আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি তুললে সরকার পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গির ‘দোহাই’ দেয় বলে উল্লেখ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। আজ শুক্রবার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক সমাবেশে এ কথা বলেছেন তিনি। ‘জুলাই, পিলখানা ও শাপলা গণহত্যার বিচার এবং গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে’ এই সমাবেশের আয়োজন করে ইনকিলাব মঞ্চ।

আজ শাহবাগে এই উন্মুক্ত প্রান্তরে তাঁরা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের যে দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছেন, সেটা ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে পূরণ হওয়ার কথা ছিল বলে বক্তব্যে উল্লেখ করেন সারজিস আলম। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যখনই তাদের কাছে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের কথা বলি, তারা আমাদের পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গির দোহাই দেয়।’ এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘যখন শাপলা চত্বর, পিলখানা এবং জুলাইয়ে হাজারো মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, তখন পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কোথায় ছিল?’

তবে সারজিস আলম তাঁর বক্তব্যে আওয়ামী লীগ নিয়ে এই অবস্থান ব্যক্তকারী হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি বা উপদেষ্টা কিংবা পশ্চিমা কোনো দেশের নাম উল্লেখ করেননি।

এ সময় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে সারজিস বলেছেন, ‘এই জেনারেশনকে (প্রজন্ম) ভয় করুন। যদি এই জেনারেশনের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আবেগ নিয়ে খেলা করেন, তাহলে এই জেনারেশন সকল ক্ষমতার বিপক্ষে গিয়ে যে কাউকে টেনেহিঁচড়ে ক্ষমতা থেকে নামাতে পারে।’

এই সমাবেশে ক্ষোভ প্রকাশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সহসমন্বয়ক মোসাদ্দেক ইবনে আলী বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর একটি রাজনৈতিক দল গঠিত হয়েছে, তারা বিদেশি দূতাবাসগুলোর কাছে নিজেদের শির দাঁড়া বিক্রি করে দিয়েছে। দল গঠনের পর তারা দুটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয়, কিন্তু কোথাও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কথা ছিল না। এই সরকারের ঘুড়িটা অন্তর্বর্তীকালের মধ্যে ঘুরলেও তার নাটাইটা বিদেশি কোনো দূতাবাসের হাতে রয়েছে।

সরকার কোন কোন বিচার করছে এবং সেটা কতখানি হয়েছে, তা স্পষ্ট করে বলার দাবি জানান এবি পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। তিনি বলেন, পৃথিবীতে অনেক ফ্যাসিবাদী দলকে চিরস্থায়ীভাবে নিষিদ্ধের নজির আছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সেই নিয়মেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।

‘জুলাই, পিলখানা ও শাপলা গণহত্যার বিচার এবং গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে’ সমাবেশে উপস্থিত দর্শকদের একাংশ। আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণহত য আওয় ম সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের ‘কঠোরতম ভাষায়’ নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব
  • যারা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ চায়, তারা আদালতে অভিযোগ দিতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
  • ‘গাজায় গণহত্যা চলছে, আমি সেই গণহত্যার নিন্দা করছি’