পটিয়ায় ৫০০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা সরকারের
Published: 26th, April 2025 GMT
পটিয়ায় ৫০০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল নির্মাণের সম্ভাব্য জায়গা পরিদর্শন করলেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম। গতকাল শনিবার সকালে পটিয়া উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নের খলিল মীর ডিগ্রি কলেজের সামনে হরিণখাইন আইডিয়াল স্কুলসংলগ্ন এলাকায় হাসপাতাল নির্মাণের সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শন করেন তিনি। এদিকে, দুপুরে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের মাঝে স্বাস্থ্যকার্ড বিতরণ করেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা।
সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শনকালে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার দেশের মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামে ৫০০ শয্যার একটি জেনারেল হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল নির্মাণে দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়ায় দুটি স্থান, কর্ণফুলী উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসংলগ্ন এলাকায় একটি এবং হাটহাজারী উপজেলার ফটিকা ও মিঠাইছড়া মৌজায় নতুন হাসপাতাল নির্মাণে সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শন করা হয়েছে।’ উপদেষ্টা স্থান নির্বাচনের বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে জানান, বৃহত্তর জনগণের কল্যাণে যেখানে হাসপাতাল নির্মাণের প্রয়োজন হবে সেখানে সরকার এ হাসপাতাল নির্মাণ করবে। এ সময় কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান উপদেষ্টাকে বলেন, ‘এখানে হাসপাতাল নির্মাণে যে পাঁচ একর জায়গা প্রয়োজন তার সবই আমি ব্যক্তিগতভাবে ব্যবস্থা করে দেব। প্রয়োজনে আরও যেসব সহযোগিতা দরকার সবই করা হবে। এখানে হাসপাতাল নির্মাণ করা হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের ১৫ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার দ্বার উন্মুক্ত হবে।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মীর গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক আহমেদুল হক, মেসার্স আলম স্টিল করপোরেশনের পরিচালক সামশুল আলম সওদাগর, চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ব স থ য উপদ ষ ট সরক র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সাদপন্থীদের ইজতেমা আয়োজন করতে না দেওয়ার দাবি
টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারীদের (সাদপন্থী) ইজতেমা আয়োজন করতে না দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজাম (জুবায়েরপন্থী) অনুসারীরা। পাশাপাশি তাঁরা সরকারের প্রস্তাবে রাজি হয়ে আগামী বছরের মার্চ মাসে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা করার কথাও বলেছেন। গত আয়োজনে ইজতেমা মাঠে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও সাজা নিশ্চিতের দাবিও জানান তাঁরা।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। ‘হযরত ওলামায়ে কেরাম ও দাওয়াত ও তাবলিগের সাথীবৃন্দের’ উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
এর আগে গত রোববার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনের পর বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তাবলিগের শুরায়ে নেজামের সাথী মুফতি আমানুল হক বলেন, ‘কোরআন ও হাদিসের কথা যারা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে, তাদের ইসলামি দাওয়াতের এই ময়দানে জায়গা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। রাসুল (সা.)-এর তরিকা, সুন্নাহ ও হাদিসের অনুসরণে যারা তাবলিগি কার্যক্রম পরিচালনা করে, কেবল তারাই ইজতেমা করার অধিকার রাখে।’
মুফতি আমানুল হক আরও বলেন, ‘সরকারের ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে জারি করা প্রজ্ঞাপনে সাদপন্থীরা শেষবারের মতো টঙ্গী ময়দানে ইজতেমা করার অনুমতি পেয়েছিল। সেই প্রজ্ঞাপনে তাদের স্বাক্ষরও রয়েছে। সরকার তখনই বুঝেছিল—একই মাঠে দুই পক্ষের ইজতেমা আয়োজন দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।’
২০২৪ সালের ডিসেম্বরের ইজতেমা মাঠে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে মুফতি আমানুল হক বলেন, ‘গত বছরের ১৮ ডিসেম্বরের রাতে সাদপন্থীদের অনুসারীরা অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের বাংলাদেশি নেতা ওয়াসিফ সাহেবের চিঠিতে উল্লেখ ছিল, “যুগটা ব্যতিক্রমী, সবাই প্রস্তুতি নিয়ে আসবে”—এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই তারা হামলার পরিকল্পনা করেছিল। ঘুমন্ত মুসল্লিদের ওপর টর্চলাইট নিয়ে হামলা চালানো হয়, যা একতরফা সন্ত্রাসী কার্যক্রম ছিল।’ তিনি দাবি করেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকেও প্রমাণিত হয়েছে, ‘এ হামলা একতরফাভাবে সাদপন্থীদের পক্ষ থেকেই হয়েছিল।’
মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী তাঁর লিখিত বক্তব্যে বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী ও ইসলামবিরোধী মহলের প্ররোচনায় তাবলিগ জামাতে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের মাওলানা সাদ সাহেবের অনুসারীরা বেআইনি পথে টঙ্গী ইজতেমা মাঠ ও কাকরাইল মসজিদে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এমনকি তাঁরা সরকারকে বিব্রত করতে ‘যমুনা ভবন ঘেরাও’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর বিশৃঙ্খলাকারীদের কাকরাইল মসজিদে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় এবং শুরায়ে নেজামপন্থীদের কাকরাইলে দাওয়াত কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেয় বলে জানান মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী। তিনি বলেন, ২০২৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারির ৬৩ নম্বর স্মারকে বলা হয়, সাদপন্থীরা শেষবারের মতো ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে টঙ্গীতে ইজতেমা করতে পারবে, এরপর আর নয়। তারা স্বাক্ষর দিয়ে সেই শর্ত মেনে নিয়েছিল।
শুরায়ে নেজামপন্থীরা বলেন, ‘আমরা সরকারের সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করছি। আগামী বছরের মার্চে ইজতেমা আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করা হবে।’
সংবাদ সম্মেলন থেকে সরকারের কাছে ৪ দফা দাবি পেশ করেন তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজাম (জুবায়েরপন্থী) অনুসারীরা। তাঁদের দাবিগুলো হলো ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ইজতেমার তারিখ ঘোষণা, টঙ্গী ইজতেমা মাঠকে অস্থায়ীভাবে ‘কেপিআই’ হিসেবে ঘোষণা, বিদেশি মেহমানদের ভিসা সহজীকরণের পরিপত্র নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রকাশ ও গত বছরের ইজতেমা মাঠে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ, মতিন উদ্দিন আনোয়ার, রুহুল আমিন এবং তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের (শুরায়ে নেজাম) মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান।