মুমিনুল
শান্তর সহজেই লড়াই ছেড়ে দেওয়া, মিরাজের দ্রুত ফিরে আসার সঙ্গে জাকের আলীর ব্যাটিং পরিকল্পনাও ছিল বাজে। তাতে বাংলাদেশ ২৫৫ রানে গুটিয়ে যায়। জিম্বাবুয়েকে লক্ষ্য দেয় ১৭৪। মিরাজ ১টি করে চার ও ছক্কায় ১১ রান করে আউট হন। জাকের অষ্টম উইকেটে হাসান মাহমুদকে নিয়ে ৯১ বল ক্রিজে কাটিয়ে দেন। কিন্তু হাসান মাহমুদ জুটি গড়ার সময় সর্বোচ্চ ৫৮ বল খেলেন। টেল এন্ডার ব্যাটসম্যানকে সঙ্গী করলেও স্ট্রাইক রোটেট করছিলেন। তাতে বাড়ছিল ঝুঁকি। শেষমেশ তা-ই হয়েছে। ওয়েলিংটন মাসাকাদজার বল উড়াতে গিয়ে হাসান আউট হন। পরে খালেদ স্লিপে ক্যাচ দেন একই বোলারকে। বাংলাদেশ শিবিরে শেষ আঘাতটি করেন মুজারাবানি। ৭২ রানে ৬ উইকেট নিয়ে উইকেটের ফিফটি স্পর্শ করেছেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে ক্যারিয়ার সেরা ৯ উইকেট নিয়ে ঝলক দেখিয়েছেন এই পেসার। তার আক্রমণে উঠেছে প্রশ্ন, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা আর কবে দায়িত্বশীল হবেন?
সিলেট/ইয়াসিন/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দরে চুরির মামলার ২ আসামিসহ গ্রেপ্তার ৩
বন্দরে বসতঘরে চুরির ঘটনার মামলার ২ চোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতরা হলো বন্দর উপজেলার ফরাজীকান্দা ছোট মসজিদ এলাকার কাজীমুদ্দিনের ছেলে সাব্বির(২২) ও একই এলাকার ইয়াজল হোসেন মিয়ার ছেলে অলিদ(৪০)। এ ব্যাপারে গৃহিনী শান্তা বেগম বাদী হয়ে ধৃতদের বিরুদ্ধে বন্দর থানায় চুরির মামলা দায়ের করেন। যার নং ১(১১)২৫।
এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ জেলার সদর থানার জয়নগর এলাকার সিরাজুল মিয়ার ছেলে রেজাউল করিম (৩২) নামে এক যুবককে সন্দেহ জনক ভাবে আটক করে পুলিশ। ধৃতদের সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে উল্লেখিত মামলায় আদালত প্রেরণ করেছে পুলিশ।
গত রোববার (২ নভেম্বর) রাতে বন্দর উপজেলার ফরাজিকান্দা এলাকায় অভিযান চালিয়ে এদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে গত ৪ অক্টোবর বন্দর উপজেলা ফরাজীকান্দা এলাকায় এ চুরির ঘটনাটি ঘটে।
মামলার তথ্য সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাদিনী বন্দর উপজেলার ফরাজিকান্দা গ্ ছোট মসজিদস্থ তার পিতার বাড়িতে বসবাস করে আসছে। বিবাদী একই এলাকার সম্পর্কে বাদিনী চাচাত ও ফুফাত ভাই ।
গত ৩ অক্টোবর বাদিনী নানা মৃত্যুবরন করলে বাদিনীসহ তার পরিবারের লোকজন মুন্সিগঞ্জস্থ নানা বাড়িতে যায়। পরের দিন গত ৪ অক্টোবর বাদিনী তার পিতার বাড়িতে এসে রুমে প্রবেশ করলে সবকিছু এলোমেলো দেখতে পায়।
সন্দেহ হলে ঘরের ভিতর তল্লাশী করিলে দেখতে পাড আমাদের দুটি এড্রয়েট মোবাইল সেট,মাটির ব্যাংকে রক্ষিত ১০ হাজার টাকা,দামী ব্রান্ডের ব্লুটোথসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস চুরি করে নিয়ে যায় ।
ঘরের বিভিন্ন স্থানে খোজ করিয়াও বর্নিত মালামালের কোন সন্ধান পাওয়া যায় নাই। বিবাদীরা ইতিপূর্বেও আমার বাড়িতে চুরি করেছিল এবং আমাদের প্রতিবেশিরা আমাদের অনুপস্থিতিতে বাড়ির চারপাশে ঘুরাঘুরি করতে দেখেছে বলে জানায়।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ঘটনার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামীকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ জেলার সদর থানার জয়নগর এলাকার সিরাজুল মিয়ার ছেলে রেজাউল করিম (৩২) নামে এক যুবককে সন্দেহ জনক ভাবে আটক করে। পরে আটককৃতকে পুলিশ আইনের ৩৪ ধারায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।